তাহলে দুই প্রধানকে নিয়ে রাজনীতির নাটক কেন করেছিলেন বিজয়বর্গীয়?

শতবর্ষে লাল-হলুদ শিবিরের জন্য খুশির বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগেই নতুন লগ্নিকারী সংস্থা ‍‘শ্রী সিমেন্ট’-এর হাত ধরে এ বার ISL খেলতে চলেছে ইস্টবেঙ্গল৷ লাল-হলুদ কর্তারা এবং সমর্থকরা আন্তরিকভাবেই কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীকে৷ ইস্টবেঙ্গল সচিব বলেছেন, ‍‘‍‘উনি সব সময় পাশে ছিলেন বলেই এই জায়গায় এসে ISL খেলার জন্য পদক্ষেপ করতে পারছি।’’

সঞ্জীব গোয়েঙ্কার সঙ্গে মোহনবাগান কর্তারা নিজেরাই ডিল সেরেছিলেন৷ পাকা হয়ে যায় বাগানের ISL খেলা৷ ওদিকে, লগ্নিকারী না থাকায় ISL খেলা প্রায় বন্ধই হয়ে গিয়েছিল ইস্টবেঙ্গলের। ঠিক সেই সময়ে এগিয়ে এসে সব সমস্যার সমাধান করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী৷

এদিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় মোহনবাগান সমর্থকদের কটাক্ষও উপচে পড়েছে৷ বলা হয়েছে, পিছনের দরজা দিয়ে ঢুকেছে ইস্টবেঙ্গল৷ উত্তর দিতে ছাড়ছেন না লাল-হলুদ ভক্তরাও৷

এই সব চাপানউতোরের মাঝেই কলকাতা ময়দান সম্ভবত ভুলে গিয়েছে, ২০১৯ সালের ১২ জুলাইয়ের কথা৷ সেদিন সমস্যার ডালি নিয়ে বিজেপি নেতা কৈলাস
বিজয়বর্গীয়ের শরণাপন্ন হয়েছিলেন মোহনবাগান- ইস্টবেঙ্গল কর্তারা৷ কলকাতার এক অভিজাত হোটেলে মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গল কর্তারা বৈঠকে বসেছিলেন বিজয়বর্গীয়ের সঙ্গে৷ দুই প্রধানের যাবতীয় সমস্যা মেটাতে ‘প্রভাবশালী’ হস্তক্ষেপের এই উদ্যোগটি নিয়েছিলেন ভারতীয় দলের প্রাক্তন গোলরক্ষক এবং গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির কৃষ্ণনগরের প্রার্থী কল্যাণ চৌবে। তিনিই বিজয়বর্গীয়ের সঙ্গে দুই প্রধানের কর্তাদের ওই বৈঠকের ব্যবস্থা করেন। সেদিন বিজয়বর্গীয়ের সঙ্গে দেখা করেছিলেন মোহনবাগানের দেবাশিস দত্ত এবং সৃঞ্জয় বোস এবং ইস্টবেঙ্গলের শান্তিরঞ্জন দাশগুপ্ত এবং দেবব্রত সরকার। বৈঠকে দুই ক্লাবের প্রতিনিধিরাই সমস্যা সমাধানে বিজয়বর্গীয়র সাহায্য চান৷ বৈঠকের শেষে বিজয়বর্গীয় ঘোষণা করেছিলেন “আমি বাংলার ফুটবল ও দুই প্রাচীন ক্লাব সম্পর্কে জানি। যে স্তরে আলোচনা করে দুই প্রধানের সমস্যার সমাধান করা সম্ভব, সেই স্তরে গিয়ে আমি আলোচনা করবো। আমি বিষয়টি নিয়ে আমাদের ক্রীড়ামন্ত্রী কিরেণ রিজিজুর সঙ্গেও কথা বলব। ” দুই প্রধানের কর্তাদের একটি চিঠিও দিয়েছিলেন বিজয়বর্গীয়৷ তাতে লিখেছিলেন, দুই ক্লাবকে সাহায্য করতে তিনি প্রস্তুত৷

এখন প্রশ্ন উঠেছে, সেদিন বিশাল মাপের ফুটেজ খেয়ে বিজয়বর্গীয় যে সব ঘোষণা করেছিলেন, তার কী হলো ? গত এক বছরে দুই প্রধানের বা বাংলার ফুটবলের কোন উপকার বিজয়বর্গীয় বা বিজেপি করতে পেরেছেন ? যিনি মধ্যস্থতা করেছিলেন, তিনিই বা নীরব হয়ে গেলেন কেন ?
মোহন-ইস্ট, দুই দলের সদস্য – সমর্থকরা আজ বলছেন, বাংলার ফুটবল নিয়ে সেদিন সস্তার রাজনীতি করেছিলো বিজেপি ৷ এখন স্পষ্ট হয়েছে, ফুটবলের উন্নয়ণ নয়, দলীয় রাজনীতিই ছিলো আসল উদ্দেশ্য ৷ মুখ্যমন্ত্রী বাংলার ফুটবলকে দেশের সেরার আসনে বসাতে বদ্ধপরিকর৷ একের পর এক ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে তিনি সদিচ্ছার বার্তা দিচ্ছেন ৷ মোহনবাগান – ইস্টবেঙ্গল সদস্য- সমর্থকরা আজ বিজেপি তথা বিজয়বর্গীয়ের কাছে জানতে চাইছেন, সেদিন যে গাদা গাদা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তার কটা রক্ষা করেছেন ?

Previous article“ভেঙে মোর ঘরের চাবি…”, মাতৃবন্দনায় জীবন সংগ্রামের কথা বলবে সোনাগাছির যৌনকর্মীরা
Next articleআমেরিকার হিন্দুদের ভোট পেতে অভিনব প্রচার প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জো বিডেনের