চলে গেলেন আধুনিক ক্রিকেটে “ডাকওয়ার্থ-লুইস” পদ্ধতির জনক টনি লুইস

প্রয়াত আধুনিক সীমিত ওভারের আধুনিক ক্রিকেটে “D/L” বা ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতির অন্যতম জনক টনি লুইস।ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) পক্ষ থেকে তাঁর মৃত্যুর খবর জানানো হয়েছে। ৭৮ বছর বয়সে প্রয়াত হলেন টনি লু্ইস।

১৯৯৭ সালে একদিনের ক্রিকেটের জন্য সতীর্থ গণিতবিদ ফ্র্যাঙ্ক ডাকওয়ার্থকে নিয়ে “ডাকওয়ার্থ-লুইস” পদ্ধতি প্রচলন করেন টনি লুইস। বৃষ্টি-বিঘ্নিত ক্রিকেট ম্যাচে যে দল পরে ব্যাটিং করবে তাদের লক্ষ্যমাত্রা কত হতে পারে, মূলত সেটি নির্ণয় করাই এই পদ্ধতির উদ্দেশ।

১৯৯৯ সালে আইসিসি আনুষ্ঠানিকভাবে “ডাকওয়ার্থ-লুইস”-এর ফর্মুলা প্রয়োগ করে। ১৫ বছর পর ২০১৪ সালে ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতির নাম পরিবর্তন করে ডাকওয়ার্থ-লুইস-স্টার্ন বা ডিএলএস পদ্ধতি রাখা হয়।

১৯৯৭ সালের আগে বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে চালু ছিল অদ্ভুত এক নিয়ম। যে নিয়মে রান তাড়ায় যত ওভার কাটা যেত, প্রথম ইনিংসে ব্যাট করা দলের সবচেয়ে কম রান ওঠা সেই কটি ওভারের রান বাদ যেত। তাতে মাঝেমধ্যেই অদ্ভুত সব হিসাব পাওয়া যেত। সবচেয়ে বিখ্যাত হয়ে আছে ১৯৯২ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার সেমিফাইনাল ম্যাচটি।

বৃষ্টি নামার আগে ১৩ বলে ২২ রান দরকার ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার। বৃষ্টি থেকে যাওয়ার পর হিসাব এলো ১ বলে ২১ রানের। কার্যত যেটা ম্যাচ হাতে হয়েছিল প্রোটিয়াদের।

ডাকওয়ার্থ অবশ্য আশির দশক থেকেই বৃষ্টি-বিঘ্নিত ম্যাচ নিয়ে কাজ করে যাচ্ছিলেন। তবে সে সময়ে ক্রিকেট সংশ্লিষ্টরা তাঁকে পাত্তা দেননি। পরে ১৯৯২ সালে লন্ডনের রয়্যাল স্ট্যাটিস্টিক্যাল সোসাইটির কনফারেন্সে “ফেয়ার প্লে ইন ফাউল ওয়েদার” নামের একটি প্রবন্ধ পাঠ করেন ডাকওয়ার্থ। ব্রিস্টলের ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্ট অব ইংল্যান্ডের ব্যবস্থাপনা বিজ্ঞানের সেই সময়ের লেকচারার লুইসও উপস্থিত ছিলেন সেই কনফারেন্সে। ডাকওয়ার্থের প্রবন্ধে মুগ্ধ লুইস একসঙ্গে কাজ করার প্রস্তাব দেন। সেই ডাকে সাড়া দিয়েই দু’জনে হিসাবনিকাশ শুরু করেন। বাকিটা ইতিহাস।

তাঁদের হিসাব প্রথম কোনও ম্যাচে ব্যবহার করা হয়ে ১৯৯৭ সালের ১ জানুয়ারি। জিম্বাবোয়েকে ২০০ রানে অলআউট করা ইংল্যান্ড ৪২ ওভারে লক্ষ্য পেয়েছিল ১৮৬ রানের। ম্যাচটি ইংলিশরা হারে ৭ রানে।

ক্রিকেট ও গণিতে অন্যন্য অবদান রাখায় ২০১০ সালে ডাকওয়ার্থ ও লুইসকে MBE সম্মান দেওয়া হয়। ক্রিকেট যতদিন থাকবে, ততদিন বাইশ গজ মনে রাখবে টনি লুইসকে।

Previous articleBREAKING : এ বছর অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত সবাই পরের ক্লাসে উত্তীর্ণ, ঘোষণা রাজ্য সরকারের
Next articleলকডাউনের প্রভাব বোঝা যাবে দুসপ্তাহ পর, মত বিশেষজ্ঞদের