করোনা’র ‘ভালো দিক’! হোয়াটসঅ্যাপে বঙ্গ- সিপিএমের রাজ্য কমিটির বৈঠক!

বিস্তর গালমন্দ খাচ্ছে বটে, তবু এর ফাঁকে অন্তত একটি ‘পজিটিভ’ কাজ করেছে করোনা৷

লকডাউনের মাঝে কিছুটা গোপনেই রাজ্য কমিটির বৈঠক সেরে ফেললো সিপিএম৷ আর এই বৈঠক হলো হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে৷ রাজ্য কমিটির সদস্যদের এই হোয়াটসঅ্যাপ-গ্রুপে যুক্ত করা হয় আগে৷ তার পর সেই গ্রুপেই চলে কথা চালাচালি, হয় বৈঠক৷
করোনা- ধাক্কায় দুম করে ‘অ্যাডাল্ট’ হয়ে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে আড়াই ঘণ্টার এই বৈঠক হয়েছে৷ দলের বৈঠক করতে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে রীতিমতো নজির গড়েছে রাজ্য সিপিএম৷ এককালে কম্পিউটারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা কমিউনিস্টরা এইভাবে বৈঠক করায় রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে৷

মূলত বঙ্গের করোনা-পরিস্থিতিতে দলের কী করা উচিত, তা নিয়ে আলোচনা করতেই রাজ্য সিপিএম হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে এই বৈঠক করেছে বলে বিশেষসূত্রে জানা গিয়েছে৷ এই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত হয়েছে, আগামীদিনেও প্রয়োজন হলে হোয়াটসঅ্যাপ বা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠক হতে পারে৷
লকডাউনে রাজ্যে সব ধরনের রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কর্মসূচি স্থগিত করেছে আলিমুদ্দিন৷ কর্মসূচি স্থগিত থাকলেও এই দুঃসময়ে সাধারণ মানুষের পাশে থেকে জনসংযোগ রক্ষার ছক হাতছাড়া করতে চাইছে না। তাই লকডাউনের সময় পার্টির নেতা-কর্মীদের ‘ডিউটি’ বেঁধে দিতে তড়িঘড়ি রাজ্য কমিটির সদস্যদের সঙ্গে
হোয়াটসঅ্যাপ – প্রযুক্তি ব্যবহার করে বৈঠক করলেন বিমান বসু-সূর্যকান্ত মিশ্ররা। রাজ্য কমিটির সদস্যদের নিয়ে তৈরি হয়েছে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপও৷ এবার থেকে এই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপকে কাজে লাগানো হবে৷

বৈঠকের আগের দিন ওই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপেই রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র তাঁর সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদন পেশ করেন। রাজ্য কমিটির নেতারা যাতে এই রিপোর্টের ভিত্তিতে নিজেদের মতামত তৈরি রাখতে পারেন এবং বৈঠকে তা বলতে পারেন, সেজন্যই একদিন আগে রিপোর্ট পেশ করেন সূর্যবাবু।
পার্টি সূত্রের খবর, গত ২৯ তারিখ বেলা ২ টোয় বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে থাকা রাজ্য কমিটির সদস্যরা তাঁদের অ্যানড্রয়েড মোবাইলে ওই গ্রুপে সক্রিয় হন। প্রত্যেকেই করোনা নিয়ে তাঁদের জেলা পার্টি বা গণ সংগঠনের তরফে করোনা পরিস্থিতিতে দলের অবস্থান ও কার্যক্রম জানান। বৈঠকে সূর্যবাবুকে বলা হয়, আরও বেশি করে সংবাদমাধ্যমের সামনে তাঁকে আসতে হবে৷ সম্পাদক হিসেবে কিছু প্রশ্নের সংক্ষিপ্ত উত্তরও দেন সূর্যবাবু। বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ এই হোয়াটসঅ্যাপ- বৈঠক শেষ হয়। কয়েকজন নেতা তারপরও ঘণ্টা দেড়েক এই প্রসঙ্গে নিজেদের মতামত ব্যক্ত করে যান। সূত্রের খবর, দু’দিন পর সূর্যবাবু সকলের মতামত খতিয়ে দেখে ওই গ্রুপেই জবাব দেন। মানুষের সুবিধা-অসুবিধার কথা মাথায় রেখে লকডাউন চলাকালীন জেলা ও এরিয়া কমিটির সব দপ্তরে দু’-তিনজন করে পার্টিকর্মীকে সর্বক্ষণ থাকার নির্দেশ দেন সূর্যবাবু। প্রযুক্তিকে এভাবে ব্যবহার করে রাজ্য কমিটির বৈঠক করায় দলের
কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তারিফ করেজে আলিমুদ্দিনকে। দলের রাজ্য কমিটি বৈঠকের পর সিটু নেতৃত্বও একই কায়দায় ওয়ার্কিং কমিটি এবং রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর আলোচনা সেরেছে সম্প্রতি।

Previous articleত্রাণ সংগ্রহে ভারত-পাক ম্যাচ, শোয়েবের প্রস্তাবে ক্ষুব্ধ কপিল
Next articleকরোনা আক্রান্ত চোর, কোয়ারেন্টাইনে পুলিশ-বিচারক-সহ অনেকে, সুযোগ বুঝে পগারপার সঙ্গী চোর