অসহায় পরিস্থিতি।
সুদূর কোচবিহারের গ্রাম।
পিতৃহারা বিধান রায় উচ্চমাধ্যমিকে দুরন্ত ফলাফল করেও লেখাপড়া ছাড়ার মুখে।
কারণ তার মা পরিযায়ী শ্রমিক; ভাইও। তারা জয়পুরে কাজ করে টাকা পাঠাতেন। এখানে পড়ত বিধান।
করোনার লকডাউনে কাজ গিয়েছে।
কোনোক্রমে বাড়ি ফিরতে পেরেছেন মা ও ভাই।
কিন্তু বেরোজগার।
ভাই এতোদিন দাদার পড়াশোনার স্বার্থে নিজে মায়ের সঙ্গে কাজ করত। স্বপ্ন ছিল দাদা একদিন দাঁড়িয়ে গেলে পরিবারের হাল ফিরবে।
এখন সব তছনছ।
পড়া ছাড়ার মুখে বিধান।

এই খবর সূত্র মারফত যায় কলকাতায় প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষের কাছে।
তিনি যোগাযোগের চেষ্টা শুরু করেন।
আনন্দবাজারের সাংবাদিক নমিতেষ ঘোষ সেতুবন্ধন করে দেন। ছিলেন স্থানীয় সংগঠক উত্তম ঘোষ। সহযোগিতা করে উত্তরবঙ্গ সংবাদও।


শেষপর্যন্ত কুণালের সঙ্গে ফোনে কথা হয় বিধানের।
কুণাল জানান বিধানকে কলকাতায় একটি আশ্রমে রেখে পড়ানো যেতে পারে। পরিবারের কোনো খরচ হবে না। কিন্তু বিধানের ইচ্ছে বাড়িতে থেকেই পড়ার। সে তার দুতিনবছরের পড়ার খরচের আনুমানিক হিসেব দেয়। কুণাল এরপর নিজের সাংসদ পেনশন হিসেবে আসা একমাসের টাকাসহ সেই প্রয়োজনীয় তিরিশ হাজার টাকা ব্যাঙ্ক ট্রান্সফার করে বিধানকে পাঠিয়ে দেন।
বিধান জানিয়েছে,” আমি খুব উৎসাহিত। আমি পড়ব। এখন ভাবছি এলাকার আরেক ছাত্রের সঙ্গে আমি কলকাতায় গিয়েও পড়তে পারি কিনা।” বিধান রাষ্ট্রবিজ্ঞান অনার্স নিয়ে পড়তে চায়।
কুণাল ঘোষ বলেন,” আমার সাধ্যমত আমি চেষ্টা করেছি। ওরা এখন কলকাতা আসার কথাও বলছে। দেখা যাক। আমার মত আরও বহু মানুষই অন্যের পাশে দাঁড়ান। এইভাবে যদি কিছু পরিবারের মুখে হাসি ফোটানো যায়, চেষ্টা জারি থাকবে।”
