ইনস্ট্রাকশন দিচ্ছিলেন প্রশিক্ষক। সেই সময় হাসছিল প্রশিক্ষণরত সাঁতারু। তাতেই জুটল মার। যার জেরে কানে-চোখে তীব্র আঘাত লাগে ১৪ বছরের কিশোর অপরাজয় চণ্ডী বসুর। ক্ষতি হয় দৃষ্টিশক্তিরও। হেদুয়ার ন্যাশনাল সুইমিং অ্যাসোসিয়েশনের এই ঘটনায় বটতলা থানায় প্রশিক্ষকের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।
সাউথ পয়েন্ট স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র অপরাজয় দশ বছর ধরে সাঁতার শিখছে হেদুয়ার এই ক্লাবে। জাতীয়ে স্তর একাধিকবার ইন্টারস্কুল মিটে থেকে পুরস্কারও নিয়ে এসেছে সে। তাঁর বাবা সন্দীপ বসু অভিযোগ, শনিবার প্রশিক্ষক প্রবীর বসাকের কাছে মার খায় অপরাজেয়। বমি করতে শুরু করে অপরাজয়। তার কানে এবং মাথায় যন্ত্রণা শুরু হয়। কানের দু’পাশেই ক্ষত চিহ্ন দেখা যায়। তরল পদার্থও বেরিয়ে আসছিল কান থেকে। বমি করছিল সে। মেডিক্যাল কলেজের ইমার্জেন্সি বিভাগে নিয়ে গেলে ইএনটি বিভাগে পাঠানো হয় অপরাজয়কে। তার সিটি স্ক্যান ও এক্সরে করেন চিকিৎসকরা। যদিও কোনও ইন্টারন্যাল হেমারেজ মেলেনি। তাকে রেফার করা হয় রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অফ অপথ্যালমোলজিতে। সেখানেই পরীক্ষায় ধরা পড়ে চোখের দৃষ্টিশক্তির ক্ষতি হয়েছে অপরাজয়ের। সোমবার চক্ষু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অসীম ঘোষ অপরাজয়কে পরীক্ষা করেন। তিনি জানান, জোরালো আঘাতের কারণেই এই ক্ষতি হয়েছে। এরপর সোমবার রাতে থানায় গিয়ে ডায়েরি করা হয়।
ঘটনার ২ দিন পর সুইমিং অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয় অপরাজয়র পরিবারের সঙ্গে। ক্লাবের কর্তারা এই ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন। অপরাজয়র চিকিৎসার খরচ বহন করারও প্রস্তাব দিয়েছেন বলে জানান সন্দীপ বসু। কিন্তু এতে বিরক্ত ওই কিশোরের পরিবার। সন্দীপ বসু বলেন, ‘‘ক্লাবের কর্তাদের কোনও সৌজন্যবোধ নেই। ছেলেটা কেমন আছে সে সম্পর্কে খোঁজটুকু নেয়নি। ছেলের চিকিৎসার খরচ আমি চালাতে পারব। প্রশ্ন একটাই, এই ঘটনার পরে প্রশিক্ষকের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হল?’’
যদিও এই প্রথম নয়। এর আগেও প্রশিক্ষক মারধর করেছেন বাচ্চাদের বলে অভিযোগ আহত ছাত্রের বাবার। কিন্তু যে কোনও কারণেই হোক, ক্লাব কর্তৃপক্ষ কখনওই তাঁর বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করে না।