এবার বিনামূল্যে চিকিৎসা করান, কলকাতা পুরসভার নয়া পোর্টাল “ডাক্তারবাবু”

করোনা আবহে মানুষের পাশে দাঁড়াতে কলকাতা পুরসভার ফের এক নতুন উদ্যোগ। এবার পুরসভার পক্ষ থেকে একটি নতুন পোর্টাল লঞ্চ করা হলো। পোর্টালের নাম বলা হচ্ছে “ডাক্তারবাবু”। তবে অফিসিয়াল নাম kmc.janupchaar.com. কলকাতা পুরসভা এবং আইএমএ রাজ্য শাখার যৌথ উদ্যোগে তৈরি হয়েছে এই পোর্টাল।
কলকাতা শহরের ৩৫ জন খ্যাতনামা ডাক্তারবাবুর সঙ্গে সরাসরি ভার্চুয়াল চেম্বারে ভিজিট করতে পারবেন রোগীরা।

নতুন এই পোর্টালের মাধ্যমে সাধারণ রোগী বা মানুষ সরাসরি ডাক্তারবাবুদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন। নিজেদের সমস্যার কথা জানিয়ে চিকিৎসকদের পরামর্শ নিতে পারবেন। আজ, শনিবার এই সামাজিক পোর্টালের সূচনা করে এমনটাই জানালেন কলকাতা পুরসভার মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম।

এদিন ফিরহাদ হাকিম এই পোর্টালের শুভ উদ্বোধন করেন। এবং এই পোর্টালের জন্য তিনি রাজ্যসভার সাংসদ ডঃ শান্তনু সেন ও স্বাস্থ্য দফতরের অধিকর্তার ধন্যবাদজ্ঞাপন করেছেন। যেমন টেলিমেডিসিন আছে ঠিক সেইভাবেই এই অ্যাপের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ সরাসরি ডাক্তারদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন। তাঁদের সমস্যার কথা তুলে ধরতে পারবেন। কোন ডাক্তার কখন বসে তাও এই অ্যাপের মাধ্যমে সবাই দেখতে পারবেন বলে জানিয়েছেন ফিরহাদ হাকিম।

এখন চিকিৎসকের সংখ্যা ৩৫ হলেও, পরে ধাপে ধাপে সেই সংখ্যা বাড়িয়ে ১০০ করা হবে। সপ্তাহের যে কোনও এক দিন টানা একঘন্টা ভার্চুয়াল চেম্বারে রোগী দেখবেন এই চিকিৎসকরা। রোগীদের আগে পোর্টালে গিয়ে দেখে নিতে হবে, কোন ডাক্তার কবে ভার্চুয়াল চেম্বারে বসছেন। সেই মতো নাম লেখাতে হবে। অর্থাৎ ই-রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। ভিজিটের আগেই ওই রোগীকে তাঁর সমস্ত শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার নথি স্ক্যান করে সেই কপি আপলোড করে দিতে হবে। এরপরই ওই রোগীকে ভার্চুয়াল চেম্বারে দেখে সেই মতো ডাক্তারবাবু তাঁকে ই-প্রেসক্রিপশন দেবেন।

এর পাশাপাশি এদিন তিনি শহর কলকাতা সমস্ত পুজো কমিটিকে কাছে আবেদন রেখেছেন পুজো মণ্ডপগুলি ছোট করতে হবে। কিন্তু প্রবেশদ্বার যেন উন্মুক্ত থাকে। একসঙ্গে বেশি মানুষ যেন মন্ডপের মধ্যে প্রবেশ না করে। উন্মুক্ত থাকলে সাধারণ মানুষ দূর থেকে প্রতিমা দর্শন করতে পারবেন। অন্যদিকে, যদি রাস্তার একটা দিক খোলা রাখা হয় তাহলে মানুষের যাতায়াত করতে সুবিধা হবে। ফলে কোনও মণ্ডপের সামনে ভিড় জমবে না বলে এদিন তিনি জানিয়েছেন।

এদিকে পুজোর আগেই শহরের সমস্ত রাস্তাঘাট সারাইয়ের প্রতিশ্রুতি দিলেন পুরমন্ত্রী ফিরাদ হাকিম। কলকাতা-সহ রাজ্যের সব শহরেই বর্ষাতে ভেঙেছে রাস্তা। আমফানের জন্যও রাস্তাঘাট অনেক জায়গায় ভেঙেছে। লকডাউনের জন্যও বর্ষার আগে এবার রাস্তাঘাট সারাই করে উঠতে পারেনি পুরদফতর। যার ফলে ভাঙা রাস্তায় চলাচল করতে গিয়ে অসুবিধে হচ্ছে রাজ্যের সাধারন মানুষের। সেই প্রসঙ্গে ফিরাদ হাকিম জানান আবহাওয়ার একটু উন্নতি না হলে কাজ করা যাচ্ছে না। কলকাতা শহরের মাটি গঙ্গার মাটি। সেইজন্য মাটিও নরম। তাই বৃষ্টিটা একটু কমলেই কলকাতা-সহ শহরতলীর রাস্তা ঠিক হয়ে যাবে বলেই মানুষকে আশ্বাস দেন ফিরহাদ হাকিম।

আরও পড়ুন- সুশান্তকাণ্ডে এবার ম্যানেজার দীপেশ সাবন্তকে গ্রেফতার করল এনসিবি

এর পাশাপাশি ফিরহাদ হাকিম আরও জানিয়েছেন, বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে যে কঠিন সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে তার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার দায়ী। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সবকিছু বন্ধ রাখা সম্ভব নয়। কোনও না কোনও সময়ে তা খুলতেই হবে। এই পরিস্থিতির মধ্যে তাই কিছু পরিষেবা ইতিমধ্যে চালু করে দেওয়া হয়েছে। সেটা ঠিক আছে, কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে যদি সঠিক টাইমে লকডাউন করা হতো তাহলে করোনার মত এই বিপত্তির সৃষ্টি হতো না। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার তা না করে সবকিছুতেই রাজনীতি করছে বলেও দাবি করেন ফিরহাদ।

কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তাঁর আরও অভিযোগ, যদি সঠিক সময়ে বিমানবন্দর গুলি বন্ধ করা হতো তাহলে এই সমস্যা হতো না। বিজ্ঞানসম্মতভাবে করোনার সঙ্গে না লড়ে কাঁসর-ঘন্টা-থালা-বাটি বাড়িয়ে কোন লাভ হবে না। অর্থাৎ করোনা পরিস্থিতিতে মানুষকে নিয়ে এগোতে হবে এবং নিজেদের সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে বলে এদিন জানিয়েছেন ফিরহাদ হাকিম।

আরও পড়ুন- অরুণাচলে পাঁচ ভারতীয় অপহৃত, তদন্তে গ্রামে গেল পুলিশ দল

Previous articleঅরুণাচলে পাঁচ ভারতীয় অপহৃত, তদন্তে গ্রামে গেল পুলিশ দল
Next articleসরকারি ফাঁকা পদে নিয়োগ নিয়ম মেনেই, ভ্রান্তি দূর করল স্পষ্ট করল কেন্দ্র