চৌত্রিশ বছরের হিসেব দিলাম

সোমশুভ্র চট্টোপাধ্যায়

৩৪ বছর মানে

ভুট্টা, মাইলো ছেড়ে দু’বেলা দু’মুঠো গরম ভাতের স্বাদ।

৩৪ বছর মানে
ভূমিহীন গরিব কৃষকদের হাতে জমি তুলে দেওয়া।

৩৪ বছর মানে
প্রায় ১১ লক্ষ ২৭ হাজার একর খাস এবং বেআইনী জমি উদ্ধার করে ৩০ লক্ষ গরিব মানুষের মধ‍্যে বন্টন করা।

৩৪ বছর মানে
অবৈতনিক শিক্ষা ব্যবস্থা। প্রতিটি শিশুর শিক্ষার অধিকার সুনিশ্চিত করা।

৩৪ বছর মানে
প্রতিবছর নিয়ম করে এসএসসি পরীক্ষা।

৩৪ বছর মানে
রাজারহাট, নিউটাউন, সল্টলেক এর আই টি হাবে কয়েক লক্ষ ইঞ্জিনিয়ার ছেলে মেয়ের চাকরি।

৩৪ বছর মানে
রাজ্যের শিক্ষিত ছেলে-মেয়েদের নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শেখানো।

৩৪ বছর মানে
দেশের মধ্যে ধান ও সবজি উৎপাদনে প্রথম, আলু উৎপাদনে দ্বিতীয়।

৩৪ বছর মানে
আনারস, লিচু ও আম উৎপাদনে দেশের মধ্যে প্রথম, দ্বিতীয় ও অষ্টম।

৩৪ বছর মানে
মৎস্য চাষে দেশের মধ্যে প্রথম।

৩৪ বছর মানে
বাড়ি বাড়ি বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া।

৩৪ বছর মানে
বাড়ির সামনের কাঁচা রাস্তা টা পাকা হওয়া।

৩৪ বছর মানে
ক্ষুদ্র শিল্পে দেশের মধ্যে সেরার মর্যাদা পাওয়া।

৩৪ বছর মানে
পঞ্চায়েত ব্যবস্থা, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র গড়ে তোলা।

৩৪ বছর মানে
দাঙ্গাবাজদের রাতের ঘুম কেড়ে নেওয়া।

৩৪ বছর মানে
লক্ষ্মী পূজার খিচুড়ি, ঈদের বিরিয়ানি আর বড়দিনের কেকের একই সাথে সহাবস্থান।

৩৪ বছর মানে
আলী আর আকাশের একই সাথে ফুটবল মাঠে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ফুটবল খেলা।

৩৪ বছর মানে
মহিলাদের সম্মান, শক্ত হাতে আইন শৃঙ্খলা।

৩৪ বছর মানে
পুলিশকে বলে দিয়েছি, দাঙ্গা করতে গেলে মাথাতে গুলি চালাতে।

৩৪ বছর মানে
দাঙ্গা করতে এলে মাথা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়ার স্পর্ধা।

৩৪ বছর মানে
মুচি, মেথর, ডোম, আদিবাসী সকলকে মাথা উঁচু করে সমান অধিকারে বাঁচতে শেখানো।

৩৪ বছর মানে
বুকের রক্ত দিয়ে বক্রেশ্বর,বজবজ,কোলাঘাট, সাগরদীঘি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র করা।

৩৪ বছর মানে
হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যাল।

৩৪ বছর মানে
সল্টলেক স্টেডিয়াম, কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়াম সহ প্রতি জেলায় একাধিক স্টেডিয়াম ।

৩৪ বছর মানে
নন্দন সহ প্রতি মফস্বল বা পৌরসভায় সাংস্কৃতিক মঞ্চ গড়া।

৩৪ বছর মানে
বাংলা জুড়ে ফ্লাইওভার, দ্বিতীয় হুগলী সেতু, নুতন বালি ব্রিজ, হাজার হাজার রেল বা নদী ব্রিজ, কালভার্ট সহ অসংখ্য বাইপাস, হাইওয়ে।

৩৪ বছর মানে
ইষ্ট ওয়েষ্ট মেট্রো তৈরি সম্প্রসারণের কাজ শুরু।

৩৪ বছর মানে
নতুন নতুন বাস রুট চালু।

৩৪ বছর মানে
গঙ্গার বক্ষে ফেরি সার্ভিস।

৩৪ বছর মানে
খাদ্য উৎপাদন বেড়ে গিয়ে ১৭০ লক্ষ মেট্রিকটন।

৩৪ বছর মানে
গানমেলা, যাত্রাউৎসব, নাট্য উৎসব,ছাত্রযুব উৎসব এর সূচনা।

৩৪ বছর মানে
বেকার ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, বিধবা ভাতা, বার্ধক‍্য ভাতা চালু ।

৩৪ বছর মানে
বন্ধ কল কারখানা এবং বন্ধ চা বাগান শ্রমিকদের আর্থিক অনুদান।

৩৪ বছর মানে
২০১০ সালের মধ্যে ২৫ লক্ষ পরিবহন শ্রমিককে পেনশনের আওতায় আনা এবং ২০০৯ সালের মধ্যে বাংলায় জঙ্গলমহল, উত্তরবঙ্গ সহ অন্যান্য জেলার ২ কোটি ৬২ লক্ষ গরীব মানুষ কে দুই টাকা কেজি দরে চাল দেওয়া শুরু।

৩৪ বছর মানে
হাজার হাজার প্রাইমারী স্কুল, জুনিয়র হাইস্কুল, উচ্চমাধ্যমিক স্কুল, একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ এবং প্রাইমারী, জুনিয়র এবং হাইস্কুলের পাকা কি়ংবা একাধিক নুতন বিল্ডিং তৈরি।

৩৪ বছর মানে
স্পর্ধা।

৩৪ বছর মানে
গর্ব।

৩৪ বছর মানে
এক গৌরবজ্জ্বল ইতিহাস।

গর্বের ৩৪।

Previous articleবিক্রি হবে চে গেভেরার জন্মভিটে, বিজ্ঞপ্তি জারি মালিকের
Next article১২ অগাস্টের আগে কি মেট্রো চলার সম্ভাবনাই নেই!