কলকাতা ও রাজ্যে প্রতিদিন নীরবে ৩৫-৪০ হাজার মানুষকে খাবার দিচ্ছেন পুলিশ-কর্মীরা

লকডাউনে একাধিক অভিজ্ঞতায় অভিজ্ঞ হয়েছেন কলকাতাবাসী৷ তবে নিশ্চিতভাবেই বড় অভিজ্ঞতা হলো, পুলিশ উর্দিধারীদের মানবিক রূপ দেখা৷ লকডাউন না হলে পুলিশের এই মানবিক মুখের দেখা বোধহয় মিলতো না৷

পুলিশের দেওয়া পরিসংখ্যান বলছে, কলকাতা তো বটেই, রাজ্যজুড়ে নীরবে প্রতিদিন ৩৫-৪০ হাজার নিরন্ন মানুষকে খাবার দিচ্ছেন পুলিশ-কর্মীরা। পরিযায়ী শ্রমিক থেকে দিনমজুর, সকলেই পাচ্ছেন পুলিশের দেওয়া খাবার৷ প্রায় সব জেলাতেই এ ধরনের মানুষ রয়েছেন। লকডাউনের শুরুর দিকটা সামলাতে পারলেও, পরের দিকে তাঁদের পেটে টান পড়েছে। দু’বেলা তো দূরের কথা, একবেলার খাবার জোগাড় করতেই নাকাল হচ্ছেন তাঁরা। ঠিক তখনই তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন রাজ্য পুলিসের কর্তারা। এই মানুষদের বেঁচে থাকার জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা হবে। নিজেদের পয়সা দিয়েই জেলায় জেলায় তৈরি হয় ফান্ড। শীর্ষ কর্তারা এগিয়ে আসেন। সাহায্য করে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও। কোন এলাকায় পরিযায়ী বা কর্মহীন শ্রমিক কতো, ভবঘুরেই বা কতো, সেই হিসেব পুলিসের কাছে ছিল না। তাই শুরুর দিকে ১০-১২ হাজার মানুষের জন্য খাবার ব্যবস্থা করা হয়েছিলো৷ এরপর সংখ্যা বৃদ্ধি পায়৷ সংখ্যাটা এখন ৩৫-৪০ হাজারে পৌঁছেছে। প্রতিদিন খাবার নিতে আসা মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। কলকাতার একাধিক জায়গায় পুলিশ শিবির খুলেছে, সেখানে সাজিয়ে রাখা হয়েছে বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য৷ মানুষ নিজেদের পছন্দমতো সেখান থেকে বেছে নিচ্ছেন খাবার-দাবার৷ দেওয়া হচ্ছে রান্না করা খাবারও৷ রান্না করা খাবারেও আছে চমক৷ একঘেয়ে যাতে না হয়,সেজন্য রোজ বদলানো হচ্ছে মেনু৷ দেওয়া হচ্ছে পুষ্টিযুক্ত খাবার। নীরবে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষকে দু’বেলা অন্নের জোগান দিয়ে চলেছে কলকাতা ও রাজ্য পুলিশ ৷ দু’বেলা খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন উর্দিধারীরাই যে পুলিশ সাধারনভাবে সমালোচনা শুনতেই অভ্যস্ত, তাঁরাই এখন প্রশংসা কুড়োচ্ছেন নেট দুনিয়ার, সাধারন মানুষের৷

Previous articleফের গোল্ড বন্ড বিক্রি শুরু রিজার্ভ ব্যাঙ্কের
Next article৪ জওয়ান, মহিলা কমস্টেবল আক্রান্ত