বিশেষ কেউ নয়, বিজেপিতে দিলীপের কাছে মুকুল আর পাঁচটা নেতার মতোই

রাজ্য রাজনীতিতে যতই চর্চার সাবজেক্ট হোন মুকুল রায়, বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের কাছে তিনি “বিশেষ” কেউ নন। আর পাঁচটা রাজ্য নেতার মতোই একই চোখে মুকুল রায়কে দেখেন দিলীপ ঘোষ। সম্প্রতি রাজ্য বিজেপি সভাপতির এক মন্তব্যে বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে।

বাংলার রাজনৈতিক মহলের একাংশের ধারণা, মুকুল রায় একাই বদলে দিতে পারেন পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতির সমীকরণ। মুকুল ছাড়া তৃণমূলকে সরিয়ে রাজ্যে ক্ষমতায় আসতে পারবে না বিজেপি, এমনটাও মনে করেন অনেকে। কিন্তু সেই মিথ্যা বা ধারণাকে গুরুত্ব দিতে চান না রাজ্য বিজেপি সভাপতি স্বয়ং।

তাঁর কাছে মুকুল যা, জয়প্রকাশ মজুমদারও তাই! সম্প্রতি, রাজ্য বিজেপি দফতরে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল গেরুয়া শিবির। আর সেখানে অন্তঃকলহের সব বিতর্কের অবসান ঘটিয়ে দলীয় ঐক্যের বার্তা দিতে কবি প্রণামের মঞ্চকেই বেছে নিয়েছিলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি। এছাড়া অবশ্য তাঁর কাছে দ্বিতীয় অপশনও ছিল না। কারণ, দিল্লির শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশে মুকুল রায়কে নিয়ে তিনি চলতে বাধ্য।

এদিকে দিল্লি নেতৃত্ব মুকুলকেও সাফ জানিয়েছে, দিলীপ ঘোষের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে। পার্টিতে মুকুল নিশ্চয় গুরুত্ব পাবেন, প্রয়োজনে তাঁর জন্য রাজ্য কমিটিতে পৃথক পদ তৈরি করা হবে, তবে দলীয় ঐক্য যেন অটুট থাকে। তাই কবি প্রণাম অনুষ্ঠানে তাঁকেও রাজ্য দফতরে হাজির থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। দিল্লির নির্দেশ মেনে মুকুল গিয়েছিলেন বটে, তবে পার্টি অফিসে ঢোকেনি। বাইরে অনুষ্ঠান মঞ্চের পাশে একটি চেয়ারে বসেছিলেন। পরে সকলের সঙ্গে মূল মঞ্চে যোগ দেন।

ওইদিনই বিভিন্ন দল থেকে আসা কিছু রাজনৈতিক কর্মী বিজেপিতে যোগ দেন। তখন মঞ্চে দিলীপের সঙ্গে ছিলেন মুকুল রায়-জয়প্রকাশ মজুমদার। মুকুল বিজেপির জাতীয় কর্ম সমিতির সদস্য আর জয়প্রকাশ রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি।

রাজনৈতিক পারদর্শিতা, দক্ষতা, বিচক্ষণতা কিংবা গুরুত্বের বিচারে মুকুলের ধারে পাশে নেই জয়প্রকাশ। কিন্তু তাঁদের দু”জনকে একাসনেই বসিয়েছেন দিলীপ ঘোষ। সেদিন মঞ্চ থেকে রাজ্য বিজেপি সভাপতি বলেন, “আমার একপাশে মুকুল রায়, যিনি তৃণমূল থেকে এসেছেন। আরেক পাশে জয়প্রকাশ মজুমদার, যিনি কংগ্রেস থেকে এসেছেন। এঁরা দু’জনে অন্য সকলের মতোই বদলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।”

আপাত দৃষ্টিভঙ্গিতে দিলীপের এই বক্তব্য সামান্য মনে হলেও এর গভীর রাজনৈতিক তাৎপর্য রয়েছে বিজেপির অন্দরে। অনেকের প্রশ্ন, তাহলে দিলীপ ঘোষ বা রাজ্য বিজেপির কাছে মুকুল রায় আর জয়প্রকাশ মজুমদারের গুরুত্ব একই। আসলে রেলায় রাজনীতি করা দিলীপ ঘোষ জয়প্রকাশ মজুমদারদের মতো মাঝারি সারির নেতাদের সঙ্গে মুকুল রায়ের কোনও পার্থক্য দেখেন না। তাই বিশেষ কেউ নয়, তাঁর কাছে মুকুল রায় দলের আর পাঁচটা নেতার মতোই?

Previous articleপ্রাথমিক এবং উচ্চ প্রাথমিক স্তরে ছাত্রীদের উপস্থিতির হারে শীর্ষে বাংলা
Next articleগেহলটকে বিশেষ বার্তা দিলো এআইসিসি