দমদম জেলে নিহত ও আহতদের নামের তালিকা কোথায় অরুণ গুপ্তা? কুণাল ঘোষের কলম 

কুণাল ঘোষ

শনিবার ঘটনা ঘটেছে। আজ সোমবার।

দমদম জেলে নজিরবিহীন ঘটনায় নিহত ও আহতদের সঠিক সংখ্যা কত? নাম কী? এখনও কেন জানালেন না জেল সাম্রাজ্যের অধিকারী অরুণ গুপ্তা? যিনি অবসরের পরেও বারবার বাড়তি দায়িত্ব পেয়ে জেল পরিষেবার মাথায় বসে ছড়ি ঘোরান, হতাহতের তালিকাটা দিতে পারলেন না?

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন শনিবার গেট থেকে দেহ ( হত বা আহত ) বেরিয়েছে। সন্ধের পর পেছনে রিকার দিক থেকেও বার করা হয়েছে। আর জি করে একাধিক হতাহত। অন্য কোথাও আছে কিনা জানা নেই।

কলকাতার বুকে একটা কান্ড হল। তার হতাহতের তালিকা দেবে না অরুণ গুপ্তার প্রশাসন?

আমি একবারও বলছি না বন্দিরা সকলেই ধোয়া তুলসীপাতা। আবার সবাই দোষী, সেটাও একেবারেই নয়। কিন্তু করোনা আতঙ্কে জেল ফুটছে, জেল প্রশাসন আঙুল চুষছিল? দক্ষ, যোগ্য অরুণ গুপ্তার অফিসাররা আগাম আঁচ পাবেন না? বন্দিদের উপর নিয়ন্ত্রণ থাকবে না?

আসলে এই অরুণ গুপ্তা রহস্যজনক কারণে বলিয়ান হয়ে জেলটা লাটে তুলে দিয়েছেন। কর্মচারী সমিতি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। চূড়ান্ত অব্যবস্থায় বন্দিরা ক্ষুব্ধ। তাই পরপর জেলে অঘটন ঘটছে।

আমি প্রথম দিন যা বলেছিলাম এখন তাই ঘটছে এবং ঘটবে।
জেলের খবর বাইরে আসে না। প্রশাসন যা বলবে, মিডিয়ার একাংশ তাই লিখবে। চেক করা হবে না। এখন দমদমে ষড়যন্ত্র, অপরাধী, মাওবাদী- এমন অনেক তত্ত্ব আসবে। আজ একটা কাগজে এসব দেখে হাসি পেল। আমি তো পরশুই লিখেছি। এখন বড় বড় তদন্তকাহিনি বেরোবে, কোন্ কোন্ বন্দি এসব করেছে। প্রতিবাদের ভয় নেই। আসলে জেলের অব্যবস্থা, ব্যর্থতা আর উপরমহলের অপকীর্তি ধামাচাপা দিয়ে গোলমালের দায়টা বন্দিদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হবে।

বন্দিদের হাতে পিস্তল। বন্দিদের হাতে মোবাইল। এখন ন্যাকা সাজছে প্রশাসন। ওটা বন্দির দোষ না কর্তৃপক্ষের দোষ? বন্দি তো বন্দিই। তার হাতে গেল কী করে ওসব? কারা দিল? কীসের জন্য দিল? কত টাকায় দিল?

এই অরুণ গুপ্তা নামক লোকটিকে মাথায় রেখে জেলের আর কত বিপদ ডেকে আনা হবে?

বাকি বিশ্লেষণ পরে হোক, আগে হতাহতদের নামের তালিকা দিন অরুণ গুপ্তা।
এই দেরিটাও স্বাভাবিক নয়। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট থেকে কাগজ লোপাট, এমনকি একটা আস্ত মানুষের নথি লোপাটেও যে কোনো প্রভাব খাটানো হবে না, তার কোনো গ্যারান্টি কেউ দিতে পারবে না। ওই উঁচু পাঁচিলের আড়ালে প্রশাসন যা খুশি করতে পারে। হিসেববহির্ভূত নিখোঁজ এখন কেউ টেরও পাবে না। সিনেমার বাড়াবাড়িও এখানে শিশু। জেলে যা হয়, সিনেমাও পারবে না। তবে শুভবুদ্ধিসম্পন্ন অফিসারও কিছু আছেন। তাঁরাই ভরসা।

এই যে মিস্টার অরুণ গুপ্তা, আই পি এস, অবিলম্বে দমদমের হতাহতদের তালিকা জনসমক্ষে প্রকাশ করুন।
তদন্তের গল্প অন্য কাউকে শোনাবেন। আপনাদের ব্যর্থতা, আপনাদেরই তদন্ত, এসব নাটক আমাকে গেলাতে যাবেন না। আমি সরব থাকব। এবং সাধ্যমত প্রচার করব।

আনন্দবাজারে দেখলাম আর জি করে বন্দির আত্মীয়রা অসহায়ভাবে ঘুরছেন। একে যাতায়াতের সমস্যা। তার উপর এই উদ্বেগ নিয়ে হয়রানি। কেন এসব হবে? বন্দিকে আইনের বাইরে নির্যাতনের অধিকার প্রশাসনের নেই। আর তার আত্মীয়দের এই পরিস্থিতিতে ফেলা তো চূড়ান্ত অন্যায়।

আমি অরুণ গুপ্তার অপসারণ চাই তো বটেই। সেটা পরে। আগে ওঁর সাসপেনশন বা শাস্তি দাবি করি।
আর তারও আগে হতাহতদের নামের তালিকা দিন জেলসাম্রাজ্যের মুকুটহীন সম্রাট অপার ক্ষমতাশালী মহামহিম অরুণ গুপ্তা।

Previous articleকরোনা বিশ্বযুদ্ধে দেশ বাঁচলে, পরেরবার ডাক্তার পেটানোর আগে সময়টা খেয়াল থাকবে তো!
Next articleজাতির উদ্দেশে মাত্র দুটি বাক্য প্রয়োগ পুতিনের, তাতেই করোনা জব্দ রাশিয়ায়!