ফাঁকা ফ্ল্যাটে টলি অভিনেত্রীকে শারীরিক নির্যাতনের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর মোড়

ফাঁকা ফ্ল্যাটে শারীরিক নির্যাতন, ধর্ষণ। এবার এক টলিউড অভিনেত্রীর এমন অভিযোগ ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। অভিযোগ তারই প্রেমিকের বিরুদ্ধে।

বছর ২৬-এর ওই টলিউড অভিনেত্রীর দাবি, গত ৫ জুলাই গল্ফগ্রিনে তাঁর ফ্ল্যাটে যান অভিযুক্ত যুবক। সেখানে জোর করে তাঁকে শারীরিক সম্পর্কে বাধ্য করা হয়। অভিনেত্রী রাজি না হলে তাঁকে ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ যুবকের বিরুদ্ধে। ওই যুবকের সঙ্গে অবশ্য প্রেমের সম্পর্ক ছিল অভিনেত্রীর।

অভিনেত্রীর আরও অভিযোগ, তাঁর অশ্লীল ছবি মোবাইলে ভিডিও করে রাখা আছে বলে জানায় তাঁর প্রেমিক। তাই শারীরিক সম্পর্কে না গেলে বা কাউকে বিষয়টি জানালে সেই ভিডিও ভাইরাল করে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছে বছর ৩২-এর অভিযুক্ত যুবকটি।

সেই ঘটনার পর থেকে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন অভিনেত্রী। তিনি জানান, “অপমান ও নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে একটা আত্মহত্যা করার কথাও ভাবি।” যদিও শেষ পর্যন্ত সেই রাস্তায় হাঁটেন নি অভিনেত্রী। তিনি ওই যুবকের বিরুদ্ধে যাদবপুর থানায় ব্ল্যাকমেল ও ধর্ষণের অভিযোগ করেন। অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্তে নামে পুলিশ।

যেহেতু নির্যাতিতার সঙ্গে অভিযুক্ত যুবকের প্রেমের সম্পর্ক ছিল, তাই তদন্তে নেমে শুরুতেই পুলিশ ঘটনার সূত্রপাত খোঁজার চেষ্টা করে। এখন থেকে প্রায় ১১ বছর আগে ২০০৯ সালে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে গিয়ে মধ্যমগ্রামের ব্যবসায়ী যুূবকের সঙ্গে পরিচয় হয় এই টলি অভিনেত্রীর। এরপর দীর্ঘদিন তাঁদের আর কোনও যোগাযোগ ছিল না। নির্যাতিতা অভিনেত্রী নদিয়ার কল্যাণীর বাসিন্দা হলেও কর্মসূত্রে তিনি গল্ফগ্রিনের একটি ফ্ল্যাটে থাকেন। এরপর ২০১৭ সালে তাঁদের ফের দেখা হয়, তখন থেকেই নতুন করে ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে। সেবছরই অভিনেত্রীকে প্রেমের প্রস্তাব দেন পেশায় ব্যবসায়ী ওই যুবক।

প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার পর থেকেই অভিনেত্রীর কাছে ওই যুবক ব্যবসার নাম করে টাকা চাইতে শুরু করে। টাকা না পেলে অভিনেত্রীকে তার প্রেমিক মারধর করতো বলেও অভিযোগ।এরপর তাঁদের সম্পর্ক ভেঙে যায়। গত এপ্রিল মাসে ফের ওই যুবক ফোন করে অভিনেত্রীর কাছে ক্ষমা চান। আবারও সম্পর্ক নতুন করে শুরু হয়। কিন্তু, ফের সম্পর্কের সুযোগ নিয়ে ৩০ হাজার টাকা চেয়েছিলেন অভিনেত্রীর কাছে।

গত ৫ জুলাইয়ের ঘটনার দিন টাকা নিতে অভিনেত্রীর ফাঁকা ফ্ল্যাটে পৌঁছন যুবক। এরপর অভিনেত্রীকে জোর করে শারীরিক নির্যাতন করে ওই যুবক। সেই অশ্লীল ভিডিও মোবাইলে ক্যামেরা বন্দিও করে রাখে ওই যুবক। যাতে পরবর্তীকালে ব্ল্যাকমেল করা যায়।

অভিনেত্রী জানিয়েছেন, প্রথমে বেশ কয়েকদিন এতটাই মানসিক বিপর্যস্ত ছিলেন যে আত্মহত্যার কথা পর্যন্ত ভেবেছিলেন। এরপর তাঁর এক পরিচিতের মাধ্যমে মানবাধিকার কর্মীদের কাছে পুরো বিষয়টি খুলে বলেন তিনি।

তাঁরাই অভিনেত্রীর পাশে দাঁড়িয়ে তাঁর মনোবল বাড়িয়ে আইনের দ্বারস্থ হওয়ার কথা বলেন। এরপর তাদের পরামর্শে যাদবপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। চিত্তরঞ্জন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাঁর শারীরিক পরীক্ষাও হয় বলে জানা গিয়েছে।

Previous articleছাত্র-ছাত্রীদের পাশে থাকার বার্তা রাজ্যপালের
Next articleনেপথ্যে ত্রাতা মমতা? ইস্টবেঙ্গলের পাশে হর্ষ নেওটিয়া?