বেঁচে থাকতে চাওয়াই শেষ ইচ্ছা, কিন্তু নিরুত্তর মুকেশ, বিনয়, অক্ষয়, পবনরা

আগামী ১ ফেব্রুয়ারি, দেশের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন, সংসদে দ্বিতীয় বারের জন্য কেন্দ্রীয় বাজেট বক্তৃতা শুরু করার কিছুক্ষণ আগেই এদেশে সম্ভবত প্রথমবার একসঙ্গে ৪জনকে ফাঁসিতে ঝোলানোর পর্ব শেষ হয়ে যাবে৷ নির্ভয়া-কাণ্ডে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত ৪ জন, মুকেশ সিং, বিনয় কুমার, অক্ষয় সিং এবং পবন গুপ্তা-কে ফাঁসি দেওয়ার নির্ঘন্ট সেই রকমই৷
ফাঁসির সাজা কার্যকর করতে তাই তিহার জেলে এখন চলছে চূড়ান্ত প্রস্তুতি৷ অপরাধীদের ফাঁসি দেওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই জহ্লাদ পবনকে তলব করেছে তিহার জেল কর্তৃপক্ষ৷
এই ৪ সাজাপ্রাপ্তকে ফাঁসি দেওয়ার আগে প্রথা অনুযায়ী এবং বিধি মেনে তাদের শেষ ইচ্ছাও জানতে চাওয়া হয়েছে জেল কর্তৃপক্ষের তরফে৷

বেঁচে থাকতে চাওয়াই যে তাদের শেষ ইচ্ছা, এ বিষয়ে কোনও সন্দেহই নেই৷ কিন্তু মুখ ফুটে এ কথা কেউই বলতে পারেনি৷ নিরুত্তরই থাকে তারা৷ জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত শেষবারের মতো নিজেদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করা বা অন্য কোনও শেষ ইচ্ছার কথা প্রকাশই করেনি একজনও। নির্ভয়া কাণ্ডে মুকেশ সিং, বিনয় কুমার, অক্ষয় সিং এবং পবন গুপ্তাকে ফাঁসির সাজা শোনায় আদালত। তিহার জেলে এখন তাঁদের ফাঁসির প্রস্তুতি চলছে। কিন্তু কারাগার সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত নিজেদের শেষ ইচ্ছা সম্বন্ধে কোনও কথাই প্রকাশ করেনি ওই ৪ ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত। নিয়ম অনুযায়ী মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রাপ্তদের কাছে তাদের সাজা কার্যকর হওয়ার আগে জানতে চাওয়া হয় যে সে নিজের পরিবারের কারো সঙ্গে শেষবারের মতো দেখা করতে চায়, না’কি নিজের সম্পত্তি পরিবারের কাউকে দিয়ে যেতে চায় কিনা, না, অন্যকিছু তাদের শেন ইচ্ছা৷ দিন দুয়েক আগে এ সম্পর্কে জানাতে চাওয়া হয় সাজাপ্রাপ্তদের কাছে। নিয়ম অনুযায়ী ৪ সাজাপ্রাপ্তকে প্রশ্ন করা হলেও এখনও পর্যন্ত কোনও উত্তর মেলেনি। অনেকেই মনে করছে, এরকম করে আসলে ফাঁসির সাজা আরও পিছিয়ে দেওয়া যায় কিনা সেই ফিকির খুঁজছে ওই ৪ জন। এদিকে অধীর আগ্রহে ওই ৪ অপরাধীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার আশায় প্রহর গুণছেন নির্ভয়ার পরিবার।

২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর রাতে ২৩ বছরের এক প্যারা-মেডিক্যাল ছাত্রী তাঁর বন্ধুর সঙ্গে সিনেমা দেখতে গিয়েছিলেন দক্ষিণ দিল্লিতে। ফেরার পথে তাঁরা বাসের জন্য দাঁড়িয়েছিলেন। এই সময় একটি ফাঁকা বেসরকারি বাসে তাঁদের তুলে নেওয়া হয়। বাসে ছিল ৬-জন ব্যক্তি। এরপর তারা ওই তরুণীকে ধর্ষণ ও লোহার রড দিয়ে নির্যাতন করে কয়েক ঘণ্টা ধরে। তারপর রাস্তায় ছুঁড়ে ফেলে দেয়। তাঁর সঙ্গীও আহত হন।
২৯ ডিসেম্বর মৃত্যু হয় ওই তরুণীর। গোটা দেশ রাগে, ক্ষোভে গর্জে উঠেছিল এমন অমানুষিক বর্বরতার বিরুদ্ধে। পুলিশ ওই ৬ জনকেই গ্রেফতার করে মামলা শুরু করে৷ সেই ৬ জনের একজনের জেলেই মৃত্যু হয়েছে৷ আর একজন ঘটনার দিন ‘নাবালক’ থাকায় মামলা থেকে রেহাই পেয়েছে৷ গত শুক্রবার নির্ভয়া গণধর্ষণ মামলার ৪ সাজাপ্রাপ্তের জন্য নতুন করে মৃত্যুদণ্ড পরোয়ানা জারি করা হয়।

আরও পড়ুন-এবার ছাত্র, যুব সম্মেলন ডাকলেন মমতা

Previous articleনেতাজির জন্মদিনে ছুটি ফেরালেন হেমন্ত সরেন
Next articleরাজ্যসভায় শোভন বা বৈশাখী? তৃণমূল, বিজেপিতে টানাটানি