মহামারি আবহে সংগঠিত ক্ষেত্রে ভারতে কাজ হারিয়েছেন ১.৮ কোটি স্থায়ী কর্মী

এবার সংগঠিত ক্ষেত্রেও উঠে এল ভয়ঙ্কর এক সঙ্কটের ছবি। মহামারির কারনে লকডাউন, আর লকডাউনের জেরে এ দেশে কাজ হারিয়েছিলেন কয়েক কোটি অসংগঠিত শ্রমিক।

এদিকে, CMIE বা সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকনমি-র সাম্প্রতিক তথ্যে জানানো হয়েছে, চলতি বছরের এপ্রিল থেকে জুলাই, এই ৪ মাসে কাজ হারিয়েছেন প্রায় ১ কোটি ৮০ লক্ষ বেতনভুক কর্মী। এর মধ্যে শুধু জুলাই মাসেই কর্মহীন হয়েছেন প্রায় ৫০ লক্ষ। এই পরিসংখ্যান এবং তথ্য উদ্বেগজনক বলেই মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।

ভারতের অর্থনীতি তো সংক্রমণের আগে থেকেই তলানিতে ঠেকেছিলো। মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে লকডাউন শুরু হতেই ভেঙে পড়ে অর্থনীতির মেরুদণ্ড। বহু সংস্থা বন্ধ হয়েছে, বিশাল সংখ্যক কর্মী ছাঁটাইয়ের পথে৷ সবাই টিকে থাকার লড়াই করছে। এই ধাক্কা যে কতটা জোরে লেগেছে, তা এবার বোঝা গেল অর্থনৈতিক সমীক্ষাকারী সংস্থা CMIE বা সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকনমি-র শেষ প্রকাশিত তথ্যে। সংস্থার তথ্য বলছে, এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত ১ কোটি ৮০ লক্ষ এবং শুধু জুলাই মাসেই কর্মহীন হয়েছেন ৫০ লক্ষ মানুষ।

দেশের মোট কর্মসংস্থানের মধ্যে ২১% সংগঠিত ক্ষেত্রে বেতনভুক কর্মী হিসেবে কাজ পান, যা অসংগঠিত ক্ষেত্রের চেয়ে অনেক কম। CMIE-র তথ্য বলছে, লকডাউনের ধাক্কা কাটিয়ে এপ্রিলের শেষের দিক থেকেই অসংগঠিত ক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের হার বাড়ছে। কিন্তু বেতনভুক কর্মীদের ক্ষেত্রে সেই হার নিম্নমুখী। এপ্রিল থেকে যে বিপদ শুরু হয়েছে, এখনও তা বন্ধ হয়নি।

অর্থনীতিবিদদের ধারণা,
এই ধাক্কা সহজে কাটিয়ে ওঠা যাবে না৷ , মহামারি এবং লকডাউন কর্মসংস্থানের উপর বিরাট আঘাত হেনেছে। চাহিদা কমে যাওয়ায় বেতনভুক কর্মীদের ক্ষেত্রে তা আরও ভয়াবহ আকার নিয়েছে। একের পর এক সংস্থা
চাকরি থেকে ছাঁটাই করে দেওয়ার ফলে সমস্যা দীর্ঘায়িত হচ্ছে৷ আনলক পর্বেও কর্মসংস্থান তৈরি হয়নি বা পুরনো কাজ ফেরত পাননি কাজ হারানো কর্মীরা। সমীক্ষা বলছে, আনলক-এর সময় চাকরি ফিরে পাওয়ার হার অত্যন্ত কম। তবে গ্রামীণ ও অসংগঠিত ক্ষেত্রে কিছুটা গতি এসেছে।
অর্থনীতিবিদদের ধারনা, সংগঠিত ক্ষেত্রে চাকরির সুযোগ না বাড়লে অসংগঠিত ক্ষেত্রেও তার প্রভাব পড়বে। অর্থাৎ, সংগঠিত ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান বাড়লে অসংগঠিত ক্ষেত্রেও নিয়োগ বাড়বে৷বেতনভুক কর্মীদের এই ভাবে চাকরি হারানো দেশের অর্থনীতির পক্ষে অশনি সঙ্কেত। ফলে বিপদ যতটা আঁচ করা হচ্ছিল, তার চেয়েও দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে আর্থিক মন্দা।

Previous articleতদন্ত শুরুর আগে কোয়ারেন্টাইনের চার্ট প্রকাশ মুম্বই পুরসভার
Next articleকেউ কী আমার জীবনের প্রথম মারুতি গাড়িটা ফিরিয়ে দেবে? কার আবেদন জানেন?