মমতা-স্পর্শ: জীবনে আমূল বদল জঙ্গলমহলের ২ পড়ুয়ার

সত্যিই যদি সঠিক সময় হাত ধরে কেউ কঠিন রাস্তাটা পার করে দেয় তাহলে জীবনটা বদলে যেতে পারে অন্যভাবে। সেটা বুঝেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই কারণেই এককালে মাওবাদী অধ্যুষিত অঞ্চল বলে পরিচিত জঙ্গলমহলের বেলপাহাড়ি ও গিধনি থেকে দুই স্কুল পড়ুয়াকে নিয়ে এসে মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশেই ভর্তি করা হয়েছিল সাউথ পয়েন্ট স্কুলে। কলকাতার নামী ইংরেজি মাধ্যম স্কুল। এই স্কুলেরই পড়ুয়া আজ নোবেলজয়ী অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু রোহিত মান্ডি, মহাদেব বাগাল নয়, তাদের সঙ্গেই এসেছিল আরও ন’জন পড়ুয়া। কলকাতার বিভিন্ন স্কুলে তাদের ভর্তি করা হয়। দলে ছিল চার ছাত্রীও।

কলকাতার ‘এলিট ক্লাস’ পরিবারের ছেলেমেয়েরা পড়ে সাউথ পয়েন্টে। প্রথম প্রথম সেখানেই এসে নিজেদের বেমানান বলে মনে হতো রোহিতের। তাদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছিল সল্টলেকের তপশিলি জাতি-উপজাতি সরকারি হস্টেলে। ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পড়তে ভাষা সমস্যা হতো সাংঘাতিক। সে কথা জানতে পেরে সরকারের তরফ থেকেই তাদেরকে গৃহশিক্ষকের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। স্কুলের শিক্ষকরা তাঁদের সাহায্য করেন। সবসময় নজর থাকত যাতে স্কুলে তাদের বুলিং-এর শিকার না হতে হয়। এবছর সিবিএসই-তে অত্যন্ত ভালো রেজাল্ট করেছে সাউথ পয়েন্ট। তাদের টপার পেয়েছে ৯৯.৪ শতাংশ নম্বর। সেই টপারের পাশাপাশি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা গর্বিত মহাদেব আর রোহিতকে নিয়ে। তাদের একজন পেয়েছে ৮৩.৬ শতাংশ আর একজন পেয়েছে ৭৪% নম্বর। তাদের এই সাফল্যে গর্বিত স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। বিজ্ঞান বিভাগে পড়ার ইচ্ছে ছিল দুজনেরই। কিন্তু স্কুলের পরামর্শে তারা বাণিজ্য বিভাগে ভর্তি হয়েছে। ভবিষ্যতে আইএএস হতে চায় মহাদেব। রোহিতও চায় কোন সর্বভারতীয় স্তরে কাজ করার। সেদিন যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাদের ওই জায়গা থেকে তুলে না আনতেন, তাহলে এই রঙিন স্বপ্ন বোনা সম্ভবত না স্পষ্ট জানাল মহাদেব এবং রোহিত। আর তাদের উদাহরণ স্বপ্ন দেখাচ্ছে জঙ্গলমহলের আরও পড়ুয়াদের।

Previous articleরাজস্থানে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ভোট দিতে দলীয় বিধায়কদের হুইপ জারি মায়াবতীর
Next articleলাগাতার সংঘর্ষে সুদানে মৃত ৬০