অবহেলায় চুঁচুড়ায় রবি-স্মৃতিবিজড়িত বাড়ি, সারাতে চান বর্তমান বাসিন্দারা

এই বাড়িতেই ছেলের প্রতিভার বিকাশ দেখে খুশি হয়ে বাবা পাঁচশত টাকা দিয়েছিল ছেলের হাতে। তার কাছে এটা ছিল নোবেল-এর থেকেও বড় উপহার।যে বাড়িতে সকলের সঙ্গে দিনের পর দিন কাটিয়েছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সেই বাড়ি আজ উপেক্ষিত। তাঁর ব্যবহৃত আরাম কেদারা ব্যবহার করছে অন্য কেউ। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাগান বাড়ি রয়ে গিয়েছে অন্ধকারে সকলের নজর এড়িয়ে। তবে, বাইশে শ্রাবণে সেখানেই বেজে উঠল রবীন্দ্রনাথের গান, পালন হল তার মৃত্যু বার্ষিকী। সরকারিভাবে নয়, স্থানীয় মানুষের উদ্যোগে। উদ্যোক্তাদের পক্ষে সপ্তর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ১৮৭৯ সালে মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রকৃতির কোলে জীবন কাটাতে গঙ্গাপাড়ে চুঁচুড়ার বড়বাজার এলাকায় এই দত্ত লজে ভাড়াটিয়া হিসাবে থাকতে শুরু করেন। সেই সুবাদেই দেবেন্দ্রনাথের পুত্র রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পদধুলি পরে এই বাড়িতে। গঙ্গাপথে বহুবার এই বাড়িতে এসেছিলেন বিশ্বকবি। এই বাড়িতেই তাঁর পিতার হাত থেকে পুরস্কার স্বরূপ ৫০০টাকা গ্রহণ করেন। কালক্রমে সেসময়ের দত্তরা এই বাড়ি অন্যের হাতে বিক্রি করে দেন। তবে সেই বাড়ি আজও বর্তমান চুঁচুড়ায়। বছর কয়েক আগে রবি ঠাকুরের সার্ধশতবর্ষে বাড়ির সামনের রাস্তায় পুরসভার পক্ষ থেকে একটি ফলক বসেছিল বটে, কিন্তু মালিকানাধীন থাকায় আজও সরকারি উদ্যোগে দত্ত লজের রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়নি। কালের নিয়মে তাই বাড়িটির আনাচে-কানাচে ফাটল ধরেছে। বিগত ৩বছর ধরে এই বাড়িতে ভাড়া রয়েছেন চুঁচুড়ার আর এক দত্ত পরিবার। সেই পরিবারের পক্ষে সুলেখা দত্ত বলেন, “রবীন্দ্রনাথ যে বাড়িতে ছিলেন সেখানেই থাকার সৌভাগ্য আমাদের হয়েছে। এটা যে কত বড় প্রাপ্তি তা বলে বোঝাতে পারব না”। একই বক্তব্য সুলেখা দেবীর ছেলে অসীম দত্তেরও। তিনি বলেন, “বিশ্বকবি যে ঘর ব্যবহার করেছেন সেখানে আমি রয়েছি। আমি চাই নব প্রজন্ম এই বাড়িটি সম্পর্কে জানুক। বর্তমান মালিক যদি এই বাড়িটি মেরামতির অনুমতি দেয় তাহলে আমি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেব”। এই বাড়ির রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারলেই সঠিকভাবে কবিপ্রণাম হবে বলে মত বর্তমান বাসিন্দাদের।

Previous articleখেলার ছলে গলায় ফাঁস: বোনের মৃত্যু, ভাই আশঙ্কাজনক
Next articleজয়েন্টের মেধা তালিকায় বাংলা মাধ্যমের মাত্র এক! শিক্ষামন্ত্রীর উত্তর শুনুন