লাদাখের পূর্বাঞ্চলে ‘আকাশ’ ক্ষেপণাস্ত্র সক্রিয় করেছে ভারতীয় সেনা

পূর্ব লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বা LAC-তে চিনের চোখে-চোখ রেখেই দাঁড়াতে চলেছে ভারত৷ লাদাখ সীমান্তের সুরক্ষায় দশ হাজার কোটির ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করছে ভারতীয় সেনা৷

সূত্রের খবর, আকাশপথে চিনের সম্ভাব্য হামলা প্রতিহত করতে ভারতীয় সেনা লাদাখের পূর্বাঞ্চলে ‘আকাশ’ ক্ষেপণাস্ত্রকে সক্রিয় করেছে৷

‘SAM- সার্ফেস টু এয়ার মিসাইল’ বা ভূমি থেকে আকাশমুখী ভারতের এই ক্ষেপণাস্ত্র সামরিক-বিশ্বে ‘আকাশ’ নামে পরিচিত৷ বিমান প্রতিরোধী এই ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিপক্ষের ফাইটার জেট, ক্রুজ মিসাইল, ব্যালিস্টিক মিসাইলকে আকাশেই পুরোপুরি ধ্বংস করতে সক্ষম এই ‘আকাশ’৷

এই লাদাখেই পাকিস্তান এবং চিন দুই দেশের সঙ্গেই সীমান্ত ভাগ করে নিয়েছে ভারত। অত্যন্ত স্পর্শকাতর সেই সীমান্ত সুরক্ষিত করতে প্রয়োজন হলে মারণ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের পথ খুলে রাখলো ভারতীয় সেনা। লাদাখের ১৫ হাজার ফুট উচ্চতার পাহাড়ি সীমান্তে এই ‘আকাশ’-ই যোগ্যতম পাহারাদার বলে মনে করা হচ্ছে।

ভারত-চিন সীমান্তের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বা LAC-এর ওপারে গত কয়েকদিন ধরেই চিনা সেনাদের সক্রিয়তা দেখার পরই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। পাক এবং চিন সীমান্তে আগে থেকেই দুটি ক্ষেপণাস্ত্র রেজিমেন্ট রয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনীর। এই রেজিমেন্টের শক্তি আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে৷ যদিও সরকারি ভাবে প্রতিরক্ষামন্ত্রক এ বিষয়ে কিছু জানায়নি।
গালওয়ান-সংঘর্ষের পর শান্তি ফেরাতে চুসুল-মলডো সীমান্তে বৈঠকে বসেছিলেন ভারতের লেফটেন্যােন্ট জেনারেল হরিন্দর সিংহ ও চিনা মেজর জেনারেল লিউ লিন। সেনা সূত্রে বলা হয়েছে, ১১ ঘণ্টার ম্যারাথন বৈঠকে পূর্ব লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর যে সব এলাকায় দু’দেশের সেনা মুখোমুখি দাঁড়িয়ে, সেখান থেকে পিছিয়ে আসার সিদ্ধান্ত হয়েছে। একইসঙ্গে সরানো হবে বাড়তি সেনা ও কামান। কিন্তু পরে চিনা বাহিনী এই সিদ্ধান্ত আমল না দিয়ে LAC- বরাবর ভারতের মাটিতেই স্থায়ী নির্মাণ ও সেনা সংখ্যা বাড়ানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছে৷ ভারতের ধারনা, চিনা সেনা প্যাংগং লেক ও ফিঙ্গার ফোর থেকে এইট এলাকায় যে ভাবে স্থায়ী বাঙ্কার নির্মাণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে, তাতে তারা সহজে ফিরে যাওয়ার জন্য LAC- অতিক্রম করে আসেনি৷ কূটনৈতিক ও সামরিকস্তরে দফায় দফায় বৈঠকেও ফিরে যাওয়ার প্রশ্নেও নীরব থাকে চিন। বরং উল্টে ভারতকে লাদাখ সীমান্ত থেকে সেনা সরানোর জন্য বৈঠকে চাপ দেওয়া হয় বলে জানা গিয়েছে৷ যদিও সঙ্গে সঙ্গেই এই প্রস্তাব উড়িয়ে ভারত পাল্টা জানিয়ে দেয়, ভবিষ্যতে গালওয়ানের মতো সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলে ভারত আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করতে বাধ্য হবে৷
সূত্রের খবর, দিনকয়েক আগে চিনা সেনার সংঘর্ষে আহত ভারতীয় জওয়ানদের দেখতে লাদাখে গিয়ে সেনাপ্রধান এম এম নরবণে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন যে,সীমান্ত পাহারায় বিন্দুমাত্র শিথিলতা দেখানো হবে না। আর তারপরই ভারতের তরফে নিরাপত্তা বৃদ্ধির কাজ শুরু হয়ে যায়৷

Previous articleদরকার হলে স্টেশনের স্টল থেকে বেডরোল, লিনেন কিনতে হবে যাত্রীদের
Next article“জাতীয় স্বার্থের জন্য ক্ষতিকারক” সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে চিঠি প্রসার ভারতীর