রাত পোহলেই জামাই ষষ্ঠী, করোনা-আমফানের তাণ্ডবে কাঁদছে বাংলার বাজার

করোনা আবহ আর আমফান বিপর্যয়ের মধ্যেই চলে এলো বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণের অন্যতম জামাই ষষ্ঠী। রাত পোহালেই বাঙালির এই পরম পরব। কিন্তু লকডাউন এবং আমফান কেড়ে নিয়েছে অনেক কিছুই। নেই কোনও উত্তাপ, কোথায় কোনও হোটেল, রেস্তোরাঁর স্পেশাল ডিশ নেই। বাজারের থলি হাতে শ্বশুরদের নেই কোনও ছোটাছুটি। রাজ্য সরকারের ঘোষণাও নেই অর্ধ-দিবস ছুটি। ফোনে ফোনে হোক না যতই প্রণাম, আশীর্বাদ, কিন্তু কব্জি ডুবিয়ে খেতে না পারলে সেটা আবার জামাই ষষ্ঠী কীসের?

একদিকে মারণ ভাইরাস করোনার জন্যে চলছে লকডাউন, অন্যদিকে আমফানে বিধ্বস্ত রাজ্য। যার জন্যে বাজারে জিনিসপত্রের দাম আগুন ছোঁয়া। ফলে মধ্যবিত্তের মাথায় পড়েছে হাত। লকডাউনের জন্যে বাইরে থেকে আসছে না কোনও ফলের গাড়ি। তাই আর এই বছর মাছের মুড়ো, কাঁসার বাটিতে আমের আঁটি, লিচু-সহ পাঁচরকম ফল সাজিয়ে আপ্যায়ন জুটছে না আদরের জামাইদের ভাগ্যে।

শিয়ালদহ কোলে মার্কেটের এক মাছ বিক্রেতার কথায়, “আমফান আর লকডাউনের জন্য বাজারের অবস্থা খুব খারাপ। সমস্ত মাছের দাম মধ্যবিত্তদের ধরা ছোঁয়ার বাইরে। এই জামাই ষষ্ঠীর সময় বাজারে বিভিন্ন ধরণের মাছ আসত, কিন্তু এবছর তা আসছে না। গলদা চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা কেজি দরে। আমফান এবং লকডাউনের জেরে এবছর ইলিশ আসেনি এখনও। ১২০০ টাকা করে গত বছরের ষ্টোরের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে।”

রাজ্য সরকারের টাস্ক ফোর্সের অন্যতম সদস্য রবীন্দ্রনাথ কোলে বলেন, “আমফানের প্রভাবে আমাদের রাজ্যে এতো বেশি ক্ষতি হয়েছে যে এই বছর জামাইদের আদর আপ্যায়ন করার জন্য যে ব্যবস্থা, তা নেওয়ার জন্য এবার কতজনের মানসিক অবস্থা আছে আমি জানি না। এই সাইক্লোনের জন্য পেয়ারা পাওয়া যাচ্ছে না। সব পেয়ারা পড়ে গেছে। আম ৮০ টাকা কিলো যাচ্ছে। আমফানের জন্য দুই ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর-সহ বেশ কিছু জায়গায় ক্ষতি হয়েছে। যার ফলে সবজির বাজার মানুষের হাতের নাগালের বাইরে চলে গেছে।”

তবে এই মুহূর্তে রাজ্যে প্রচুর পরিমানে পর্যাপ্ত আলু আছে, তাই আলু দিয়ে এইবারের মতন কাজ চালানোর পরামর্শ দেন রবীন্দ্রনাথ কোলে।

Previous articleবাংলার করোনা ও আমফান আপডেট
Next articleভয়াবহ দাবানলের কবলে পড়েনি উত্তরাখণ্ড! ভুয়ো ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায়