সেদিন রাতের প্রকৃত ঘটনা প্রকাশ্যে আনলেন চিকিৎসাধীন এক জওয়ান

লাদাখ সীমান্তে চিনা ফৌজের হামলায় শহীদ হয়েছেন প্রায় ২০ জন ভারতীয় জওয়ান। জানা গিয়েছে, কোনও গোলাগুলি নয় পাথর ছোড়াকে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রপাত । কিন্তু শুধুমাত্র পাথর ছোড়ার ঘটনা এতদূর গড়াতে পারে তা বোধহয় কেউ ভাবেননি। সেই রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম থেকে ফিরে এসে সেদিন রাতের ঘটনা হুবহু তুলে ধরেছেন এক ভারতীয় সেনা।
লেহ-এর সেনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই সেনা জওয়ান জানিয়েছেন,
গত সোমবার রাতে লাদাখের গলওয়ান উপত্যকায় ভারত ও চিন দুই দেশের সেনার মধ্যে হাতাহাতি হয়। ২০ জন শহীদের মধ্যে ছিলেন কর্নেল সন্তোষ বাবু ।
বেঁচে ফেরা ওই সেনা জাওয়ানের কথা অনুযায়ী, রাতের অন্ধকারে ৮ ঘন্টা ধরে পাথর ও রড দিয়ে আক্রমণকরে চিনা সেনারা। লাগাতার মারা হয় কাঁটাতার লাগানো ব্যাট দিয়ে। শুধুমাত্র আক্রমণের ফলে নয়, অনেকে মারা গিয়েছেন প্রচন্ড ঠান্ডাতেও।
তিনি জানিয়েছেন, ভারতের নিরস্ত্র জওয়ানদের ওপর অতর্কিতে হামলায় প্রাণ বাঁচাতে অনেকে গলওয়ান নদীতে ঝাঁপ দেন। সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী এখনও অন্তত ২৪ জন ভারতীয় সেনা জওয়ান মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন আর চিকিৎসাধীন ১১০ জন। তবে এই ঘটনার জন্য পিপিল লিবারেশন আর্মি দায় চাপিয়েছে ১৬ নম্বর বিহার রেজিমেন্টের উপর।
সেনাবাহিনী সূত্রে জানা গিয়েছে, কর্নেল সন্তোষ বাবু সেনা কমানোর বিষয়ে বৈঠক করেছিলেন চিনের সেনাদের সঙ্গে । সেনা সরানো নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছিল । সেই অনুযায়ী ভারত ও চিন দুপক্ষই লাদাখের বিভিন্ন অংশ থেকে সেনা সরানোর কাজ চালাচ্ছিল। কিন্তু চিন কোন কারণবশত লাদাখের গলওয়ান থেকে সেনা সরাতে রাজি হয়নি।
এই সময় বৈঠক শেষে নিয়ন্ত্রণরেখায় ভারতের দিকে থাকা চিনের তাঁবু ও নজরদারি পোস্ট ভেঙে দেওয়া হয়। এরপরই ফিরে আসে চিনা সেনারা। বড় বড় পাথর ছুঁড়তে শুরু করে ভারতীয় সেনাদের লক্ষ্য করে। আর অতর্কিতে এই হামলায় সম্পূর্ণ নিরস্ত্র অবস্থাতেই প্রাণ দিতে হয় বহু ভারতীয় সেনাকে।
তবে কেন চিনের সেনারা ৬ জুনের কোর কমান্ডের বৈঠকের সিদ্ধান্তকে লঙ্ঘন করল, কেনইবা ১৪ নম্বর পয়েন্টের কাছে তারা একটি তাঁবু রেখে দিতে চেয়েছিল তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা রয়ে গিয়েছে।

Previous articleলাদাখের সংঘর্ষের প্রভাব চন্দননগরেও! অন্ধকার আলোকশিল্পের ভবিষ্যৎ
Next articleভারতে করোনা: সুস্থ হওয়ার সংখ্যা প্রায় ২ লক্ষ