Monday, August 25, 2025

ভারতে করোনাভাইরাস এখন ‘স্টেজ-২’-তে৷ ‘গোষ্ঠী-সংক্রমণ’ -এর খবর না আসা পর্যন্ত এই পর্যায়েই থাকবে৷ কিন্তু ‘গোষ্ঠী-সংক্রমণ’-এর হদিশ মিললেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তালিকা অনুসারে ভারতের ঠাঁই হবে ‘স্টেজ-৩’-এ৷ সেই পরিস্থিতি সামাল দিতে হলে দেশজুড়ে ‘LOCK-DOWN’-ই একমাত্র পথ৷

দেশজুড়ে ‘LOCK-DOWN’ হতে পারে অথচ সে সম্পর্কে বিন্দুমাত্রও ধারনা নেই ভারতবাসীর৷ কিন্তু এই শব্দটি বারে বারে ভেসে উঠছে ইদানিং ৷ একটা অজানা ভয়ের আবহও তৈরি হচ্ছে এই
‘LOCK-DOWN’ ঘিরে৷
রাজনৈতিক তথা বিশেষজ্ঞ মহলের ধারনা, প্রধানমন্ত্রীর ডাকা এই ‘জনতা-কার্ফু’ আসলে ওই জাতীয়স্তরের ‘LOCK-DOWN’-এর ট্রায়াল৷ তা না হলে, মারন-করোনা’র মোকাবিলায় মাত্র একদিনের এই ‘জনতা-কার্ফু’ যে কোনও কাজেই লাগবে না, তা বুঝতে বিশেষজ্ঞ হওয়ার প্রয়োজন নেই৷

আগামী ২২মার্চ, রবিবার, দেশজুড়ে ‘জনতা- কার্ফু’-র মোড়কে কার্যত ‘LOCK-DOWN’-এরই ডাক দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী৷ ওইদিন, দেশবাসী সকাল ৭টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত নিজেদের গৃহবন্দি রাখবে৷ এবং বিকেল ৫টা নাগাদ বাড়ির সদর দরজা বা বারান্দায় দাঁড়িয়ে ঘন্টা বাজাবেন বা গান করবেন বা হাততালি দেবেন বা স্লোগান দেবেন৷ ‘জনতা- কার্ফু’ কর্মসূচির দ্বিতীয় ধাপটি আসলে আলঙ্কারিক৷ জনতা- কার্ফু’-কে জাস্টিফাই করতে হাততালি দেওয়ার কার্যক্রম রাখা হয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে৷

কেন এই ‘জনতা কার্ফু’, বৃহস্পতিবারের ভাষণে সেটাও আংশিক বুঝিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ৷
প্রধানমন্ত্রী এদিন তাঁর ভাষণের মধ্যেই বোঝাতে চেয়েছেন, করোনা-র প্রকোপ ‘গোষ্ঠী-সংক্রমন’ স্তরে পৌঁছালে ভারতের মতো ১৩০ কোটি জনসংখ্যার দেশে পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে৷ সেই ভয়ংকর পরিস্থিতি মোকাবিলার পথ একটাই, LOCK-DOWN বা নিরাপত্তার স্বার্থে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা স্তব্ধ করা৷ আর সেই পদক্ষেপ করার আগে দেশবাসীকে একটা ‘প্রোমো’ দেখাতে চান নরেন্দ্র মোদি৷ সে কারনেই ২২ মার্চ দেশে ‘জনতা-কার্ফু’৷

এই ‘জনতা-কার্ফু’-র ব্যাখ্যায় মোদি বলেছেন, ভারতবাসী নিজের সুরক্ষায় নিজেই কার্ফু ঘোষণা করে, নিজেই সেই কার্ফু সফল করবেন৷ ওইদিন স্বেচ্ছায় গৃহবন্দি থাকবেন৷ জরুরি কাজ না থাকলে বাড়ির বাইরে এক পা- ও বেরোবে না গোটা দেশ।
আর এর পরই প্রধানমন্ত্রী হালকা সুরে বলেছেন, “২২ মার্চের জনতা কার্ফুর সাফল্য এবং জনতা কার্ফুর অভিজ্ঞতা ভারতের দিকে ছুঁড়ে দেওয়া করোনা’র “কমিউনিটি-ইনফেকশন”-এর চ্যালেঞ্জ সামাল দিতে কার্যকর ভূমিকা নেবে৷ LOCK-DOWN- এর ঘোষণির সময় প্রধানমন্ত্রী ফের একবার বলতে পারবেন, “আমি আপনাদের কাছে যা চেয়েছি তা পেয়েছি। নিরাশ হতে হয়নি। আমি আপনাদের কাছে ‘জনতা-কার্ফু’ চেয়েছিলাম৷ আপনারা সেই কার্ফু সফল করে আমাকে আশাহত করেননি৷ এবার ওই ‘জনতা-কার্ফু’-র ধাঁচেই দেশজুড়ে LOCK- DOWN লাগু করা হচ্ছে৷ করোনা ঠেকাতে এবারও আপনারা আমাকে আশাহত করবেন না৷”

অনেকেই বলছেন, দেশবাসীকে ‘আণ্ডার এস্টিমেট’ করেছেন প্রধানমন্ত্রী ৷ যে দেশবাসী নিজেরা রক্ষা পেতে দিনের মধ্যে ৩০-৪০ বার হাত ধুচ্ছে, যারা নিজেরাই সেলফ-আইসোলেশনে যাচ্ছে, মাস্ক পড়ছে, স্যানিটাইজার নিয়ে ঘুরছে, সেই দেশবাসী প্রয়োজনে একশোবার মানবে LOCK-DOWN, সেজন্য ‘জনতা-কার্ফু’-র প্রোমোর দরকারই ছিলোনা!

Related articles

গাড়ির মালিকানা বদল ও রেজিস্ট্রেশন নবীকরণে বড় ছাড়, প্রক্রিয়া সহজ করল পরিবহণ দফতর 

রাজ্যের নন-ট্রান্সপোর্ট গাড়ির মালিকানা বদল ও রেজিস্ট্রেশন নবীকরণের জটিলতা এবার অনেকটাই সহজ হল। পরিবহণ দফতরের নতুন সিদ্ধান্তে গাড়ি...

ভোটার ও বিরোধীদের রুখতে E² ব্যবহার করে বিজেপি: তোপ অভিষেকের

এই প্রথম নয়, এর আগেও একাধিকবার কমিশনের ভূমিকা যে সম্পূর্ণ পক্ষপাতদুষ্ট সেই অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূলের (TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ...

কমনওয়েলথ চ্যাম্পিয়নশিপে সোনা জিতলেন মীরাবাই চানু

একছরের বিরতি ভেঙে ফিরেই বিরাট সাফল্য মীরাবাই চানুর(Mirabai Chanu)। কমনওয়েলথ(Commonwealth) চ্যাম্পিয়নশিপে রেকর্ড গড়ে সোনা(Gold Medal) জিতলেন মীরাবাই(Mirabai Chanu)।...

পুজোর অনুদানে স্থগিতাদেশ নয়, হিসেব নিয়ে হলফনামা তলব আদালতের: রাম-বামের দ্বিচারিতাকে নিশানা তৃণমূলের

রাজ্যে দুর্গাপুজোর (Durga Pujo) অনুদানের উপর কোনও স্থগিতাদেশ দিল না হাই কোর্ট। এই বিষয়ে দায়ের হওয়া মামলার শুনানিতে...
Exit mobile version