শুরুটা খোলাখুলি করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। করোনা বিশ্ব মহামারিতে লক্ষ লক্ষ মানুষের মৃত্যু ও দুর্দশার জন্য প্রকাশ্যেই চিনের ভূমিকাকে দায়ী করে তদন্ত চেয়েছিলেন। করোনাভাইরাসকে কখনও চায়না ভাইরাস আবার কখনও কুংফু ফ্লু বলে কটাক্ষ করেন ট্রাম্প। বলেন, চিনের জন্যই আজ বিপদে পড়েছে পৃথিবীর প্রায় ১৯০ টি দেশ। রোজ এত মানুষ মারা যাচ্ছেন। অর্থনীতির প্রচণ্ড ক্ষতি হচ্ছে। এই পরিস্থিতির জন্য যে দেশ দায়ী তার বিচার হওয়া উচিত। চিনের বিরুদ্ধে আমেরিকার করোনা তদন্তের দাবিকে সমর্থন জানিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বহু দেশ। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের স্বার্থে ভারত এতদিন এই দাবি নিয়ে উচ্চবাচ্য না করলেও গালওয়ান কাণ্ডের পর বদলেছে পরিস্থিতি। এখন ভারতও দাবি করছে, করোনা বিশ্ব মহামারির কারণ ও উৎস নিয়ে তদন্ত হোক। প্রকৃত ঘটনা ও তথ্য সামনে আসা দরকার। বলাই বাহুল্য যে ভারতের এই করোনা-দাবির লক্ষ্য শি জিনপিং-এর চিনই।
ভারতের পরিবর্তিত মনোভাব বুঝতে বাকি নেই চিনেরও। এমনিতেই করোনা নিয়ে চিনের ভূমিকাকে সন্দেহের চোখে দেখছে বিশ্বের অধিকাংশ দেশ। এজন্য ভাবমূর্তি নিয়ে যথেষ্ট চাপে চিন। বাইরের কোনও সংস্থাকে করোনা তদন্তের জন্য উহানে ঢুকতে দেওয়ার দাবি ইতিমধ্যেই খারিজ করেছে বেজিং। তাতে চিনের ভূমিকা নিয়ে নানা মহলের সন্দেহ আরও তীব্র হয়েছে। গত ২০ মে বিশ্ব স্বাস্থ্য সম্মেলনে করোনা নিয়ে চিনের বিরুদ্ধে প্রস্তাব আনে অস্ট্রেলিয়া। সেখানে করোনার উৎস নিয়ে তদন্তের দাবি চাওয়া হয়। এই প্রস্তাবকে সমর্থন করেছে ভারত সহ ১২২ টি দেশ। এবছর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হু-র এক্সিকিউটিভ বোর্ডে প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন ভারতের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. হর্ষবর্ধন । ফলে চিনের বিরুদ্ধে করোনা তদন্তের জন্য হু-কে চাপ দেওয়ার সুযোগ এসেছে ভারতের সামনে। লাদাখ সীমান্তে সংঘর্ষের পর বিশ্ব মহামারি ইস্যুতে চিনকে বেইজ্জত করার এই সুযোগ ছাড়তে চায় না ভারত, তার ইঙ্গিত স্পষ্ট।