বিতর্ক উস্কে প্রাক্তন মেয়র শোভন বললেন, ভেন্টিলেশনে যাওয়ার পর রোগীর চিকিৎসা হলে এমনই হয়

সমস্ত রাগ-অভিমান-ক্ষোভ উগরে দিলেন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। আমফান বিধ্বস্ত কলকাতায় মানুষের ক্ষোভ-বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর স্পষ্ট কথা, রোগী ভেন্টিলেশনে যাওয়ার পর যদি তার চিকিৎসা শুরু করা হয়, তাহলে এই অবস্থাই হয়। একইসঙ্গে বুঝিয়ে দিলেন পুর কমিশনারকে সরানো মোটেই যথার্থ হয়নি। শোভনের ভাষায় প্রাক্তন পুর কমিশনার খলিল আহমেদ যথেষ্ট যোগ্য।

ভয়াল ঘূর্ণিঝড়। এ নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু এই পরিস্থিতি কেন তৈরি হল? শোভনের কথায় আগে বোঝা উচিত ছিল যে পরিস্থিতি অস্বাভাবিক হতে পারে। ঝড়ে গাছ তো পড়বেই। দেখলাম কখনও বলা হচ্ছে ২ হাজার গাছ কলকাতায় পড়েছে, কখনও বলা হচ্ছে ৫ হাজার। কোনটা ঠিক? একটা হিসাব থাকবে না? আমি যখন দায়িত্বে ছিলাম তখন থানার ওসি বলে দিত কোথায় ক’টা গাছ পড়েছে। কোন গাছটা পড়েছে। শোভন এও বললেন, শুনছি এখন বলা হচ্ছে একটা গাছ কাটতে নাকি তিন ঘন্টা সময় লাগে! কী বলব! মূল গুঁড়িটা কেটে সরিয়ে দেওয়ার পর ডালপালাগুলো তো করাত দিয়ে কাটা যায়। আসলে কাজ সম্বন্ধে নূন্যতম ধারনা থাকতে হবে। না হলে এই পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হবে। লক্ষ্য যে তাঁর এক সময়ের সহকর্মী ফিরহাদ হাকিম, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। শোভন যোগ করেন, বাগরি মার্কেটে আগুন লাগার সময় আমি সেখানে টানা ৭২ ঘন্টা ছিলাম। ঘটনাস্থলে থাকার কারণে পরিস্থিতি কিন্তু অনেকটা আগেই সামলানো গিয়েছিল।

এই ক্ষোভ-বিক্ষোভ কেন তৈরি হল? শোভন এখানে ঝানু রাজনীতিকের মতো বলেছেন, হতে পারে অনেক আগে থেকেই মানুষের মধ্যে তৈরি হয়েছিল। এখন সেটা ক্রমশ দানা বাঁধছে। কিন্তু টানা ৭২ ঘণ্টা যদি জল এবং আলো না থাকে তাহলে মানুষের ধৈর্যচ্যুতি ঘটা স্বাভাবিক। দুর্ভাগ্যজনক হলেও এটাই বাস্তব। এখানে একে অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে সরে গেলে চলবে না। প্রাক্তন মেয়র বলেন, আমার বেশ মনে আছে কলকাতা পৌরনিগমের মেয়রের দায়িত্ব নেওয়ার পর আমি মুখ্যমন্ত্রীকে অন্য দফতরের দায়িত্বের কথাও বলেছিলাম। মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন কলকাতার মেয়র মানে গোটা কলকাতায় কোনও কিছু হলে মেয়রকেই দায়িত্ব নিতে হবে। আর তাই যতদিন, যতক্ষণ দায়িত্বে ছিলাম দায়িত্ব পালন থেকে পিছপা হয়নি। রেজিগনেশন পকেটে নিয়ে অ্যাম্বুলেন্স উদ্বোধন করেছি, সরকারি অনুষ্ঠানে গিয়েছি, সন্ধ্যায় মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পদত্যাগপত্র দিয়েছি। কিন্তু দায়িত্ব পালন থেকে সরে আসিনি। শোভনের মুখ যেন একটু বিষাদমাখা!

Previous articleআমপানের কাছে হার মানল ২৭০ বছরের বুড়ো শরীর!
Next articleভ্যাকসিন আসার আগেই পৃথিবী থেকে বিদায় নেবে করোনা!