নোবেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে প্রাথমিকভাবে সবচেয়ে কার্যকরী হাত ধোয়া। নির্দিষ্ট সময় অন্তর সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে। একইসঙ্গে ধুতে হবে মুখ, পা। বাইরে থেকে বাড়ি ফিরলে বাইরে জামাকাপড় ধুয়ে ফেলতে হবে। অর্থাৎ পর্যাপ্ত জলের প্রয়োজন। আর এই প্রয়োজন মেটাতে গিয়ে জল অপচয় হচ্ছে যথেষ্ট। অন্তত এমনটাই ধরা পড়েছে সমীক্ষায়। আর তার ফলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে মহানগরীর ভূগর্ভস্থ জলের স্তর নেমে যাওয়ার। গত পাঁচ দশক ধরেই কলকাতার ভূগর্ভস্থ জলস্তর ৭-১১ মিটার নেমেছে বলে ‘সেন্ট্রাল গ্রাউন্ড ওয়াটার বোর্ড’-এর সমীক্ষায় ধরা।কোভিড-19 পরিস্থিতিতে কলকাতা ও আশপাশের জেলায় কত বাড়তি জল খরচ হচ্ছে, তা নিয়ে সমীক্ষা চালায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ওয়াটার রিসোর্স ইঞ্জিনিয়ারিং’ বিভাগের করা এই সমীক্ষায় ধরা পড়েছে, টানা ৭২ ঘণ্টা পাম্প চালালে, ওই সংশ্লিষ্ট এলাকায় সাড়ে তিন মিটার জলস্তর নেমে যায়। সেই জলস্তর আগের অবস্থায় ফিরতে বেশ কিছুটা সময় লাগে। অধ্যাপক পঙ্কজকুমার রায় জানান, জলের ব্যবহার বাড়লেও সরবরাহের মূল উৎস একই ভূপৃষ্ঠ ও ভূগর্ভস্থ জল। এখন জলের চাহিদা মেটাতে কোথাও ভূপৃষ্ঠের জল বেশি নেওয়া হচ্ছে, আবার কোথাও ভূগর্ভস্থ জল বেশি পরিমাণে তোলা হচ্ছে। বিশেষ করে বড়-বড় আবাসনে জল খরচ বেশি হচ্ছে। ফলে কলকাতার যে সমস্ত জায়গায় জলস্তর নীচু ছিল, সেখানে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। তাঁর মতে, সংক্রমণ রুখতে যেন জলের অপচয় না হয়, সে দিকেও নজর দেওয়া দরকার। তবে, আইআইটি, রুরকির ‘ডিপার্টমেন্ট অব ওয়াটার রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট’-এর অধ্যাপক এস কে শুক্লার মতে, এলাকাভিত্তিক জলস্তর কতটা নেমেছে, তার সম্পূর্ণ চিত্র স্পষ্ট হবে বর্ষার পরে। কারণ, বর্ষাকালে বৃষ্টির জল ভূগর্ভে প্রবেশ করে জলস্তর বাড়িয়ে দেয়।

তবে গবেষকদের মতে, লকডাউনে শিল্প বা কৃষিকাজ বন্ধ থাকায় পরিবারে বেশি জল খরচ হলেও জলস্তর আশঙ্কাজনক ভাবে নামেনি।
