গোটা বিশ্বজুড়ে করোনা ভাইরাস বা কোভিড-১৯ কার্যত যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। আর এই বিশ্বযুদ্ধে একদিকে করোনা আর অন্যদিকে গোটা বিশ্ব। করোনার বিরুদ্ধে এই যুদ্ধে কোনও সেনা বা মিলিটারি নয়, জীবন বাজি রেখে চব্বিশ ঘন্টা লড়াই করে যাচ্ছেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। যাঁদের হাতে কোনও পরমাণু বোমা কিংবা আগ্নেয়াস্ত্র নেই। করোনাকে ঘায়েল করতে নেই কোনও প্রতিষেধক। লড়াইয়ের অস্ত্র বলতে শুধু নিজেদের মেধা-কর্তব্য-সামাজিক দায়বদ্ধতা।

আজ করোনা যখন গোটা মানবজাতিকে ধ্বংস করার পণ নিয়ে পৃথিবীজুড়ে দাপাদাপি করছে, তখন বুক চিতিয়ে লড়াই করছেন চিকিৎসকরা। তাঁদের চোখে-মুখে ক্লান্তি আছে, কিন্তু তৃপ্তিও আছে মানবসেবার।

অথচ, এই চিকিৎসকদের উপর আক্রমণ নেমে আসে কখনও কখনও। চলে নির্দ্বিধায় মারধর। ভাঙচুর। আর যা বেশিরভাগ সময় সংঘটিত হয় প্ররোচনার দরুণ। এমনটা নয় যে, ডাক্তারদের কোনও ভুল হয় না। এমনটাও নয় যে, হাসপাতালে ভুল চিকিৎসা হয় না। কিন্তু সঠিক পরিষেবার তুলনায় ভুল চিকিৎসার অনুপাত একেবারেই নগণ্য।

একবার কাল্পনিক ভাবে মনে করুন তো, করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে জিততে এই চিকিৎসক যোদ্ধাদের যদি না পাওয়া যেত কিংবা তাঁরা মুখ ফিরিয়ে নিতেন, তাহলে কী হাল হতো?
তাই যদি দেশ বাঁচে, যদি মানবজাতি বাঁচে, তাহলে করোনা নামক বিশ্বযুদ্ধের ইতিহাসকে সাক্ষী রেখে যেন আগামীদিনে কথায় কথায় ডাক্তার না পেটানোর শপথ যেন আমরা সকলে গ্রহণ করি। যুদ্ধ জয়ের পর দেশের বীর সেনাদের মতোই যেন আমরা স্যালুট করি চিকিৎসক মহলকে। অন্যথায়, থালা-ঘটি-বাটির বাদ্যি শুধু হুজুক আর প্রতীকী রয়ে যাবে। প্রকৃত শ্রদ্ধা-সম্মান থেকে যাবে অন্ধকারেই। যা দেখে হয়তো সেদিন মুচকি হাসবে মারণ ভাইরাসের অতৃপ্ত আত্মা!
