একাধিক মহিলাকে ফ্ল্যাটে নিয়ে আসত! আনন্দপুরকাণ্ডে অবশেষে পুলিশের জালে অভিযুক্ত অভিষেক

আনন্দপুরকাণ্ডে অবশেষে পুলিশের জালে অভিযুক্ত অভিষেক পাণ্ডে। টানা তিনদিন তদন্তের পর মঙ্গলবার রাতে পাকড়াও করা হয় অভিষেক পাণ্ডেকে। আনন্দপুর থানার পুলিশ ও লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগের যৌথ অভিযানে গ্রেফতার করা হয় অভিষেককে। ক্যালকাটা ন্যাশনাল স্কুলের সামনে দিয়ে একটি গাড়িতে যাওয়ার সময়ে তাকে আটক করে পুলিশ।

আরও পড়ুন:আনন্দপুরকাণ্ডে চাঞ্চল্যকর মোড়: অভিযুক্তের সঙ্গে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক ছিল নির্যাতিতার!

জানা গিয়েছে, পুলিশের চোখে ধুলো দিতে এবং গন্তব্য পরিবর্তনের জন্য সায়েন্সসিটির দিকে এক বন্ধুর বাড়িতে যাচ্ছিল অভিষেক। তখনই গাড়ি-সহ গ্রেফতার করা হয় তাকে। এই ঘটনায় আরও কেউ জড়িত কিনা তা দেখা হচ্ছে। তাকে কেউ পালাতে সাহায্য করেছে কিনা তারও খোঁজ নিচ্ছেন তদন্তকারীরা।

আরও পড়ুনঃআনন্দপুর কাণ্ডে তেজস্বিনীকে কুর্নিশ,  চিকিৎসার ব্যয়ভার  বহন করবে রাাজ্য সরকার 

পুলিশ সূত্রে খবর, পুলিশ খুঁজছে জানতে পারার পরই শহরের বিভিন্ন জায়গায় গা ঢাকা দেওয়ার চেষ্টা করে অভিযুক্ত অভিষেক। এরপর মোবাইল টাওয়ার লোকেশন ট্রেস করা হয় অভিযুক্তের পাশাপাশি অভিষেকের মাকেও লালবাজারে টানা জিজ্ঞাসাবাদে ইঙ্গিত মিলতে থাকে তার সম্ভাব্য লুকিয়ে থাকার জায়গাগুলির।

আরও পড়ুন:ফুলবাগানের রেস্তোরাঁয় শ্লীলতাহানির অভিযোগ, গ্রেফতার ৩

উল্লেখ্য, গত শনিবার রাত ৮টা নাগাদ নয়াবাদের ফ্ল্যাটের সামনে থেকে একটি হন্ডাসিটি গাড়ি করে আনন্দপুরে নির্যাতিতাকে ঘুরতে নিয়ে যায় অভিযুক্ত অভিষেক পাণ্ডে। তারা প্রথমে পাটুলির একটি রেস্তোরাঁয় যায়। সেখান থেকে বাইপাসের আশপাশে কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি করে। অজয়নগর, মুকুন্দপুর, কালিকাপুর হয়ে আনন্দপুর। নির্যাতিতা প্রথমে জানিয়ে ছিলেন, অভিযুক্তকে নয়াবাদে বাড়িতে ছাড়ার জন্য বললে সে চৌবাগার দিকে গাড়ি নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। আর বাধা দিতে গেলে চলন্ত গাড়িতেই তাকে মারধর করে অভিষেক।

আরও পড়ুন: মনুয়া-‌কাণ্ডের ছায়া এবার মথুরাপুরে, স্বামীকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার স্ত্রী ও প্রেমিক

তদন্তে নেমে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করতে গিয়ে নির্যাতিতাকে নিয়ে প্রথমে পাটুলির সেই রেস্তোরাঁয় যায়। সেখানকার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে ম্যানেজারকেও। বাইপাসে যে সব সিগন্যালে গাড়িটি দাঁড়িয়েছিল, সেখানকার সিসিটিভি ফুটেজও সংগ্রহ করা হয়েছে। সিসিটিভি ফুটজে থেকে গাড়ির নম্বর উদ্ধার করে আটক করা হয়েছে গাড়িটি।

তদন্তে উঠে আসে নয়া তথ্য। জানা যায়, অমিতাভ বসু নয়,আনন্দপুরকাণ্ডের অভিযুক্তের আসল নাম অভিষেক তিনি পূর্ব যাদবপুরের বাসিন্দা। পাশাপাশি এও সামনে আসে যে নির্যাতিতা এবং অভিযুক্ত পূর্বপরিচিত। ৫ বছরের পরিচয় লুকিয়ে কোন উদ্দেশ্যে পুলিসকে বিভ্রান্ত করেছিলেন নির্যাতিতা তা নিয়ে সোমবার ফের জিজ্ঞাসাবাদ আনন্দপুরকাণ্ডের নির্যাতিতাকে।

আরও পড়ুনঃপারিবারিক অশান্তির জেরে স্ত্রীর গলা কেটে খুন, গ্রেফতার স্বামী

অন্যদিকে, অভিষেকের মা-কে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদের পর তদন্তে উঠে আসে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা যায়, বছর তিনেক আগে অভিষেক পান্ডের বিয়ে হয়েছিল। দু-এক বছর সংসারও করেছিল। কিন্তু তারপর ডিভোর্স হয়ে যায়। স্ত্রীর ওপর তিনি নানাভাবে অত্যাচার করত বলে অভিযোগ। যখন তখন বিভিন্ন মহিলাকে ফ্ল্যাটে নিয়ে আসত সে। উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপনে অভ্যস্ত ছিলেন অভিষেক। ডিভোর্সের আগে থেকেই নির্যাতিতার সঙ্গে আলাপ ছিল তার। ছেলে যে দোষী তা জেরায় স্বীকার করে নেন অভিযুক্তের মা।

এদিকে, ঘটনার রাতে গাড়ির মধ্যে থেকে চিৎকার শুনে সাহসিকতার সঙ্গে নির্যাতিতাকে বাঁচাতে গিয়ে গুরুতর জখম হয়েছিলেন নীলাঞ্জনা চট্টোপাধ্যায়। জখম নীলাঞ্জনাদেবীর অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিতৎসকরা।

 

Previous articleতৃতীয় পর্যায়ে এসে হঠাৎ সমস্যা, অক্সফোর্ডের ভ্যাক্সিনের প্রয়োগ পরীক্ষা বন্ধ রাখা হল
Next articleকরোনার মাঝেই ডেঙ্গু, চলতি বছর ৪৩৬ রোগী হাসপাতালে