হলফনামায় নেই, লগ্নিকেলেঙ্কারিতে অর্জুন

নির্বাচনী হলফনামায় তথ্যগোপন করে এবার লগ্নিকেলেঙ্কারিতে জড়ালেন বারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং। অভিযোগ, তিনি দাবি করেছিলেন যে শেয়ারবাজারে তিনি লগ্নি করেননি। অথচ দেখা যাচ্ছে, বাঙ্গালোর ফোর্ট ফার্মস লিমিটেডে তাঁর ২ লক্ষ শেয়ার কেনা আছে। সংস্থার প্রকাশিত রিপোর্টে উল্লেখিত প্যানের সঙ্গে অর্জুনের প্যান মিলছে। ২০১৮-১৯ আর্থিক বছরেই মুম্বাই শেয়ার বাজারে নথিভুক্ত ঐ সংস্থার শেয়ার কেনা হয়েছে। সংস্থার মোট শেয়ারের ৫.১৭% অর্জুনের হাতে।

এই তথ্য সামনে আসার সঙ্গে সঙ্গে তুমুল চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। ভোটে দাঁড়ানোর সময় এই সংক্রান্ত ঘোষণায় অর্জুন এটি গোপন করলেন কেন, তা নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে।
সূত্রের খবর, বীজপুর এলাকায় অর্জুনের কোনো পরিচিতমহল সূত্রেই বিষয়টি দিল্লির উপরমহলে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এক নেতা বলেছেন,” এটা ব্যবসায়িক বিষয়। আমাদের কাছে জানানো হয়েছে। আমরা দেখছি। অর্জুনের সঙ্গে কথা বলা হবে।”
জানা গিয়েছে, খোদ অর্জুন সিং এর ব্যাখ্যা দিয়ে বলেছেন,” আমি ২০১৮-তে কিনলেও শেয়ার আমার নামে বরাদ্দ হয়েছিল অনেক পরে। তাই হলফনামায় রাখা হয়নি। বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলেই যা করার করেছি। এর মধ্যে গোপন বা দোষের কিছু নেই।”
এদিকে, ওই সংস্থার যে রিপোর্ট প্রকাশ হয়েছে, তাতে ২০১৯-২০ আর্থিক বছরের প্রথম ত্রৈমাসিকেও অর্জুনের শেয়ারের উল্লেখ রয়েছে। যেখানে ২০১৯ এর এপ্রিলে অর্জুনের হলফনামায় এর উল্লেখ নেই। ফলে তথ্যে অসঙ্গতির অভিযোগ জোরালো হয়েছে।

এদিকে অর্জুনের ছেলে পবন ভাটপাড়া উপনির্বাচনে দাঁড়ানোর সময়ে যে হলফনামা দিয়েছেন, তাতে জগশক্তি মার্চেন্টাইজ প্রাইভেট লিমিটেডে ২ কোটি ১০ লক্ষ টাকা লগ্নির উল্লেখ আছে। ২০১৮-১৯ সালে বাঙ্গালোর ফোর্টের আট লক্ষ শেয়ার এই জগশক্তির হাতে ছিল। অর্জুন এসব উড়িয়ে বলেছেন,” বাবা ছেলে একই সংস্থায় লগ্নি করতে পারে না? আজব কথা !”

এই বাঙ্গালোর ফোর্ট সংস্থাটি পাটের উৎপাদন, দ্রব্য তৈরি , রপ্তানি করে। ২০১৮/১৯-এ ফলতায় কারখানা খুলেছিল। অফিস ব্রাবোর্ণ রোডে। সংস্থা আর্থিক লাভ দেখালেও ভবিষ্যতের কাজের জন্য তা সঞ্চিত রেখেছিল। এই কারণ দেখিয়ে অংশীদারদের কোনো লভ্যাংশ দেয়নি।

অর্জুনের কথায়,” শেয়ার বরাদ্দ হলে তা পরের বছর শো করে। ততক্ষণে আমার মনোনয়ন দেওয়া হয়ে গিয়েছিল।”

এদিকে বীজপুর এলাকায় অর্জুনের পরিচিতমহলের একাংশ এই গোটা বিষয়টি তথ্যপ্রমাণসহ ফাইল তৈরি করে দিল্লিতে পাঠিয়েছে একাধিক ব্যক্তির কাছে। তাতে ঐ কোম্পানির বিস্তারিত তথ্য রয়েছে। সম্প্রতি দিল্লি থেকে ফেরা এক নেতা বলেন,” যারা এই ফাইল পাঠিয়েছেন, তারা আরও মারাত্মক কিছু কথা লিখে নোট পাঠিয়েছেন। নিজেদের লোক ছাড়া জানার কথা নয়। এসব না মাথাব্যথার কারণে পরিণত হয়!”

Previous articleআইপিএল-এ অবসর কাটাতে ক্রিকেটারদের গিটার – প্লেয়িং কার্ড রাখার পরামর্শ দিলেন  ব্রেট লি
Next articleবিহারে ভয়াবহ বন্যা, ক্ষতিগ্রস্থ ৭৪ লক্ষ মানুষ