সংখ্যালঘু ভোটের ৫% টার্গেট করে আসরে এবার RSS-এর ‘মুসলিম রাষ্ট্রীয় মঞ্চ’

রাজ্যের মুসলিম ভোটের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ তৃণমূলের সঙ্গে৷ কিছুটা আছে কংগ্রেস ও বামেদের হাতেও৷ তুলনায় কার্যত রিক্তহস্ত বিজেপি৷ সাম্প্রতিক অতীতের কোনও নির্বাচনেই এ রাজ্যের সংখ্যালঘু মুসলিম ভোটব্যাঙ্কে প্রভাব ফেলতে পারেনি বঙ্গ-বিজেপি৷ তেমন কোনও জনপ্রিয় বা বড় মুসলিম নামও রাজ্য বিজেপির প্রথম সারিতে নেই৷ বাংলায় মুসলিম জনসংখ্যা মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩০ শতাংশ৷ সংখ্যালঘু মুসলিম ভোটব্যাঙ্কে দাগ কাটতে না পারলে একুশের বিধানসভা নির্বাচনে কোনও অঙ্কেই ১০০-র বেশি আসনে লড়াইয়ে থাকতে পারবে না গেরুয়া শিবির৷ ফলে দিল্লি যতই অক্সিজেন সরবরাহের চেষ্টা করুক, বঙ্গ-বিজেপির সাধ্য নেই সেই অক্সিজেন গ্রহণ করার৷

একুশের নির্বাচনে অঘটন ঘটাতে ছুৎমার্গ বিসর্জন দিয়ে তাই এবার আসরে নামছে সরাসরি সঙ্ঘ-পরিবার৷ মুসলিম ভোটই যে রাজ্যের পটপরিবর্তনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেবে, এটা বোঝার পরেই তৃণমূল এবং অন্যান্য দলের ভাঁড়ার থেকে মুসলিম ভোট টেনে আনার লক্ষ্যে সলতে পাকাচ্ছে সঙ্ঘ পরিবারের নিজস্ব সংগঠন, ‘মুসলিম রাষ্ট্রীয় মঞ্চ’৷ সঙ্ঘের নিজস্ব সংগঠনের মাধ্যমে বাংলাজুড়ে সমীক্ষা চালিয়ে মুসলিম রাষ্ট্রীয় মঞ্চ ইতিমধ্যেই এক নীল-নকশাও করেছে৷ সেই ছক অনুসারে রাজ্যে প্রচারে নামতে চলেছে আরএসএস ঘনিষ্ঠ এই সংগঠন৷ মুসলিম রাষ্ট্রীয় মঞ্চের বক্তব্য, ২০২১-এর নির্বাচনের আগেই রাজ্যের মুসলিমদের প্রকৃত অবস্থার কথা নানা চমকের মাধ্যমে তুলে ধরা হবে৷ তৃণমূলের তথাকথিত মুসলিম-প্রেমের প্রচার আর রাজ্যের মুসলিমদের প্রকৃত অবস্থার মধ্যে ফারাক কতখানি, সেটাই প্রচারের মূল ফোকাস করা হচ্ছে৷ ইতিমধ্যেই মুসলিম রাষ্ট্রীয় মঞ্চের জাতীয় নেতৃত্বের সঙ্গে দু’দফায় বৈঠক হয়েছে রাজ্যের পদ্ম-শিবিরের৷ এই মুসলিম রাষ্ট্রীয় মঞ্চ উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনে বড় ভূমিকা পালন করেছিলো৷ সঙ্ঘ- পরিবারও এ রাজ্যের মুসলিমদের মধ্যে প্রচারের সুর বেঁধে দেওয়ার হোমওয়ার্ক করছে৷ রাজ্যের মুসলিম-প্রধান জেলাগুলিতে মুসলিম রাষ্ট্রীয় মঞ্চ মূলত প্চার করবে, রাজ্যের বিভিন্ন জেলে প্রায় ৩০ হাজার মুসলিম বন্দি ও বিচারাধীন বন্দি রয়েছে। এদের প্রত্যেককেই খুন ও অন্যান্য অসামাজিক কাজে ব্যবহার করেছে শাসক তৃণমূল-সহ কংগ্রেস ও বামেরা৷ দলে দলে মুসলিমরাই জেল আছেন অথবা আদালতে হাজিরা দিয়ে চলেছেন৷ ইচ্ছাকৃতভাবে মুসলিমদের একটা বিরাট অংশের মধ্যে আলো ঢুকতে দেওয়া হচ্ছেনা৷ সে কারনেই কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রেও মুসলিম যুবকরা পিছিয়ে পড়েছে৷ পরিকল্পিতভাবে সাময়িক লোভ দেখিয়ে এদের অপরাধমূলক কাজে ব্যবহার করছে তৃণমূল৷ প্রচারে সাচার কমিটির রিপোর্টকে সামনে আনা হচ্ছে৷ সাচার কমিটির রিপোর্টকে প্রতিটি ভোটের আগে তৃণমূল ব্যবহার করে, অথচ আজ পর্যন্ত কোনও সুপারিশই তৃণমূল সরকার মানেনি৷ এদিকে বিজেপি মাইনরিটি সলের নেতা কাশেম আলি অভিযোগ করেছেন, তৃণমূল শুধুই বর্গী-বাহিনী হিসাবে রাজ্যের
মুসলিমদের ব্যবহার করে চলেছে৷ অপকর্ম করতেই শুধু ডাক পড়ে মুসলিমদের ৷ কাজ ফুরিয়ে গেলে জেলা বা রাজ্য তৃণমূল নেতারা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে আর চিনতে পারেনা৷ সঙ্ঘ পরিবারের টার্গেট, যে কোনওভাবেই হোক রাজ্যের সংখ্যালঘু মুসলিম ভোটের ৪-৫ শতাংশ বিজেপির পতাকার তলায় সামিল করতে পারলেই তৃণমূলের ভিত নড়ে যাবে৷

Previous articleঅযোধ্যায় রামমন্দিরের ভূমিপুজোর জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে সময় চায় ট্রাস্ট
Next articleরেকর্ড ভেঙে রাজ্যে একদিনে করোনা আক্রান্ত ২,১৯৮, সংক্রমণ ছাড়ালো ৪০ হাজার