বাসের পরে বাস ছুটছে, মোটা অঙ্কের ভাড়া দিয়ে সওয়ারি সেই পরিযায়ী!

বাসের পরে বাস ছুটছে ভিন্ রাজ্যে, সওয়ারি সেই পরিযায়ী।
শেষ পর্যন্ত তাঁদের ভাগ্যের চাকা ঘুরল বেসরকারি বাস মালিকদের সৌজন্যে । , বিশেষ করে পর্যটনের কাজে ব্যবহার হওয়া বাসগুলি পর্যটক হারিয়ে এখন শ্রমিক নিয়ে পাড়ি দিচ্ছেন ভিন রাজ্যে ।সারা ভারত ছুটে যাচ্ছে সেই সব বাস। মোটা অঙ্কের ভাড়া দিয়েই শ্রমিকেরা পাড়ি দিচ্ছেন সেই বাসে চেপে।
এক দিকে যেমন বাস মালিক থেকে কর্মীদের পকেটে কিছু টাকা পয়সা ঢুকেছে শ্রমিকদের নিয়ে ভিন রাজ্যে রওনা দিয়ে, ঠিক তেমনই ভাবে শ্রমিকরাও নিশ্চিন্ত হচ্ছেন কাজ পেয়ে।এখন কেবল সোশ্যাল মিডিয়াই নয়, রীতিমতো পাড়ায় পাড়ায় ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে  পোস্টার থেকে ফ্লেক্স। গঞ্জ বাজারের মোড়ে মোড়ে ‘চলুন ভিন রাজ্যে’ বলে পোস্টার দেখা যাচ্ছে।

কেন্দ্রীয় সরকারের তো একটু ভাবার দরকার ছিল লকডাউন করার আগে। আমাদের মতো বাইরে যে গরীব মানুষগুলো কাজ করে, তারা কী করবে, সেটা তো ভাবে নি সরকার। এই চার মাস যে কী করে বেঁচে আছি, নিজেই জানি না।এমনই বলছেন এক ভুক্তভোগী । আরেক ভুক্তভোগী রামানুজ মন্ডল বলছেন, আমরা যে শেঠের কাছে কাজ করি, তার একটা বাড়ি মেরামত হচ্ছিল। আমি আর আরও ছ’জন সেখানেই কাজ করছিলাম।
লকডাউন হওয়ায় ওই বাড়িরই একটা দিকে সরু মতো একটা ঘরে আমরা থাকছি। বাইরে বেরোতে পারছি না। শেঠ বলে দিয়েছে টাকা পয়সা কিছু দিতে পারবে না। হাতে যা ছিল, তা শেষ। দেশেও কিছু পাঠাতে পারছি না। কিন্তু আমার স্ত্রী সন্তানসম্ভবা। তারও খরচ খরচা আছে। আমরা কোথায় যাবো?
এমনিতেই করোনার ফলে লকডাউন হয়ে যাওয়ায় পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্গতির শেষ ছিলো না। কেউ পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরতে গিয়ে রাস্তায় মারা গিয়েছেন। কেউ  ট্রেনের তলায়পিষ্ট হয়ে মারা গিয়েছেন। এমন ১৬ জন শ্রমিক রয়েছেন যাঁরা ৪৫ কিলোমিটার হেঁটে ক্লান্ত হয়ে অচেতনভাবে ঘুমোচ্ছিলেন। অভুক্ত, অনেক জায়গায় নিরাশ্রয় শ্রমিকদের ঘরে ফেরার জন্য অবশেষে  ট্রেন চালাতে রাজি হয়েছে রেলমন্ত্রক।  তবু দুর্দশা কাটেনি তাদের।
তৃণমূল জানিয়েছে, এ সবই রাজনৈতিক প্রচার। রাজ্য সরকার ট্রেনের ব্যবস্থা করেছে। দরকার হলে আরও করবে। পরিযায়ী শ্রমিকদের রাজ্যে নিরাপদে ফেরানো হবে। কিন্তু তাঁদের এই আশ্বাসের পরেও বিতর্ক থামছে না। সমালোচনাও নয়।