কলকাতার জটিলতা কাটাতে আজ ও কাল জরুরি বৈঠকে তৃণমূল

লক্ষ্য পুরভোট৷ উত্তর ও দক্ষিণ কলকাতার কাউন্সিলর ও নেতাদের নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসছে তৃণমূল৷ কলকাতা পুর এলাকাকে দু’ভাগে ভাগ করে পর পর দু’দিন এই বৈঠক হবে৷
উত্তর কলকাতার এই বৈঠকের দায়িত্বে অতীন ঘোষ, দক্ষিণের দায়িত্বে দেবাশিস কুমার৷
আজ মঙ্গলবার, উত্তর কলকাতার ৫৪ জন কাউন্সিলর, উত্তরের সব বিধায়ক, ওয়ার্ডের যুব এবং মূল সংগঠনের সভাপতি, শাখা সংগঠনের নেতাদের নিয়ে হরিয়ানা ভবনে বৈঠক হতে চলেছে।
আগামীকাল, বুধবার দক্ষিণ কলকাতার কাউন্সিলর এবং অন্যানদের নিয়ে একই বৈঠক হবে।

তৃণমূল সূত্রের খবর, শুধুমাত্র কলকাতার আসন্ন ভোট নিয়েই এই বৈঠক৷ দু’দিনের এই বৈঠকে অনেক ক’টি বিষয়ই স্পষ্ট করা হবে বলে জানা গিয়েছে৷ আলোচনা শেষে কিছু নির্দেশ ও দলের বক্তব্য জানানো হবে এই সব বিষয়ে:

◾উত্তর ও দক্ষিণের অজস্র নেতা গত দু-তিনমাস ধরেই কাউন্সিলর-টিকিটের জন্য মরিয়া হয়ে নেমেছেন৷ এদের অনেকেই দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে তদ্বিরও শুরু করে দিয়েছেন। এই বৈঠকে জানানো হবে, প্রাথমিকভাবে প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করে নিয়েছেন সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ কারা বাদ পড়ছেন বা কারা থাকছেন, কারা নতুন আসছেন, তা কার্যত স্থির।
এই বিষয়টি স্পষ্ট করা হবে।

◾শাসকদলের দুশ্চিন্তা, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। কলকাতার বেশ কিছু এলাকায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তীব্র আকারে চলছে বেশ কিছুদিন ধরেই৷ প্রায় সর্বত্রই এলাকার বিধায়ক এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে মদত দিচ্ছেন৷ এ ধরনের বিধায়কদের তালিকাও তৈরি করেছেন ভোট-কুশলী প্রশান্ত কিশোর৷ এদের সতর্কও করা হয়েছে৷ গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের সুযোগ নিয়ে দলের একাধিক নেতা বা বিধায়ক নিজেদের স্ত্রী-পুত্র-কন্যাকে বা ঘনিষ্ঠকে প্রার্থী করতে নেমেছেন, আবার বাদ দিতেও চেষ্টা করছেন৷
এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব অথবা চেষ্টা নিয়ে বৈঠকে কঠোর বার্তা দেওয়া হবে ৷

◾কাউন্সিলর এবং নেতা-নেত্রীদের বার্তা দেওয়া হবে, পুরভোট করতে হবে শান্তিপূর্ণ। কোনওরকম হিংসা চলবে না। পুলিসও নিরপেক্ষ থাকবে। সেই মতোই তৈরি থাকতে নির্দেশ দেওয়া হবে এই বৈঠকে৷

◾গত লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলে দেখা গিয়েছে কলকাতার ৫৩টি ওয়ার্ডে পিছিয়ে রয়েছে তৃণমূল৷ সে সব পুনরুদ্ধার করতে ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও দলীয় নেতাদের বাড়তি সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হবে৷

◾ সংরক্ষণের আওতায় পড়ে আসন্ন ভোটে নিজেদের জেতা ওয়ার্ড ছাড়তে হচ্ছে কলকাতার ৪ মেয়র পারিষদ এবং ২ বরো চেয়ারম্যানকে। শাসক এবং বিরোধী মিলিয়ে মোট ৪৫ জন কাউন্সিলরকে নিজেদের জেতা ওয়ার্ড ছাড়তে হবে। এদের অনেককেই হয়তো বিকল্প আসন দেওয়া সম্ভব হবে না৷ সংরক্ষণের আওতায় পড়া কাউন্সিলরদের অন্য ওয়ার্ডে সরানো নিয়ে চরম অস্বস্তিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তৃণমূলের অন্দরে৷ শুধু অস্বস্তিকর-ই নয়, মন কষাকষিও চলছে৷ বৈঠকে এবিষয়ে কিছু ইঙ্গিত মিলবে৷

◾পুরভোটে দলের টিকিট কে পাবেন আর কে পাবেন না, তা নিয়ে বর্তমান কাউন্সিলরদের পাশাপাশি স্থানীয় নেতা, এমনকী একাধিক বিধায়কও চরম উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন৷ বৈঠকে এবিষয়ে কিছু ইঙ্গিত মিলবে৷

◾ আজ এবং কালকের এই বৈঠকে মূলত গেরুয়া শক্তির মোকাবিলা কীভাবে করতে হবে, তা নিয়েই আলোচনা হবে৷

ওদিকে, পুরভোটের প্রস্তুতির জন্য আগামী ২ মার্চ নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে রাজ্যের সব পুরসভার কাউন্সিলর, পদাধিকারীদের বৈঠকে ডেকেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে সব কাউন্সিলর, চেয়ারম্যান সম্পর্কে প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা ‘আইপ্যাক’-এর মূল্যায়ন রিপোর্ট তুলে ধরবেন নেত্রী নিজেই৷ একইসঙ্গে, দলের টিকিট নিয়েও নির্দেশ তথা প্রস্তাব দেবেন সুপ্রিমো৷

আরও পড়ুন-শীঘ্রই হাসপাতাল থেকে ছুটি পেতে চলেছে পোলবা পুলকার দুর্ঘটনায় জখম দিব্যাংশু

Previous articleসন্ত্রাস মোকাবিলার নামে ভারতে অস্ত্র বিক্রি ট্রাম্পের লক্ষ্য
Next articleকলকাতার প্রায় ৪০ তৃণমূল-কাউন্সিলর নানা কারণে এবার বাদ পড়ছেন, জল্পনা তুঙ্গে