প্রতিদিন উঠে আসছে পশু নির্যাতনের ঘটনা । পশুদের ওপর মানুষের অমানবিক অত্যাচার। এই ঘটনার মাঝে অত্যাচারী মানুষগুলোকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে শিক্ষা দিল বীরভূমের দুবরাজপুরের ঘটনা ।
বন্ধ দোকানে আটকে পড়া সারমেয়কে শাটার এর নিচ দিয়ে খাবার কখনও বা পাইপ দিয়ে জল দিয়ে বাঁচিয়ে রাখলেন রাজেশ হাজরা নামে এক যুবক। পরে জানাজানি হতে উদ্ধার করা হয় সারমেয়টিকে । বীরভূমের দুবরাজপুরের এই ঘটনা যেন নৃশংসতার মধ্যে নতুন করে নজির গড়ল মানবতার।
কী ভাবে উদ্ধার করা হল সারমেয়টিকে ?
লক ডাউনের প্রথমদিন থেকে স্থানীয় দোকানের মধ্যে আটকে ছিল সারমেয়টি । জানাজানি হতেই তালা ভেঙে বের করা হল তাকে । তবে এই ৭২ দিনের কোনওদিন তাকে না খেয়ে থাকতে হয়নি । প্রতিবেশী যুবকরা প্রতিদিন দোকানের ভেতর হাত ভরে কখনও ভাত , আবার কখনো পাইপের মাধ্যমে জল পৌঁছে দিয়েছে ।
বীরভূমের দুবরাজপুরের পোদ্মারবাধ এলাকায় সুমন দাঁ-র স্টেশনারি দোকান । লকডাউনের সময় থেকে দোকান বন্ধ । আর সেই সময় সপরিবারে ঝাড়খন্ডে আত্মীয় বাড়িতে গিয়ে আটকে পড়েন মালিক । এখনও তাঁরা সেখানেই আটকে । স্থানীয়রা জানিয়েছেন, দোকান বন্ধ করার সময় দোকানের মালিকের নজর এড়িয়ে যায় , দোকানের ভেতরেই বসেছিল এক সারমেয় । ওই অবস্থায় বন্ধ দোকানে দীর্ঘদিন আটকেছিল সে । এরপর স্থানীয় যুবক রাজেশ তালাবন্ধ দোকান থেকে কুকুরের কান্নার আওয়াজ পান । তারপর থেকে কুকুরটিকে সাধ্যমত ফাঁক দিয়েই খাওয়ানো হয়েছে খাবার , কখনও পাইপের সাহায্যে পানীয় জল দেওয়া হয়েছে । ঝামেলা বাড়তে পারে ভেবে তিনি ভয়ে কাউকে বলেননি।
এরপর ঘটনার খবর জানাজানি হতেই মঙ্গলবার খবর যায় পুলিশ এবং পুরসভার কাছে । দুবরাজপুর পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান পীযূষ পান্ডে আসেন ঘটনাস্থলে । আসে দুবরাজপুর থানার পুলিশ । ততক্ষণে প্রচুর মানুষ জড় হয়ে যায় ৷ সবার উপস্থিতিতেই ভাঙ্গা হয় দোকানের তালা এবং তারপর দীর্ঘদিন পর বেরিয়ে আসে ওই পথ কুকুরটি । কুকুরটি বেরিয়ে আসতেই খুশির হওয়া এলাকাবাসীর মধ্যে। এদিন কেউ তাকে খাওয়ালেন বিস্কুট , অনেকে মাথায় গলায় হাত বুলিয়ে আদর করলেন । তবে সুস্থই রয়েছে সে । পথ কুকুরটিকে এভাবে নিঃশব্দে যত্ন করায় সবাই বাহবা দিয়েছে রাজেশ হাজরা নামে ওই যুববকে।