মৃত ছেলের সঙ্গে গল্প করেন বাবা

ছবি: প্রতীকি

বরফের কফিনে শুয়ে কথা বলে ছেলে। সান্ত্বনা দেয় বাবা-মাকে। তিয়ান জুয়েমিং মৃত সন্তানের সঙ্গে কথা বলে বেঁচে আছেন কোনওমতে!

ভাবছেন মৃত ছেলে কথা বলে কী করে? বলে বাবা-মায়ের কল্পনায়। ঘটনাটি চিনের চংকিং প্রদেশের হুয়াংলিং গ্রামের।সন্তান-সন্ততি নিয়ে সুখের সংসার ছিল তিয়ানের। অর্থ, ঘর, পরিবার, সুখ সমস্তই ছিল। ছিল ফুটফুটে দুই ছেলে মেয়ে।

আরও পড়ুন : শিবসেনাকে ভীতু, কাপুরুষ বলে কটাক্ষ করলেন কঙ্গনার মা

তিয়ানের স্ত্রী ইয়াং। একদিন রোজগারের আশায় তিয়ান যান শহরে। দু’হাতে রোজগার করে গ্রামে এসে বাড়ি বানান। পাকা বাড়িতে সুখ সমৃদ্ধির অভাব ছিল না। ছেলে-মেয়ে হয় তারা বড় হতে থাকে।গরমের দিন। তিয়ানের মেয়ে ইং ইং বাজারে গিয়েছিল। যখন ফিরল প্রবল শ্বাসকষ্ট। কিছু বোঝার আগে মারা গেল সে। মেয়েকে হারিয়ে ছেলে আকঁড়ে ধরেছিলেন তিয়ান ও তাঁর স্ত্রী ইয়াং আঁকড়ে ধরেছিলেন। ছেলে বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মেয়েকে হারানোর দুঃখ ক্রমশ কমছিল। এমন সময় ঘটল অঘটন।১৮ বছরের কিন তখন ইউয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। হঠাত্ তাঁদের কাছে খবর এসে কিন গুরুতর অসুস্থ। হাসপাতালে ভর্তি। জানা যায় লিউকোমিয়ায় আক্রান্ত সে। লাস্ট স্টেজ। একদিন তার আয়ু ফুরিয়ে যায়।

আরও পড়ুন : ‘তুই কি আমার জন্য মরতে পারবি?’ বান্ধবীর প্রশ্ন, তিনদিন পর উদ্ধার পড়ুয়ার দেহ

কিন্তু মেয়ের পর ছেলেক ছেড়ে বাঁচা অসম্ভব বুঝতে পেরেছিলেন তিয়ান। কিছুতেই পারছিলেন না সত্যি মানতে। ছেলেকে ছাড়া থাকতে পারবেন না বলেই দেহ সংরক্ষণের ব্যবস্থা করেন। বরফ কফিনে।

তারপর থেকে মাঝে মাঝেই ঢাকনা খুলে মৃত ছেলের সঙ্গে কথা বলতেন তিয়ান ও তাঁর স্ত্রী ইয়াং। বিষয়টা গোপন রেখেছিলেন তাঁরা। ক্রমশ তা প্রতিবেশীদের মধ্যে চাউর হয়। ছ’বছর পর ছেলের দেহ এভাবে রেখে দিয়েছেন প্রকাশ্যে স্বীকার করেন তিয়ান। তাঁর কথায়, লোকের মনে হতেই পারে তিনি পাগলামো করছেন।কিন্তু এক্ষেত্রে সন্তান স্নেহ তাঁকে পাগল করে তুলেছিল। সন্তান হারানোর যন্ত্রণা নেওয়ার ক্ষমতা ছিল না তাঁর। তাই এমন করেছেন।

তবে এই ধরনের ঘটনা কি একেবারেই কি নতুন?

কখনও পেনশন আদায়ের স্বার্থে আবার কখনও প্রিয়জনকে ছাড়তে না পারার কষ্টে দেহ ঘরে রাখার নজির রয়েছে। এ রাজ্যেই  ছেলে তার বাবার পেনশন হাতানোর জন্য বাবাকে ডিপ ফ্রিজে বছরের পর বছর ভরে রেখেছিল। মৃতের আঙুলের টিপ ছাপে পেনশন উঠত।আর রবিনসন স্ট্রিটের কঙ্কাল কাণ্ডও কারও অজানা নয়।পার্থ দে ভাই দিদির কঙ্কাল ঘরে রেখে দিয়েছিলেন।তিনি অবশ্য মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন।

 

Previous articleঅর্ণব গোস্বামীকে ‘পুরস্কার’ দিতে গিয়েও পারলেন না অনুরাগ কাশ্যপ, কুণাল কামরা
Next article৫০ বছর আগের অন্ধকার স্মৃতি ফিরবে? বিপদে দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট