বিশ্বের একমাত্র ‘মহিলা ভাষা-শহিদ’! কে তিনি?

২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃ ভাষা দিবস। তা সবারই জানা। এই ভাষার জন্য শহিদ হয়েছিলেন অনেকে। সে সম্পর্কেও সম্যখ ধারণা আছে। কিন্তু এই শহিদদের মধ্যে একজনের নাম উচ্চারিতও হয় না। তিনি বিশ্বের একমাত্র মহিলা ভাষা শহিদ কমলা ভট্টাচার্য। কিন্তু ক’জন জানেন তাঁর নাম?

১৯ মে, ১৯৬১ সাল। এই দিনেই অসমের শিলচরের ১১ জন বাঙালি, মায়ের ভাষা রক্ষার জন্য এবং মায়ের ভাষায় কথা বলার জন্মগত অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য প্রাণ উৎসর্গ করেছিলেন। তাঁদেরই অন্যতম কমলা। কমলা ভট্টাচার্যর জন্ম ১৯৪৫ সালে, অসমের শ্রীহট্টে। তাঁর পরিবার ১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময় এক গণভোটের মাধ্যমে অসমের শ্রীহট্ট জেলা পাকিস্তানের অন্তর্ভূক্ত হয়। কমলারা পাকিস্তানেই থেকে যান। কিন্তু ১৯৫০ সালে পূর্ব পাকিস্তানে গণহত্যা শুরু হলে তার রেশ শ্রীহট্টেও এসে পড়ে। কমলার পরিবার শরণার্থী হিসেবে অসমে চলে যেতে বাধ্য হন। আশ্রয় নেন শিলচরে। সেই সময় থেকেই লড়াই জীবন শুরু কমলার।

পরিবারে আর্থিক অনটন ছিল। কিন্তু তা উপেক্ষা করে স্নাতকস্তর পর্যন্ত পড়বেন বলে ঠিক করেন কমলা। ১৯৬১ সালে ম্যাট্রিক পরীক্ষায় বসেন তিনি। ম্যাট্রিক পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরের দিন শিলচর রেল স্টেশনে বাংলা ভাষায় প্রাথমিক শিক্ষার দাবিতে একটি জমায়েতের ডাক দেওয়া হয়। ১৯ মে-র সকালে কমলা জমায়েতে যান তিনি। সঙ্গে ছিলেন তাঁর ভাই, বোন এবং দিদির ছেলে। কিন্তু সেই জমায়েত থেকে বাকিরা ফিরলেও, আর জীবিত অবস্থায় বাড়ি ফেরা হয়নি কমলার। রেল স্টেশনে জমায়েত চলাকালীন অসম রাইফেলসের জওয়ানরা জায়গাটি ঘিরে ফেলতে শুরু করে। বিনা প্ররোচনায় তাঁরা অবস্থানকারী ছাত্রছাত্রীদের নির্মমভাবে লাঠি ও বন্দুকের কুঁদো দিয়ে পেটাতে থাকে। এলোপাথাড়ি লাঠিচার্জে অবস্থানকারী জনতা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এরপর গুলি চালায় অসম রাইফেলসের জওয়ানরা। ওই গুলির আঘাতে প্রাণ যায় কমলার। অন্যান্য আহতদের সঙ্গে তাঁকে হাসপাতলে নিয়ে গেলে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।

আরও পড়ুন-স্বামীর বিরুদ্ধে অত্যাচারের অভিযোগ জাতীয় মহিলা হকি দলের প্রাক্তন অধিনায়ক লতা দেবীর

Previous articleটি-টোয়েন্টি ওয়ার্ল্ড কাপ অভিযানে অজিদের বিরুদ্ধে জয়ের দোরগোড়ায় ভারতের মেয়েরা
Next articleপাকিস্তানপন্থী স্লোগান, রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা যুবতীর বিরুদ্ধে