বিশেষজ্ঞদের আশার বাণী, দেশে সংক্রমিতের সংখ্যা বাড়তে দ্বিগুণ সময় নিচ্ছে

কিছুটা আশার আলো দেখালেন বিশেষজ্ঞরা।

সোমবার সকালে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছে গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে আরও ৭৯৬ জনের করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে। ফলে গোটা দেশে আক্রান্তের সংখ্যা এখন মোট ৯,১৫২। দেশে মৃত্যু হয়েছে মোট ৩০৮ জনের। শুধুমাত্র মহারাষ্ট্রেই মারা গিয়েছেন ১৪৯ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গিয়েছেন আরও ৩৫ জন। উদ্বেগের কথা, দেশে করোনা- আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার থেকে ৯ হাজারের গণ্ডি ছাড়িয়ে গেল মাত্র দু’সপ্তাহে।

করোনা- সংক্রমণ বৃদ্ধি নিয়ে গোটা দেশ যখন আতঙ্কিত, তখন বিশেষজ্ঞরা খুবই গুরুত্বপূর্ণ কথা বলছেন৷ তারা বলেছেন, দেড় সপ্তাহ আগে যে হারে বাড়ছিল সংক্রমিতের সংখ্যা, সেটা এখন অনেকটা কমেছে।

🔴 চলতি মাসের ২ ও ৩ তারিখ, যখন দিল্লির তবলিগি জামাতের ঘটনা প্রকাশ্যে এলো, তখন ভয়ঙ্কর দ্রুত হারে বেড়ে চলছিলো সংক্রমিতের সংখ্যা। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক তখন জানিয়েছিল, সংক্রমিতের সংখ্যা দ্বিগুণ হতে সময় নিচ্ছে গড়ে ৪.১ দিন। অর্থাৎ, ৪ দিন আগে সংখ্যাটা যদি ১০০০ হয়, তা হলে ৪ দিন পরেই তা ২ হাজার হচ্ছে।

🔴 দেশে একটা সময় এমনও হয়েছিলো যখন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা প্রতি ৩.২ দিনে দ্বিগুণ হচ্ছিল।

🔴 কোনও সন্দেহ নেই, এই পরিসংখ্যান খুবই ভয়াবহ৷ এই হিসেবকে ভিত্তি করেই ICMR জানিয়েছিল যে ১৪ এপ্রিল তারিখে ভারতে করোনা- আক্রান্তের সংখ্যা ১৭ হাজার হয়ে যেতে পারে।

🔴 এর পর অবশ্য এভাবে দ্বিগুণ হওয়ার সময়সীমা কিছুটা কমে গিয়েছিল।

🔴 গত সোমবার
অর্থাৎ ৬ এপ্রিল থেকে যে কোনও কারনেই হোক পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে।

🔴 বিশেষজ্ঞদের অভিমত, রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধির ওপরে সামগ্রিক পরিস্থিতির উন্নতি বা অবনতি বিচার করা যায় না। উন্নতি বা অবনতি বুঝতে হলে নজর রাখতে হবে, আগের দিনের থেকে নতুন রোগীর সংখ্যা পরের দিন কত শতাংশ বাড়ল তার ওপর।

🔴 এক পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, গত ৩- ৪ এপ্রিল, দেশে করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছিলো প্রায় ২৬ শতাংশ। এ দেশে এখনও পর্যন্ত সেটাই সর্বোচ্চ। ওই তারিখের পর রোজ ১০ থেকে ১৭ শতাংশ হারে বেড়েছে আক্রান্তের সংখ্যা৷

🔴 কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক সোমবার সকালে যে তথ্য দিয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে মাত্র সাড়ে ৯ শতাংশ।

🔴 এই পরিসংখ্যানকে সামনে রেখে হিসেব করলে দেখা যাচ্ছে, কিছু দিন আগে আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণ হতে ৩.২ দিন সময় নিচ্ছিল৷ এখন সময় নিচ্ছে ৬.১ দিন।

🔴 কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দেওয়া ১৩ এপ্রিল, অর্থাৎ সোমবারের তথ্য বলছে আক্রান্তের মোট সংখ্যা এখন ৯,১৫২ জন। গত ৭ এপ্রিল সন্ধ্যায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৪,৭৮৯। অর্থাৎ, আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণ হওয়ার সময়সীমা যে কমেছে সেটা বোঝাই যাচ্ছে।

🔴 গোটা দেশের করোনা পরিস্থিতির সঙ্গে এক একটি রাজ্যের পরিস্থিতি তুলনাযোগ্য নয়৷ একদমই আলাদা।

🔴 কেরলে এখন নতুন আক্রান্তের সংখ্যা অনেকটাই কমে গিয়েছে। এই হার কেরল ধরে রাখতে পারলে আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণ হতে সময় লাগবে ২২ দিন৷ একইভাবে কর্নাটকে সময় লাগবে ১১ দিন।

🔴 হরিয়ানা, পাঞ্জাবে আক্রান্তের মোট সংখ্যা এই হিসাবের সঙ্গে মিলছে না৷

🔴 সংখ্যা অনেক কম হলেও, হরিয়ানায় সংখ্যা দ্বিগুণ হচ্ছে ৩.৪ দিনে এবং পাঞ্জাবে ৪.৭ দিন, মধ্যপ্রদেশে ৩.৭ দিন।

🔴 এই হিসাবই বলছে পশ্চিমবঙ্গে আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণ হচ্ছে ৭ দিনে।

🔴 ইতিবাচক সব তথ্য বিশ্লেষণ করে বিশেষজ্ঞদের ধারনা, লকডাউন জারি থাকলে ভারতের পরিস্থিতির দ্রুত স্বাভাবিক হতে পারে!

Previous articleসন্তানের জন্ম দেওয়ার পরই করোনা আক্রান্ত মা, বন্ধ হল মেডিক্যালের ইডেন বিল্ডিং
Next articleবিপদ ডাকছে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন, বলছে ফরাসি সংস্থা