স্কুল-কলেজের মাঠে ঘাসবন, লকডাউনে শুনসান উত্তরবঙ্গ, কিশোর সাহার কলম

কিশোর সাহা

সুস্থ বনাম অসুস্থের লড়াই! উত্তরবঙ্গে কিন্তু এখন সুস্থ হয়ে ওঠার ঘটনা অনেক বেশি। তবুও আতঙ্ক, আশঙ্কা ক্রমশ যে জাঁকিয়ে বসছে তা অগাস্ট মাসের দ্বিতীয় লকডাউনে স্পষ্ট হয়ে গেলো। একটা ভয় তাড়া করে বেড়াচ্ছে অনেককেই। তাই রাস্তাঘাটে লোকজন প্রায় নেই। যে কজনকে দেখা গিয়েছে তা একান্তই তাগিদে। শিলিগুড়ি সহ উত্তরবঙ্গ চাইছে কোভিডে আক্রান্ত ও মৃতের রেখা চিত্র নিম্নমুখী হোক। তাতেই কিছুটা হলেও স্বস্তিতে পুলিশ-প্রশাসন।

শনিবার সকাল থেকে শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, রায়গঞ্জ, বালুরঘাট, মালদহ, আলিপুরদুয়ার এবং দার্জিলিং, কালিম্পং পাহাড়ের ছবিটা সে কথাই যেন বলে দিল। সকলেই চাইছেন, আগামী সেপ্টেম্বরের আগেই যেন করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের গ্রাফ যেন নীচের দিকে নেমে যায়। সে জন্য পাহাড় থেকে সমতল যতটা সম্ভব রাস্তায় না বেরোনোর ছবি।

এরই মধ্যে বেরোতে হয়েছে অনেককেই। কেউ প্রয়োজনে। কেউ অপ্রয়োজনে। যেমন মাছ ধরতে ছিপ নিয়ে বেরিয়ে পড়েছেন কেউ কেউ। কেউ আবার নির্জন দিনে সুকনা, তিনধারিয়ায় পাহাড়ি উপত্যকায় গিয়ে নিরিবিলিতে বসে থাকা, একটু হালকা করে পানভোজনের জন্য গাড়ি নিয়ে বেরিয়েছেন। ধরাও পড়েছেন। ফের পুলিশের ধমকে ফিরতে হয়েছে অনেককে।
শিলিগুড়ির হাসমি চক কিংবা মালদহ শহরের স্টেশন মোড় লাগোয়া এলাকায় সকাল থেকেই ছিল পুলিশের কড়াকড়ি। তাতে কী! পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়েই খুচখাচ ঘোরাঘুরি চলেছে। বসেছে এক আধটা নেশার আসরও। এভাবেই বিকেল গড়িয়েছে। পুলিশের হিসেবে শতাধিক লোকজনকে লকডাউনের নিষেধাজ্ঞা ভাঙায় আটকে কাউকে জরিমানা, কাউকে সতর্ক করা হয়েছে।

ডুয়ার্স থেকে কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার থেকে জলপাইগুড়ি, ইসলামপুর টু শিলিগুড়ি, সকলের হিসেব একটাই। আরও কেউ মারা গেল না তো! একটা ভয় ঢুকে গিয়েছে যেন! সেই ভয়টাই ক্রমশ প্রতি লকডাউনকে আঁটোসাটো করে দিচ্ছে।

সেই মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে চলছে লকডাউনের পর্ব। তাতে স্কুল-কলেজ বন্ধ হওয়ায় মাঠে-ময়দানে জন্মেছে বড় ঘাস। শিলিগুড়ি কলেজের মাঠের কথাই বলা যাক। সেখানে এত ঘন ঘাস হয়েছে যে সাপ-ব্যাঙের আনাগোনা শুরু হয়েছে।

এমন ঘাসবনের ছবির দেখা মিলছে প্রায় সব স্কুল-কলেজের মাঠেই। এখন সকলেই একযোগে চাইছেন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কোভিড ১৯-এর রেখাচিত্র যেন নীচের দিকে নামে। শম্পা রায়চৌধুরি, বনানী মিত্র অথবা কলেজ শিক্ষক সিরাজুল ইসলামরা জানান, তাঁরা সকলেই এখন সুস্থ সুদিনের অপেক্ষায় লকডাউনে ঘরবন্দি হয়ে রয়েছেন।
আরও কতদিন অপেক্ষায় থাকতে হবে কে জানে!

Previous articleতৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের জন্য বাঙ্গুরে কোভিড বেডের ব্যবস্থা স্বাস্থ্যভবনের
Next articleবারাকপুরের পরে নৈহাটি, তৃণমূল পার্টি অফিস লক্ষ্য করে বোমা