এতো সুকুমারের নতুন পণ্ডিত! পাঠকদের উদ্দেশে কুণাল ঘোষের কলম

এখন বিশ্ব বাংলা সংবাদে এটা প্রায়শই হয়।

গত দুদিন বিজেপির নতুন কমিটি সংক্রান্ত খবর প্রকাশের পর আবার দেখলাম।

খবর পছন্দ হলে ভালো।
আর অপছন্দ হলে আমার নাম তুলে আক্রমণ কিছু কিছু পাঠকপাঠিকার।

হ্যাঁ, আমি এই পোর্টালে লিখি। সম্পাদকীয় পরামর্শ দিই।
কিন্তু এর প্রতিটি খবর আমার লেখা বা আমার পাওয়া; এটা কে বলল?

গতকাল রাতে, এক বর্ষীয়ান সাংবাদিককে হাসতে হাসতে বললাম, কী কাণ্ড দেখো। তুমি লিখলে। সেটি আপলোড হওয়ার আগে পড়েও দেখিনি। অথচ তার নিচের কমেন্টে গাল খাচ্ছি আমি ! এতো ভারি মজার ব্যাপার।

আসলে কিছু সবজান্তা পণ্ডিত আছেন।
কাগজ বা চ্যানেলে এঁরা পাকামি করতে পারেন না। মাতব্বরি দেখাতে যান পোর্টালে বা ফেস বুকে; কারণ হাতের কাছে। সত্যি ভুল হলে অবশ্যই বলবেন। কিন্তু এঁরা চোখে আঙুল দাদা।

যদি কোনো খবর বিজেপির পছন্দ না হয়, সঙ্গে সঙ্গে লেখা হবে দিদির দালাল।
যদি তৃণমূলের পছন্দ না হয়, তখনই আমরা শত্রু।
প্রতিটি ঘটনারই আলাদা প্রেক্ষিত।
ফলে অপছন্দ হলেই বিশেষণ। যুক্তি হারালেই সারদা। এসব পণ্ডিতি দেখে হাসি পায়।

বিশ্ব বাংলা সংবাদ এখন হু হু করে বাড়ছে কেন?
পাঠকপাঠিকারা বোকা নন। সচেতন।
কারণ এখানে স্পষ্ট নীতি সব ধরণের সব খবর যাবে। কোনো দলের কোনো বক্তব্য বাদ যাবে না। তথাকথিত কোনো বড় কাগজ বা চ্যানেলেও এই নীতি পাবেন না। এই পোর্টাল খুলে দেখুন, এর থেকে বেশি সব দলের সব ধরণের খবর আর কোনো সংবাদমাধ্যমে নেই। সেই কারণেই পাঠকমহলে আস্থা অর্জন করছে বিশ্ব বাংলা সংবাদ।

আর রইল আমাকে গালমন্দের প্রশ্ন।
বিশ্বাস করুন, যে কজন এই কাজটি করেন, তাঁদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ, অনুপ্রাণিত।
তাঁরা এই বিশ্ব বাংলা সংবাদ না পড়ে থাকতে পারেন না। তার উপর যাই পড়েন, তার পিছনে আমার মুখটি দেখতে পান। অন্য সাংবাদিকরাও যে লিখছেন এবং যথেষ্ট দাপটের সঙ্গে খবর করছেন; এটা তাঁদের মানসিক গঠনেই নেই।
জীবনের এত ওঠাপড়ার পর এক সাংবাদিক হিসেবে এটা আমার বিরাট পাওনা।
যঁরা লেখা পছন্দ করেন, তাঁদের ধন্যবাদ।
আর যাঁরা অপছন্দ হলেই আমার মুখটি দেখেন; খবর যিনিই লিখুন, তাঁরা ভাবেন আমার লেখা এবং আমাকে গাল দেন, তাঁদেরও ধন্যবাদ। এক সাংবাদিকের কাছে এটা বিরাট পাওনা যে নিন্দুক সমালোচকরাও তাঁকে ছাড়া ভাবতে পারেন না। শয়নে স্বপনে জাগরণে একটা মুখই দেখেন তাঁরা।

এই বিষয়ে একটি চমৎকার তুলনা টানার জন্যে রয়েছে সুকুমার রায়ের ‘ পাগলা দাশু’র মত স্কুলভিত্তিক চিরনতুন গল্পগুলির সংকলনে ‘ নতুন পণ্ডিত’ গল্পটি।
নতুন পণ্ডিত কেন হরিপ্রসন্নর উপর রেগেছিলেন এবং হেডমাস্টার রামবাবুর পিছন থেকে স্রেফ কোট দেখে হরিপ্রসন্ন ভেবে বেদম মেরেছিলেন; আর তারপর নতুন পণ্ডিতের কী হয়েছিল, ভাবলেই এখনও মনে মনে হাসিতে ফেটে পড়ি।

এখন এই বয়সে, এই নতুন পণ্ডিতদের কান্ড দেখে সেই হাসিটাই হেসে যাচ্ছি।

 

Previous articleজুনিয়র হত্যা: মোহনবাগানকর্তার আত্মীয়াকে আজ ফের তলব সিবিআইর
Next articleতারাপীঠের মা তারা মন্দিরের গর্ভগৃহে ঢোকা নিষিদ্ধ হচ্ছে, মন্দির খুলবে ১৫ জুন