Monday, November 10, 2025

পঙ্গপাল হানায় মাথায় হাত কৃষকদের।
ভয়াবহ পঙ্গপালের হামলায় ভারত ও পাকিস্তানের খাদ্য নিরাপত্তা সঙ্কটে। ঝাঁকে ঝাঁকে পঙ্গপাল ছড়িয়ে পড়েছে দুই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।

এবার এই সংকটের মাঝেও নতুন একটি সমাধান খুঁজে পেয়েছেন পাকিস্তানের কৃষকরা। পঙ্গপাল শুধু দমনই নয়, তা বিক্রি করে আয়েরও বড় উপায় বের করেছেন পাঞ্জাবের ওকারা জেলার কৃষকেরা।

পঙ্গপাল মুরগির উচ্চপ্রোটিন যুক্ত খাবার। ওকারা জেলায় উদ্ভাবনী এ প্রকল্প এনেছেন পাকিস্তানের জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তা ও গবেষণা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা মোহাম্মদ খুরশিদ ও পাকিস্তান কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের জৈবপ্রযুক্তিবিদ জোহর আলী। তিনি বলেন, “আমরা যখন শুরু করলাম তখন অনেকেই উপহাস করেছেন। কারণ পঙ্গপাল ধরে বিক্রি করবে এ চিন্তা তখনও পর্যন্ত কেউ করতে পারেনি।” তিনি আরও বলেন যে , ‘আমরা ইয়েমেনের ২০১৯ সালের একটি উদাহরণ থেকে উদ্বুদ্ধ হয়েছি। যুদ্ধ বিধ্বস্ত ও দুর্ভিক্ষ কবলিত ওই দেশটিতে শ্লোগান উঠেছিল, ‘পঙ্গপাল খেয়ে ফেল, ওরা ফসল খাওয়ার আগে’।
এই শ্লোগানকে মাথায় রেখে পাকিস্তানের জনসংখ্যাবহুল প্রত্যন্ত গ্রাম ওকারা জেলাতে তিনদিনের পাইলট প্রকল্প গ্রহণ কর হয়। প্রকল্পটি ছিল দেপালপুরে পেপলি পাহার বনে। সেখানে গত ফেব্রুয়ারি থেকেই বিপুল সংখ্যক পঙ্গপাল আসে। তারপরই ওই বন নির্বাচন করা হয়। ওখানে পঙ্গপালের ওপর কীটনাশক ব্যবহার করাও হয় না। এরপর একটি শ্লোগান ছড়িয়ে দেন তারা, ‘পঙ্গপাল ধর, আয় কর এবং ফসল বাঁচাও’। প্রকল্পের আওতায় কৃষকদের প্রতি কেজি পঙ্গপালের বিনিময়ে ২০ পাকিস্তানি রুপি করে দেয়া হয়।
পঙ্গপাল সাধারণত দিনের আলোতে উড়ে বেড়ায়, রাতে ওরা গাছপালায় বা উন্মুক্ত ময়দানে বিশ্রাম নেয়। তখন একদম নড়াচড়া করে না। মৃতের মতো পড়ে থাকে। ওই সময় পঙ্গপাল ধরা অনেক সহজ। কৃষকদের এই বুদ্ধি দেন জৈবপ্রযুক্তিবিদরা। তাতেই কাজ হয়। কৃষকরা প্রথম রাতেই ৭ টন পঙ্গপাল ধরে। তারপর সেগুলো মুরগির খাবার তৈরির কারখানায় বিক্রি কর হয়। একদিনে এই কাজে কোন কোন কৃষক ২০ হাজার রুপিও আয় করেন বলে জানিয়েছেন জৈবপ্রযুক্তিবিদরা।

আলী বলেন, ‘প্রথম রাতে ১০ থেকে ১৫ জন কৃষক কাজ করে। কিন্তু লোভনীয় এ আয়ের খবর চর্তূদিকে ছড়িয়ে পড়লে তৃতীয় রাতে কয়েকশ কৃষক জড়ো হয়। তারা নিজেরাই থলে নিয়ে আসে এবং সারারাত পঙ্গপাল ধরে থলে ভর্তি করে ফেলে। আমরাও তাদের বিনিময় দিয়ে দিলাম।’
পাকিস্তানে মুরগির খাবার তৈরির প্রতিষ্ঠান হাই-টেক ফিডসের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আতাহার বলেন, ‘পঙ্গপাল যদি কীটনাশক ব্যবহার ছাড়াই ধরা যায় তবে এটি অত্যন্ত উচ্চপ্রোটিন যুক্ত খাবারে পরিণত হয়। এ খাবার হাস-মুরগি, মাছ ও গবাদিপশুকে খাওয়ানো যায়।’ তিনি বলেন, ‘আমরা যে সয়াবিন আমদানি করে প্রাণীর খাবার তৈরি করি, তাতে প্রোটিন ৪৫ শতাংশ, আর পঙ্গপালে আছে ৭০ শতাংশ।পঙ্গপালে আমাদের খরচও পড়ে অনেক কম।’

Related articles

ধর্মীয় বই কিনতে গিয়ে ২ কোটি টাকার প্রতারণার ফাঁদে কলকাতা ইসকন! গ্রেফতার ১ 

ধর্মীয় বই কেনার অর্ডার দিতে গিয়ে প্রায় ২ কোটি টাকার প্রতারণার শিকার হল কলকাতা ইসকন। অভিযোগ, অর্ডার অনুযায়ী...

বিশ্বকাপজয়ী মেয়ের সৌজন্যে হারানো পুলিশের চাকরি ফিরে পাচ্ছেন বাবা

কয়েকদিন আগেই আইসিসি একদিনের বিশ্বকাপ(ICC World Cup)  জিতেছে ভারতীয়  মহিলা দল। মেয়েদের সাফল্যে গর্বিত মা-বাবারা। তবে বিশ্বকাপজয়ী মেয়ের...

গ্যাস-সমস্যায় নিঃশ্বাসের পরীক্ষা: যুগান্তকারী আবিষ্কারে বিশ্বে স্বীকৃতি বাঁকুড়ার চিকিৎসকের

একটি সাধারণ সমস্যা, যাতে জর্জরিত বর্তমান যুবসমাজ থেকে শিশুরা পর্যন্ত। গ্যাস বা গ্যাসট্রাইটিসের মতো সমস্যা নির্ধারণ করার জন্য...

একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগে বাড়তে পারে আসন সংখ্যা, জানালো এসএসসি 

রাজ্যের একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের ফলাফল ইতিমধ্যেই প্রকাশ করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)। প্রকাশিত ফল অনুযায়ী,...
Exit mobile version