এ রাজ্যেই বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে মহিলাদের “কু-প্রস্তাব” দেওয়ার অভিযোগ

লক্ষ্য একুশ। দোরগোড়ায় বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে রাজ্যে বিধানসভা উপনির্বাচনও আছে। শাসক তৃণমূল শিবির যখন সেই লক্ষ্যে কোমর বেঁধে ময়দানে নেমে পড়েছে, তখন গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জর্জরিত রাজ্য বিজেপি। বড়-মেজো-ছোট, সবস্তরেই নিজেদের মধ্যে অন্তর্কলহে জড়িয়ে পড়েছেন নেতারা। নির্বাচনের ঘুঁটি সাজানো দূরের কথা, ঘরোয়া ঝামেলা সামাল দিতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে গেরুয়া শিবিরের ম্যানেজারদের। কোথাও দিল্লি থেকে এসে কৈলাস বিজয়বর্গীয় প্রকাশ্যে মুকুল রায়কে ভোটের কারিগর বলছেন, যা শুনে ক্ষুব্ধ হয়ে সভাস্থল ছেড়ে চলে যেতে দেখা যাচ্ছে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে। অন্যদিকে আবার জেলা বিজেপির অন্দরেও গোষ্ঠীকোন্দল। যা কপালে ভাঁজ ফেলেছে গেরুয়া শিবিরে।

গোষ্ঠীকোন্দলের জেরে একের পর এক জেলায় পদ্ম শিবিরের সংগঠনে ফাটল দেখা দিচ্ছে। রোজই দল ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন নেতা-কর্মীরা। গোদের উপর বিষ ফোঁড়ার মতো এবার নতুন এক সমস্যা। যার জন্য সরিয়ে দেওয়া হলো বিজেপির এক মণ্ডল সভাপতিকে। ঘটনা উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুর লোকসভার অন্তর্গত নোয়াপাড়ার। এখানকার ৫ নম্বর গ্রামীণ মণ্ডলের বিজেপি মণ্ডল সভাপতি অলোক জানাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে পদ থেকে।

এই অপসারণকে ঘিরে ফের প্রকাশ্যে বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। দলীয় সূত্রে খবর, নব্য ও আদি বিজেপি কর্মীদের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জন্যই মণ্ডল সভাপতির পদ থেকে সরতে হয়েছে অলোক জানাকে। অভিযোগ, পুরনো বিজেপি কর্মীরা হুমকি দেন, অলোক জানাকে সভাপতি পদ থেকে বহিষ্কার না করলে তাঁরা সবাই দল ছেড়ে চলে যাবেন। এমনকি, তৃণমূলেও যোগ দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। এরপরই নোয়াপাড়ায় দলীয় কার্যালয়ে বিক্ষোভ শুরু হয়ে যায়।

বিজেপি কর্মীদের একাংশের বিস্ফোরক অভিযোগ, অলোক জানা নাকি একাধিক মহিলা কর্মীদের কুপ্রস্তাব দিয়েছেন। মহিলাদের সম্মান না করে বরং তাঁদের সঙ্গে বিতর্কিত ও কুরুচিপূর্ণ কথাবার্তাও বলেন। যদিও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অলোক জানা। তাঁর দাবি, পদ থেকে সরাতে এবং ভাবমূর্তি নষ্ট করতেই পরিকল্পিত ভাবে কুৎসা রটানো হচ্ছে তাঁর নামে।

বিজেপির বারাকপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি উমাশঙ্কর সিং জানিয়েছেন, অলোক জানাকে নিয়ে একাধিক জায়গা থেকে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ পেয়েছেন তিনি। তাই পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, দোষ প্রমাণিত হলে অলোক জানার বিরুদ্ধে দল উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে বলেও জানিয়েছেন সাংগঠনিক জেলা সভাপতি।

এদিকে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন নোয়াপাড়ার বিজেপি বিধায়ক সুনীল সিং। তিনি জানান, দল বড়ো হচ্ছে। তাই বিবাদ, ঝগড়াঝাঁটিও বাড়বে। তবে এগুলি যাতে কম হয়, সেদিকে নজর দিতে হবে।

আরও পড়ুন : সুশান্ত গেলেন, বিকাশ এলেন, সিপিএমের দুই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত

Previous articleপ্রতিদ্বন্দ্বী-নিকেশ অভিযানে নেমেছেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, উত্তাল বিশ্ব
Next articleভাবাচ্ছে জঙ্গলমহল, উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্তাদের নিয়ে বৈঠক ডিজিপির