ভারতের নতুন FDI নীতিকে ‘বিভেদমূলক’ বলে প্রতিবাদ জানাল চিন

ভারতের FDI বা প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ-বিধি বদলের তীব্র বিরোধিতা করল চিন। নয়া নীতি ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজেশন বা WTO-র নীতির বিরোধী বলে দাবি করে এই নয়া নীতি পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়েছে বেজিং।

দিল্লির চিনা দূতাবাসের তরফে ভারতের এই নীতিকে ‘বিভেদমূলক’ বলে মন্তব্য করা হয়েছে।

ভারত আগেই জানিয়েছে, করোনার প্রভাবে ধুঁকতে থাকা সংস্থাগুলিকে সুযোগসন্ধানী বিদেশি সংস্থা অধিগ্রহণ করে নিতে পারে, এমন আশঙ্কাতেই FDI- এ বদল আনা হয়েছে। ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রকের তরফে প্রেস বিবৃতিতে জানানো হয়েছিল, ‘‘ভারতের সঙ্গে স্থলসীমান্ত রয়েছে, এমন দেশের কোনও ব্যক্তি বা সংস্থা ভারতীয় কোনও সংস্থায় বিনিয়োগ করতে চাইলে সরকারের মাধ্যমেই তা করতে হবে। সরাসরি দুই সংস্থার মধ্যে চুক্তির ভিত্তিতে বিনিয়োগ করা যাবে না। আগে এই নিয়ম কার্যকর ছিল শুধুমাত্র বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের ক্ষেত্রে।

নয়া এই সিদ্ধান্তের ফলে নতুন বিধির আওতায় পড়ে গিয়েছে চিন, নেপাল, ভুটান, মায়ানমারও। আর FDI-নীতির এই পরিবর্তনেই সম্ভবত অসন্তুষ্ট হয়েছে বেজিং।

চিনা দূতাবাসের তরফে প্রকাশ করা বিবৃতিতে বলা হয়েছে:

১) ভারত সরকার বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে যে অতিরিক্ত বিধিনিষেধ আরোপ করেছে, তা WTO-র বিভেদহীন নীতির বিরুদ্ধে।

২) কোনও একটি নির্দিষ্ট দেশের উপর এ ভাবে বাধার সৃষ্টি করা যায় না।

৩) এটা বাণিজ্য ও বিনিয়োগের স্বাধীনতার উপরেও হস্তক্ষেপ।

৪) আশা করি এই বিভেদমূলক আচরণ পুনর্বিবেচনা করে সব দেশের ক্ষেত্রে একই নিয়ম কার্যকর করা হবে।

৫) খুলে দেওয়া হবে উন্মুক্ত, স্বচ্ছ ও সামঞ্জস্যপূর্ণ বিনিয়োগের পরিবেশ।

সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আর্জিও জানিয়েছে শি চিনফিং সরকার।

প্রসঙ্গত, করোনা-যুদ্ধের জন্য লকডাউনের জেরে শিল্প-বাণিজ্য কার্যত স্তব্ধ। বিশেষজ্ঞদের ইঙ্গিত, বহু সংস্থা দেউলিয়া হয়ে যেতে পারে। আর সেই দুরবস্থার সুযোগ নিয়ে ভারতীয় সংস্থাগুলিকে অধিগ্রহণ করে নিতে পারে চিন। এমন ঘটনা ইতিমধ্যেই ঘটেছে৷ করোনা-আবহেই
চিনের শীর্ষ ব্যাঙ্ক ‘পিপল্‌স ব্যাঙ্ক অব চায়না’ HDFC-তে অংশীদারি বাড়িয়ে নেয়। তার পরই আশঙ্কা জোরদার হয় শিল্প-বাণিজ্য মহলে।

তখনই কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে কেন্দ্রকে সাবধান করে বার্তা দিয়েছিলেন। তার পরেই তড়িঘড়ি FDI নীতিতে বদল আনে কেন্দ্র। আর তার পরেই চিন সরব হয়েছে প্রতিবাদে।

Previous articleকরোনা মুক্ত হল দেশের দুই রাজ্য
Next articleঅস্ত্রোপচারের পর সঙ্কটজনক উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং উন