Friday, December 19, 2025

রোহিঙ্গাদের ফেরাতে আসিয়ানের সহায়তা চান বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী

Date:

Share post:

খায়রুল আলম , ঢাকা

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের নিরাপদে মায়ানমারে ফেরাতে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ানের সহযোগিতা চেয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
মায়ানমারের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে শনিবার ভার্চুয়াল মাধ্যমে ২৭তম আসিয়ান রিজিওনাল ফোরামে তিনি বলেন, “ভাগ্যাহত রোহিঙ্গারা যাতে তাদের নিজের ঘরে নিরাপত্তা, সুরক্ষা ও মর্যাদা নিয়ে ফিরে যেতে পারে সেজন্য আসিয়ান রিজিওনাল ফোরাম বন্ধুদের সহায়তা চাইছি। যাতে তারা সেখানে ফের বসতি গড়তে এবং সমাজে একাত্ম হতে পারে, সেজন্য সাহায্যের প্রয়োজন। মাতৃভূমিতে ফিরে গেলে মায়ানমারের উন্নয়নে অংশীদার হতে পারবে তারা।”
রাখাইনে মায়ানমারের সেনাবাহিনীর দমন অভিযানের মুখে ২০১৭ সালের ২৫ অগস্ট থেকে ঘর-বাড়ি ছেড়ে বাংলাদেশে আসতে থাকে রোহিঙ্গারা। এই সংখ্যা কয়েক মাসের মধ্যে সাত লাখ ছাড়ায়। আগে থেকে বাংলাদেশে ছিলেন আরও চার লাখ রোহিঙ্গা। সরকারি হিসেবে দেশের ৩৪ টি ক্যাম্পে ১১ লাখ ২০ হাজার রোহিঙ্গা বসবাস করছেন। তবে বেসরকারি হিসেবে এই সংখ্যা আরও ৫ লাখের বেশি।
আন্তর্জাতিক চাপের মুখে মায়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে ২০১৭ সালের শেষ দিকে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করলেও সেই প্রত্যাবর্তন আজও শুরু হয়নি। গত বছর দু’দফায় প্রত্যাবর্তনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও রাখাইন রাজ্যের পরিবেশ নিয়ে শঙ্কার কথা তুলে ধরে ফিরতে রাজি হননি রোহিঙ্গারা।
রোহিঙ্গাদের বসতিতে তাদের ফেরানোর সহায়ক পরিবেশ তৈরিতে মায়ানমার সরকারের ব্যর্থতার প্রসঙ্গও বক্তৃতায় তুলে ধরেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
মোমেন বলেন, “ভালো প্রতিবেশী হিসাবে গঠনমূলক কূটনীতিতে রোহিঙ্গা সংকট সমাধান করতে চায় বাংলাদেশ। মায়ানমার আমাদের বন্ধু দেশ এবং সে কারণে মায়ানমারের সঙ্গে প্রত্যাবর্তন সংক্রান্ত তিনটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকে আমরা সই করেছি।
“সেখানে যাচাই-বাছাইয়ের ভিত্তিতে তাদেরকে ফেরানোর বিষয়ে রাজি হয়েছিল মায়ানমার। একইসঙ্গে স্বেচ্ছা পুনর্বাসনের সহায়ক পরিবেশ তৈরি এবং বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিতেও একমত হয়েছিল তারা। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আজ পর্যন্ত একজন রোহিঙ্গাও ফিরে যায়নি। সহায়ক পরিবেশ তৈরির বিপরীতে এখনও সংঘাত চালু আছে রাখাইন রাজ্যে।”
তিনি বলেন, “রোহিঙ্গারা মাতৃভূমিতে না ফেরার প্রাথমিক কারণ, তারা নিরাপত্তা ও সুরক্ষার ক্ষেত্রে তাদের সরকারকে বিশ্বাস করতে পারছে না।
আমরা মায়ানমারকে পরামর্শ দিয়েছিলাম, যাতে তারা আস্থার ঘাটতি কমাতে ও আত্মবিশ্বাস তৈরির প্রক্রিয়ায় আসিয়ান, চিন, রাশিয়া, ভারত কিংবা তাদের অন্য বন্ধু দেশের অসামরিক পর্যবেক্ষকদের অন্তর্ভুক্ত করে। এর মাধ্যমে টেকসই প্রত্যাবর্তনের জন্য আস্থার ঘাটতি কমিয়ে আনা যেতে পারে।”
রোহিঙ্গারা যদি উগ্রবাদে জড়িয়ে যায়, তাহলে তা এই অঞ্চলের স্থিতিশীলতার জন্য সহায়ক হবে না।
আসিয়ান রিজিওনাল ফোরামের সভাপতি ও ভিয়েতনামের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফাম বিন মিনের সভাপতিত্বে সম্মেলনে আসিয়ান সদস্য দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে মায়ানমারের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক মন্ত্রী ইউ ক্যাউ তিন উপস্থিত ছিলেন।

spot_img

Related articles

হিজাব বিতর্কে নয়া মোড় ,সরকারি চাকরিতে যোগ দিচ্ছেন না মহিলা চিকিৎসক!

বিহারের সরকারি অনুষ্ঠানে মহিলা চিকিত্‍সকের মুখ থেকে হিজাব টেনে নামিয়ে দিয়ে বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ...

কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো-র সংবাদপত্রের দফতরে হামলা! 

বাংলা দৈনিক প্রথম আলো-র দফতরে হামলা! বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে একদল অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তি সংবাদপত্রটির দফতরে ঢুকে একাধিক তলায় ব্যাপক...

জলপাইগুড়ির আকাশে ভিনগ্রহীদের যান! রহস্যময় আলো ঘিরে বাড়ছে জল্পনা

বৃহস্পতিবার রাতের আকাশে হঠাৎ রহস্যময় আলো ঘিরে চাঞ্চল্য জলপাইগুড়ি জেলায় (Jalpaiguri District)। কেউ বলছেন উল্কা কেউ বলছেন ইউএফও...

এসআইআর প্রক্রিয়ায় নজির! প্রথমবার ভোটারকে শো-কজ কমিশনের

ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনী (এসআইআর) প্রক্রিয়ায় এই প্রথম কোনও ভোটারকে শো-কজ নোটিশ পাঠাল নির্বাচন কমিশন। অভিযোগ, এক...