Saturday, July 5, 2025

মহামারিতে আর্থিক সঙ্কটে প্লাস্টিকের ফুল-মালা তৈরিতে যুক্ত হুগলির ব্যবসায়ী ও কারিগররা

Date:

Share post:

রাত পোহালেই মহালায়া, মাতৃ বন্দনার শুরু । অথচ চোখে ঘুম নেই হুগলির একশ্রেণীর ব্যবসায়ী ও কারিগরের। যারা সারা বছর তাকিয়ে থাকেন পুজোর এই কদিনের জন্য। কারণ, তারা সবাই প্লাস্টিকের ফুলমালা তৈরি করেন। কিন্তু মহামারির দৌলতে, যেখানে পুজো হওয়াটাই দায় হয়ে উঠেছে সেখানে শিকেয় প্লাস্টিকের ফুলমালার ব্যবসা। তাই মনমরা হুগলির কয়েক হাজার কারিগর ও ব্যবসায়ী। কারণ, প্লাস্টিকের ফুল মালা এবারের পুজোয় ব্রাত্যর তালিকায় ।

কিন্তু অন্যান্য বছর ছবিটা থাকে অন্যরকম। বিশ্বকর্মা পুজোর প্রায় মাসখানেক আগে থেকেই ভোর চারটা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত নিরলস পরিশ্রম করে যান একশ্রেণীর মহিলা কারিগর। লক্ষ্য একটাই দুর্গাপুজোর দিনগুলোতে তাদের মুখে হাসি ফুটবে। ব্যবসা ভালো হলে পরিবারের আর্থিক সমস্যা কদিনের জন্য কিছুটা হলেও মিটবে। কিন্তু করোনার আবহে এবার সব ওলট-পালট হয়ে গিয়েছে।
কিন্তু কেন এই পরিস্থিতি ? সেই প্রশ্ন খুঁজতে গিয়ে উঠে এলো বেশ কিছু তথ্য। কারিগররা নিজেরাই জানিয়েছেন , অন্যান্য বছর বিশ্বকর্মা পুজোয় গাড়ি সাজানোর জন্য, কারখানা সাজানোর জন্য এই প্লাস্টিকের ফুলমালার চাহিদা থাকে তুঙ্গে। কিন্তু এবছর লকডাউনের জেরে গাড়ি বন্ধ থাকায়, অধিকাংশ কলকারখানা বন্ধ থাকায় সেই ব্যবসা লাটে ওঠার জোগাড়। এরই পাশাপাশি আরও একটি তথ্য তারা দিয়েছেন। এই প্লাস্টিকের ফুলমালা তৈরি করতে এতদিন তারা ব্যবহার করতেন বিভিন্ন চিনা দ্রব্য। কিন্তু লাদাখ পরিস্থিতি তাতে বাধ সেধেছে। চিনা দ্রব্য বর্জনের ফতোয়ায় তারা নির্ভর করেছিলেন দেশীয় দ্রব্যের ওপর। প্রকৃতপক্ষে লকডাউনের জেরে সেটাও পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে কোনওভাবেই পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাচ্ছে না ।
এই ব্যবসায়ীদের অধিকাংশই জানিয়েছেন, তারা ঋণ নিয়ে অনেকেই ব্যবসা শুরু করেছেন। কিন্তু সেই ঋণের টাকা এবার কিভাবে পরিশোধ করবেন তা ভাবতেই চক্ষু চড়কগাছ। কারণ হিসেবে তাদের যুক্তি, শুধুমাত্র আমাদের রাজ্যে নয় এই প্লাস্টিকের ফুলমালার চাহিদা দেশের অন্যান্য রাজ্যেও। উৎসবের মরসুমে তা রফতানি করে কিছুটা লাভের মুখ দেখতেন এই ব্যবসায়ীরা। লকডাউন সেই আশাতেও জল ঢেলে দিয়েছে ।

আরও পড়ুন- মস্কোর বৈঠকের আগে লাদাখ সীমান্তে ১০০ থেকে ২০০ রাউন্ড গুলি বিনিময়!
ফলে আর্থিক সঙ্কটের মুখে হুগলি জেলার তারকেশ্বর দশঘড়া এলাকার ব্যবসায়ী ও কারিগররা। বিগত এক দশক ধরে যাদের রুটি-রুজির জোগান দেয় এই প্লাস্টিকের ফুলমালা, তারা এবার রীতিমতো বিপাকে। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া এই ব্যবসায়ী ও কারিগররা জানিয়েছেন, সরকারি সাহায্য পেলে হয়তো এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হতো। কিন্তু এখন তারা কি করবেন তা ভেবেই দিশেহারা ।

spot_img

Related articles

ভাষার লড়াই মিলিয়ে দিল! কুড়ি বছর পর এক মঞ্চে রাজ ও উদ্ধব ঠাকরে

রাজনৈতিক বিরোধ আলাদা করে দিয়েছিল দুই ভাইকে। শেষ পর্যন্ত আঞ্চলিক ভাষার সমর্থনে লড়াই নিয়ে এক নীতি দুই ভাইয়ের...

পুলিশের হাতে ‘বেআইনি আটক’! বিজেপির ওড়িশার বিরুদ্ধে আদালতে পরিযায়ী শ্রমিক পরিবার

পুলিশ প্রশাসনের যোগ্য সহযোগিতায় একবার মহারাষ্ট্র (Maharashtra) থেকে বাংলার শ্রমিকদের বাংলাদেশ সীমান্ত পার করে প্রতিবেশী দেশে পাঠিয়ে দেওয়া...

সপ্তাহ শুরুর ভোগান্তি জারি শেষেও! ফের ব্যাহত মেট্রো পরিষেবা

মেট্রোর নিশ্চয় যাত্রা যে আর নিশ্চিত নয়, তা স্পষ্ট পরিষেবাতেই। কখনও লাইনে জমা জল, কখনও সিগনাল বিভ্রাট, কখনওবা...

ভোটমুখী বিহারে চলল গুলি! খুন প্রাক্তন বিজেপি নেতার ব্যবসায়ী বাবা

ভোট যত এগিয়ে আসছে দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্য তত বাড়ছে নীতীশের (Nitish Kumar) বিহারে। দুষ্কৃতীদের নিশানা থেকে বাদ যাচ্ছে না...