‘বেহুলা’: নাম মাহাত্ম্যে অন্যরকম শিল্প উৎসব বেহালায়

বেহালা নামটার সঙ্গেই জড়িয়ে আছে ‘মনসামঙ্গল’ কাব্যের বেহুলা লক্ষ্মীন্দরের কাহিনী। কথিত আছে, বেহালার রায় বাহাদুর রোডের ওই খাড়িপথ ধরে স্বামীর দেহ নিয়ে যাত্রা করেছিলেন বেহুলা। তাই থেকেই জায়গাটির নাম নাকি বেহালা। এই কাহিনী মাথায় রেখে সেখানে এক অন্যরকম আর্ট ফেস্টের আয়োজন করেছে ‘বেহালা নূতন সংঘ’, নাম রাখা হয়েছে ‘বেহুলা’। ‘আর্ট ফেস্ট ২০২০’-র কিউরেটর শমীন্দ্রনাথ মজুমদারের কথায়, বেহালার নামের সঙ্গে যেহেতু বেহুলার কাহিনী জড়িয়ে আছে, সেই কারণে এই আর্ট ফেস্টের নাম দেওয়া হয়েছে ‘বেহুলা’। ৭,৮ ও ৯ ফেব্রুয়ারি চলবে এই ‘আর্ট ফেস্ট ২০২০’। সনাতন দিন্দা, ভবতোষ সুতার-সহ একাধিক শিল্পীর হাতযশে সেজে উঠছে বেহালা ১৪ নম্বর। এলাকা সাজানো হয়েছে গ্রাফিতি, ইনস্টলেশনে। পথ জুড়ে রয়েছে আলপনা। আর্ট কলেজের ছাত্রছাত্রীরা তাঁদের ছবি বিক্রির জন্য সেখানে আমন্ত্রিত হয়েছেন। বিক্রির পুরো টাকাটাই তাঁদের। সঙ্গে রয়েছে আলোচনা সভা ও অনেক কিছুই।

মনসামঙ্গল শুধুমাত্র একটা পৌরাণিক চরিত্র নয়, মঙ্গলকাব্যের অন্যান্য কাহিনীর মতোই এটাও সাধারণ মানুষের সংগ্রামের কাহিনী। এখানে দুই একাকী নারীর সংগ্রাম উঠে এসেছে। একজন বেহুলা, অন্যজন মনসা। বেহুলা স্বামীর সঙ্গে সংসার করার আগেই তাঁর প্রাণ বাঁচাতে এক অসম লড়াইয়ে নামেন। তাঁর পাশে কেউ নেই। তিনি একা। স্বর্গের দেবতাদের থেকে রীতিমতো নিজের পারদর্শিতায় জয় ছিনিয়ে আনেন। আর একজন মনসা। নারী হিসেবে নিজের মর্যাদা, সম্মান অর্জন করতে যুদ্ধ করেন। সেই যুদ্ধে তিনি জয়ী হন। মনসা অন্ত্যজ শ্রেণীর এক প্রতিভূ। সমাজের উচ্চশ্রেণির সঙ্গে লড়াই করে নিজের সম্মান ফিরিয়ে আনার এক যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন তিনি। পৌরাণিক কাহিনী নয়, সেই সংগ্রামের সঙ্গে জড়িত স্থান মাহাত্ম্যকে মনে রেখেই আর্ট ফেস্টের নাম ‘বেহুলা’ রাখা হয়। কিউরেটর শমীন্দ্রনাথ মজুমদারের কথায় কলকাতার বুকে একটি ক্লাবের উদ্যোগে এই ধরনের আর্ট ফেস্ট সত্যিই অভিনব।

আরও পড়ুন-বিধানসভায় রাজ্যপালের অ্যান্টিক্লাইম্যাক্স! কৃতিত্ব পার্থর?

Previous articleতাল কেটেছে সম্ভবত একটি ফোনে, কণাদ দাশগুপ্তের কলম
Next articleরাহুলের লাঠিপেটা-মন্তব্যের জেরে লোকসভায় কং- বিজেপি তুলকালাম