মোদি-অমিত জুটির বিকল্প না দেখালে বিরোধীরা অথৈ জলেই

অপরাজিতা সেন

করোনা থেকে চিন।

মধ্যপ্রদেশ থেকে তেলের দাম।
অর্থনীতি থেকে বিদেশনীতি।

আজকের এই সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে প্রতি ইস্যুতেই পক্ষে এবং বিপক্ষে হইহই। মূলত টিভি আর মুঠোফোনেই প্রচার।

এখানে বিজেপি যেমন তাদের কথা বলছে এবং কেন্দ্রের বক্তব্য জানাচ্ছে, তেমনই তার উল্টোদিকেও বহু যুক্তি বা কথা থাকছে। মানুষের সমস্যা নিয়ে প্রতিবাদের প্রয়োজনও থাকছে। একাধিক বিরোধী দল সরব হচ্ছে।

কিন্তু একটা স্পষ্ট বিষয় হল, নরেন্দ্র মোদি আর অমিত শাহ জুটির যোগ্য পাল্টা মুখ প্রতিষ্ঠিত না হলে বিরোধীদের এই টুকরো টুকরো প্রতিবাদ অথৈ জলে যাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রীর সব কাজ সব মানুষ সমর্থন করেন না। কিন্তু বিকল্প মুখ কই? ভুল থাকলেও একটা শক্তিশালী নেতৃত্ব দেশে থাক, এটা মানুষ চান।

বিজেপির মোকাবিলায় কংগ্রেস ব্যর্থ। রাহুল গান্ধী আমেথিতে হেরেছেন। দলের সভাপতিত্ব মায়ের থেকে ছেলে আর ছেলের থেকে মায়ের হাতে যাওয়ার ছেলেমানুষি চলছে।

সামগ্রিকভাবে বিরোধী কোনো জোট নেই। যে কারণে 2019সালে মোদির জয়জয়কার। মানুষ হযবরল অস্থির জোট পছন্দ করেন না। সেই অ্যাডভান্টেজ এখনও পাচ্ছে বিজেপি।

ফলে চারপাশে নানা সমস্যা থাকলেও দিল্লির ক্ষমতার প্রশ্নে মোদি-অমিত শাহ এখনও নিশ্চিন্ত। রাজ্যগুলির সমীকরণ আলাদা। যেমন এই বিকল্পহীনতার কারণে বাংলার বিধানসভায় আবার এগিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখানে বিজেপির রণকৌশল ভুল। তৃণমূল আবার বড়ভাবে জিতবে। বহু রাজ্যেই বিজেপি এককভাবে নিশ্চিন্তে নেই।

কিন্তু দিল্লির সরকারের প্রশ্নে দেশের এই কঠিন সময়ে যে জাতীয় স্তরের শক্তিশালী বিকল্প দরকার ছিল, তা পুরোপুরি অনুপস্থিত। রাহুল ব্যর্থ হয়েই চলেছেন। মমতা বা কাউকে সামনে রেখে যে মানুষের চোখে ঐক্যবদ্ধ স্থায়ী মঞ্চ হবে, তার কোনো লক্ষণ নেই। ফলে মোদি এবং অমিত শাহ জুটিকেই দৃশ্যত শক্তিশালী লাগছে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে যতক্ষণ না মোদি-শাহের যথাযথ বিকল্প জাতীয় স্তরে হাজির করা যাচ্ছে, ততক্ষণ কেন্দ্রের নীতির বিরুদ্ধে কোনো আন্দোলন সেভাবে দানা পাকবে না। টিভি আর ফেসবুক দিয়ে বিচ্ছিন্ন কিছু এলাকাতেই থেকে যাবে। তাছাড়া যারা বিজেপির বিরোধিতা করছে, তারা যে কোনো ভোটে যদি আসন সমঝোতা না করে আলাদা লড়ে, তাহলেও বিজেপির লাভ। মানুষকে বোঝাতে সুবিধে হয়। যে বিরোধী যেখানে শক্তিশালী, এই নীতিতে রাজ্য রাজনীতি চলতে পারে, দেশের রাজনীতিতে এই ভঙ্গুর বিকল্প দেখে মানুষ বিরক্ত।
তাই এই মুহূর্তে যা অবস্থা, মোদি- শাহ জুটির যথাযথ বিকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন না করলে জাতীয় রাজনীতিতে বিরোধীদের অথৈ জলেই থাকতে হবে।

 

Previous articleআজ পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মাছের দাম, নাভিশ্বাস ক্রেতাদের
Next articleউত্তরাখণ্ডের নৈনিতালে হচ্ছে বিশ্বভারতীর দ্বিতীয় ক্যাম্পাস