মেয়ের স্কুল-ফি দিতে কিডনি বিক্রির অনুমতি চেয়ে চিঠি প্রধানমন্ত্রীকে

লকডাউনের মধ্যেও স্কুল ফি দেওয়া নিয়ে সারা দেশেই একের পর এক ঘটনা ঘটে চলেছে৷ একাধিক স্কুল কর্তৃপক্ষ নিয়মমাফিক ফি দেওয়া নিয়ে অনড়৷ অভিভাবকদের উপর চাপ বাড়ানো হচ্ছে৷ সংকটকালেও স্কুল কর্তৃপক্ষ নমনীয় নয়৷ এবার এই ধরনেরই এক ঘটনা বিতর্ক আরও তীব্র করলো৷

সম্প্রতি চণ্ডীগড়ের এক দম্পতি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন৷ ওই চিঠির প্রতিটি লাইনেই এই দম্পতি পরিবারের যন্ত্রণার কথা তুলে ধরেছেন প্রধানমন্ত্রীর সামনে৷

লকডাউনে দীর্ঘদিন ঘরে আটকে থাকা চণ্ডীগড়ের অতুল ভোরা এবং তাঁর স্ত্রী চিঠিতে সন্তানের স্কুল ফি দেওয়ার জন্য কিডনি বিক্রি করতে চান, সে ব্যাপারে অনুমতি চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে ৷ চিঠিতে বলেছেন, মেয়ের স্কুল ফি দেওয়ার জন্য তাঁদের কাছে কোনও আর্থিক সঙ্গতি নেই৷ তাই এই পথই তাঁদের কাছে একমাত্র উপায় ৷
অতুল ভোরা চিঠি লিখে জানিয়েছেন, একটি কোম্পানিতে তিনি চুক্তিভিত্তিক কর্মী হিসেবে কাজ করতেন ৷ এই লকডাউন চলাকালীন তিনি চাকরি হারিয়েছেন ৷ তাঁর পরিবারে ৫ সদস্য রয়েছে ৷ আর তিনিই একমাত্র রোজগার করেন৷ নিজেদের যা সামান্য সঞ্চয় আছে, তা থেকে কোনওমতে দিন কাটছে আধপেটা খেয়ে৷ চাকরি হারানোর পর এখন তাদের পরিবার চালানোর একমাত্র সম্বল মায়ের পেনশন ৷ তাঁর কাছে বাড়ি ভাড়া দেওয়ার মতো অর্থ নেই, নেই ইএমআই দেওয়ার মতো অর্থ , হেলথ ইনসিওরেন্স ও ইউটিলিটি বিলও মেটাতে পারছেন না৷

প্রধানমন্ত্রীকে তিনি জানিয়েছেন, চণ্ডীগড়ের সেন্ট জোসেফস সিনিয়র সেকেন্ডরি স্কুলের সপ্তম শ্রেণীতে পড়াশুনো করে তাঁদের মেয়ে ৷ স্কুল এই মুহূ্র্তে চলতি বছরের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত ৩২ হাজার টাকার টিউশন ফি চাইছে ৷ তাঁরা এখন এই টাকা দেওয়ার অবস্থায় নেই৷

অতুল ভোরা এর আগে ফি রেগুলেটরি কমিটি ও চণ্ডীগড়ের শিক্ষা দফতরের কাছে এই বিষয়ে চিঠি দিয়েছিলেন৷ তাঁর দাবি এরা কেউই স্কুলকে কোনও শোকজ করেনি৷ বিভিন্ন স্কুলের পেরেন্ট অ্যাসোসিয়েশন একই অভিযোগ তুলেছে, কিন্তু কেউ কর্ণপাত করছে না৷

তিনি চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীকে লিখেছেন, স্কুল ফি নিয়ে সরকার বা স্কুল কর্তৃপক্ষ যদি এতটাই কড়াকড়ি করে, তাহলে শিক্ষার বাণিজ্যিকরণে “সহযোগিতা” করার জন্য শরীরের অঙ্গ বিক্রিকেও সরকারি স্বীকৃতি দিন ৷ যাতে স্কুল ফি দিতে নিজেদের কিডনি বেচতে পারেন ৷ চণ্ডীগড় পেরেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের তরফে নীতিন গোয়েল জানিয়েছেন, ‘বেশিরভাগ স্কুল এত বিশাল পরিমান টাকা একেবারে চেয়েছে, যা স্কুলের মোট টিউশন ফি-র সমান ৷ এই সংকটকালেও বাবা-মা কোনও রেহাই পাচ্ছেন না’৷ এরপর কী হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় এ বিষয়ে কোনও জবাব দিয়েছে কিনা জানা যায়নি ।

Previous articleএবার অন্ধ্রপ্রদেশে উল্টে গেল পরিযায়ী শ্রমিক ভর্তি কলকাতাগামী বাস, জখম কমপক্ষে ১০
Next articleএবার করোনায় মৃত্যু হলো দিল্লি AIIMS-এর সাফাইকর্মী-সুপারের, গাফিলতির অভিযোগ