Thursday, August 28, 2025

এক রাজ্য থেকে আরেক রাজ্য হেঁটে পেরোতে গিয়ে মরছে মানুষ, মনের কথায় বরাভয় যোগাচ্ছেন মোদি

Date:

Share post:

কতগুলো লাশ দেখলে চোখের ঠুলি খসে পড়ে? করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত ভারত নাকি দারুণ লড়াই চালাচ্ছে, এমনটাই মত ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের। গোটা দেশ লকডাউন। চিকিৎসকদের জন্য হাততালি, থালা বাসন, গ্যাস সিলিন্ডার বাজানোর পর গোটা দেশ স্বেচ্ছায় নিজেদের আটকে রেখেছে ঘরের মধ্যে । প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে লকডাউনই একমাত্র বাঁচার রাস্তা। কিন্তু রণবীর সিংয়ের কী হবে? যে ছেলেটা নিজের জীবন বাঁচানোর জন্য মরিয়া হয়ে দিল্লির কর্মস্থল থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরে মধ্যপ্রদেশে পৌঁছানোর জন্য হাঁটা শুরু করেছিল! রাস্তাতেই হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে মারা যায় রণবীর। তেলেঙ্গানায় কাজ করতে এসে আটকে পরা ২০০ রাজস্থানী শ্রমিক, দুটিমাত্র কন্টেইনারে গাদাগাদি হয়ে রওনা দিয়েছিল রাজস্থানে।চোখ কপালে উঠে ছিল প্রশাসনের। শুধু রাজস্থানের ২০০ শ্রমিক নয়, প্রতিদিন হাজার হাজার শ্রমিক অসহায় ভাবে নিজের ঘরে ফিরতে চাইছে পায়ে হেঁটে। এদের মধ্যে ১৭ জন শ্রমিক রাস্তাতেই মারা গেছেন। তাদের মধ্যে পাঁচজন শিশু। এই মৃত্যুর জন্য কাকে দায়ী করবেন? হিসেব বলছে গোটা দেশে এখন পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন ২৭ জন মানুষ। এই ১৭ জন কি তাদের সঙ্গে যোগ হবে না? কেন্দ্রীয় সরকার বলছে, এই চরম পরিস্থিতিতে সবাইকে সবেতন ছুটি মঞ্জুর করা হোক। কেন্দ্রীয় সরকার বলছে, এই পরিস্থিতিতে সুস্থ থাকতে প্রত্যেককেই নিজের ঘরে থাকতে হবে ।তাহলে কেন এই পরিযায়ী শ্রমিকদের বেরিয়ে পড়তে হচ্ছে রাস্তায়! শত শত কিলোমিটার দূরে কেন পায়ে হেঁটে পৌঁছানোর চেষ্টা চালাতে হচ্ছে তাদের। যেই সংস্থায় এই শ্রমিকরা কাজ করে, তাদের কি বিন্দুমাত্র দায় নেই? দায় নেই সরকারের? উচ্চবিত্ত কিছু মানুষ বিদেশে আটকা পড়লে, তাদের সুরক্ষিতভাবে দেশে ফিরিয়ে আনতে ব্যবস্থা করা হয় বিশেষ বিমান। এই মানুষগুলোর জন্য কি ন্যূনতম বাসের ব্যবস্থা করা যায় না? উত্তরপ্রদেশের যোগী সরকার কিছু বাসের ব্যবস্থা করেছেন বটে ,কিন্তু তা কি প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল নয়? করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রুখতে অনেকদিন আগেই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমান ওঠানামা বন্ধ করার কথা বলেছিল বিরোধী শিবির, কানে তোলেনি মোদি সরকার। লকডাউন এর জন্য নির্দিষ্ট প্রস্তুতি নেওয়ার কথা বলেছিল বিরোধী শিবির, তা অগ্রাহ্য করেছিল গেরুয়া শিবির। তারই খেসারত দিতে হচ্ছে এখন। মন কি বাত অনুষ্ঠানে মোদি দেশের মানুষকে বরাভয় যোগাচ্ছেন, অথচ তার লোকসভা কেন্দ্র বারাণসীতে ঘাস খেয়ে বাঁচতে হচ্ছে মানুষকে। এই ব্যর্থতার দায় কে নেবে ?পরিযায়ী শ্রমিকদের সুরক্ষার দায়িত্ব কার? প্রশ্নটা ভীষণ কমন, কিন্তু উত্তরটা কেন যেন খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না কিছুতেই।

spot_img

Related articles

হাসিনার প্রত্যাবর্তনে ভয় পাচ্ছে বিএনপি! নির্বাচন ভণ্ডুলের আশঙ্কা খালেদা জিয়ার দলের

বাংলাদেশ(Bangladesh) জুড়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা অব্যাহত। বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকার দেশ পরিচালনা করছে। চাপের মুখে পড়ে আগামী বছর ফেব্রুয়ারি মাসে...

রেস্তোরাঁয় বিল মেটাতে না পেরে বাসন ধুয়েছিলেন! ঘরভাড়া মেটাতে হিমশিম খেতেন আশিস

বলিউড (Bollywood) অভিনেতা আশিস বিদ্যার্থী (Ashish Vidyarthi)। নিজের ক্যারিয়ারের শুরুতে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছিলেন। কিন্তু তারপরেও আর্থিক সমস্যার...

দু’দিনেই তিন হাজার আবেদন! পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য ‘শ্রমশ্রী’ প্রকল্পে বিপুল সাড়া

রাজ্যে ফিরেছেন কর্মসংস্থানহীন বহু শ্রমিক। তাঁদের আর্থিক সুরাহার লক্ষ্যে নবান্নের উদ্যোগে চালু হয়েছে ‘শ্রমশ্রী’ অ্যাপ। আর যাত্রা শুরুর...

ওয়াক ফর প্যারালিম্পিকসে হাঁটলেন একাধিক বিশেষ ক্ষমতা সম্পন্ন অ্যাথলিটরা

প্রতিবছরের মতো এই বছরও হয়ে গেল সিভিলিয়ান ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে walk for paralympics পদযাত্রা। এই পদযত্রা শুরু হয়েছিল...