করোনা আক্রান্তে চিনকেও ছাপিয়ে গেল ভারত, তৃতীয় দফা লকডাউন শেষের ২৪ ঘন্টা আগে প্রবল উৎকন্ঠা

দেশে তৃতীয় পর্যায়ে লকডাউন শেষ হচ্ছে আগামীকাল ১৭ মে রাত বারোটায়। কিন্তু তার ২৪ ঘন্টা আগে দেশজুড়ে উৎকন্ঠা। এবার করোনা আক্রান্তের নিরিখে চিনকেও ছাপিয়ে গেল ভারত। চিনের সরকারি হিসেবে সে দেশে এখনও পর্যন্ত কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়েছে ৮২ হাজার ৯৪১ জন। সেখানে আজ, শনিবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য দফতরের দেওয়া হিসেব অনুযায়ী ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে প্রায় ৮৬ হাজার (৮৫,৯৪০)। ফলে করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যায় ভারত এখন বিশ্বের একাদশ স্থানে রয়েছে। সুতরাং, চতুর্থ দফা লকডাউনে ছাড় বাড়ানোর একাধিক পরিকল্পনার মধ্যে এই তথ্য-পরিসংখ্যান যথেষ্ট উদ্বেগজনক।

তবে স্বস্তির বিষয় এই যে, এই মারণ রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হার এখনও চিনের তুলনায় অনেকটাই কম ভারতে।
সরকারি হিসেবে শেষ পাওয়া খবরে, চিনে মৃতের সংখ্যা ৪ হাজার ৬৩৩। সেখানে অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে ভারতে সেই সংখ্যাটা ২ হাজার ৭৫২।

এদিকে আজ, শনিবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, শেষ ২৪ ঘণ্টায় ভারতে করোনায় আক্রান্ত ৩,৯৭০ জন। মৃত্যু হয়েছে ১০৩ জনের। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত ভারতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৮৫ হাজার ৯৪০। মোট মৃত্যু হয়েছে ২ হাজার ৭৫২ জনের। এ পর্যন্ত মোট ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন।

উল্লেখ্য, করোনায় আক্রান্তের বিচারে শীর্ষে রয়েছে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রই। এখানে মোট আক্রান্ত হয়েছেন এ পর্যন্ত ১৪ লক্ষ ৮৪ হাজার ২৮৫ জন। তাঁদের মধ্যে অবশ্য ইতিমধ্যেই সুস্থ হয়ে গিয়েছেন ৩ লক্ষ ২৬ হাজারের বেশি রোগী। মৃত্যু হয়েছে ৮৮ হাজার ৫০৭ জন রোগীর। মার্কিন মুলুকে আবার সর্বাধিক আক্রান্ত নিউইয়র্ক (আক্রান্ত ৩,৫৬,০১৬ ও মৃত্যু ২৭,৫৭৪) এবং নিউজার্সিতে (আক্রান্ত: ১,৪৫,৪৯০ ও মৃত্যু: ১০,১৫০)।

আমেরিকার পর দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে স্পেন। এদেশে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ২ লক্ষ ৭৪ হাজার ৩৬৭ জন। তাঁদের মধ্যে অবশ্য সুস্থ হয়ে গিয়েছেন ১ লক্ষ ৮৮ হাজারেরও বেশি রোগী। মৃত্যু হয়েছে ২৭ হাজার ৪৫৯ জনের। আমেরিকা ও স্পেনের পর তৃতীয় স্থানে রয়েছে রাশিয়া। এ দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২ লক্ষ ৬২ হাজার ৮৪৩। মৃত্যু হয়েছে ২ হাজার ৪১৮ জন রোগীর। রাশিয়ায় ইতিমধ্যেই ৫৮ হাজার ২২৬ জন রোগী সুস্থ হয়ে গিয়েছেন। ব্রিটেনে ২ লক্ষ ৩৬ হাজার ৭১১ জন এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ৩৩ হাজার ৯৯৮ জনের। তালিকায় চতুর্থ স্থানে থাকা ইতালিতে ২ লক্ষ ২৩ হাজার ৮৮৫ জন মোট আক্রান্ত হয়েছেন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন ১ লক্ষ ২০ হাজার ২০৫ জন। মৃত্যু হয়েছে ৩১ হাজার ৬১০ জনের। তালিকায় এরপর স্থান করেছে ব্রাজিল। এদেশে মোট ২ লক্ষ ২০ হাজার ২৯১ জন মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। সুস্থ হয়ে গিয়েছেন প্রায় ৮৫ হাজারের মত রোগী। মৃত্যু হয়েছে প্রায় ১৪ হাজার ৯৬২ জন রোগীর। এরপর রয়েছে ফ্রান্স। সেদেশে মোট আক্রান্ত ১ লক্ষ ৭৯ হাজার ৫০৬ জন মানুষ। ৬০ হাজার ৪৪৮ জন রোগী এরই মধ্যে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে গিয়েছেন। এখানে মোট ২৭ হাজার ৫২৯ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। জার্মানিতে এ পর্যন্ত মোট ১ লক্ষ ৭৫ হাজার ৬৯৯ জন মানুষ করোনায় আক্রান্ত। সুস্থ হয়ে গিয়েছেন ১ লক্ষ ৫১ হাজার ৭০০। ৮ হাজার জন রোগী মারা গিয়েছেন। এরপর রয়েছে তুরস্ক। সেদেশে মোট আক্রান্ত ১ লক্ষ ৪৬ হাজারেরও বেশি। ১ লক্ষ ৬ হাজার ১৩৩ জন এরই মধ্যে সুস্থ হয়ে যাওয়ায় বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ৪ হাজার ৫৫ জনের। ইরানে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লক্ষ ১৬ হাজার ৬৩৫ জন। মৃত্যু হয়েছে ৬ হাজার ৯০২ জন রোগীর। সুস্থ হয়ে গিয়েছেন ৯১ হাজারেরও বেশি মানুষ।

Previous articleলকডাউনে বন্ধ চার ধারাবাহিক, কর্মহীন বহু
Next articleউত্তরপ্রদেশে গাড়ি দুর্ঘটনায় পরিযায়ী শ্রমিকদের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ মোদি-মমতার