এবার রাফাল-চুক্তি নিয়ে প্রশ্ন তুললো CAG রিপোর্ট, কপালে ভাঁজ কেন্দ্রের

রাফাল নিয়ে এবার বড়সড় বিপাকে মোদি সরকার৷

রাফাল যুদ্ধবিমান চুক্তি নিয়ে CAG বা কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল এবার কাঠগড়ায় তুললো নরেন্দ্র মোদি সরকারকে৷

CAG-এর প্রশ্ন, ফরাসি বিমান নির্মাতা সংস্থা দাসো অ্যাভিয়েশনের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদির সরকারের ‘অফসেট -চুক্তি’ প্রক্রিয়া এখনও সম্পন্ন হয়নি কেন ? ‘অফসেট -চুক্তি’-র অর্থ, দেশীয় সংস্থাকে প্রযুক্তি হস্তান্তর করে যন্ত্রাংশ নির্মাণের চুক্তি৷

কঠোর গোপনীয়তায় মোদি সরকার ফাঁকা
সংসদের বাদল অধিবেশনের একেবারে শেষপর্বে পেশ করেছে এই CAG রিপোর্ট। অভিযোগ উঠেছে, বড় মাপের রাফাল-গলদ ঢাকা দেওয়ার জন্যই বিজেপি সরকার কৌশলে শেষ মুহুর্তে রিপোর্ট পেশ করেছে৷ এমন সময়ে বিতর্কিত CAG- রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে যাতে
সংসদে বিতর্কের অবকাশ থাকলো না৷

CAG জানিয়েছে, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা DRDO বা ‘ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের সঙ্গে সম্পাদিত ওই ‘অফসেট চুক্তি’র শর্ত এখনও দাসো অ্যাভিয়েশন পূরণ করেনি৷ রাফাল কেনার শর্ত অনুযায়ী চুক্তির মোট অঙ্কের একাংশ প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ হিসেবে ভারতে আসার কথা। কিন্তু এখনও ফরাসি সংস্থাটির তরফে ‌এই শর্ত পূরণ করা হয়নি৷ এদিকে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে, বরণ করে ভারতে আনা হয়েছে রাফাল৷

২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে প্রায় ৫৮,০০০ কোটি টাকার বিনিময়ে ৩৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান ও তাতে ব্যবহার করা হবে এমন অস্ত্র কেনার জন্য দাসো অ্যাভিয়েশন ও ইউরোপীয় ক্ষেপণাস্ত্র নির্মাতা সংস্থা MBDA-র সঙ্গে কেন্দ্রের আলোচনা চূড়ান্ত হয়েছিল। এরপর সই হয় চুক্তি।

CAG-র রিপোর্ট বলছে, DRDO হালকা ওজনের যুদ্ধবিমানের জন্য ‘কাবেরী’ ইঞ্জিন তৈরি করতে প্রযুক্তিগত সাহায্য চেয়েছিল। দাসো এবং MBDA সংস্থা প্রাথমিক ভাবে প্রস্তাব দিয়েছিল, চুক্তির শর্তের ৩০ শতাংশ পূরণ করতে তারা DRDO-কে উন্নত মানের প্রযুক্তি দেবে। সংসদে পেশ করা রিপোর্টে CAG জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত দাসো এই প্রযুক্তিগত সাহায্য দেয়নি। এমনকি, এ বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলেওনি।

আরও পড়ুন- নজিরবিহীন! স্বামী-স্ত্রী একইসঙ্গে হলেন মাদ্রাজ হাইকোর্টের বিচারপতি

প্রসঙ্গত, রাফাল চুক্তি সম্পাদিত হওয়ার পরেই তৎকালীন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী অভিযোগ করেছিলেন, মোদি সরকারের সুপারিশেই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ‘HAL’কে বঞ্চিত করে অনিল আম্বানির রিলায়্যান্স ডিফেন্সের সঙ্গে একটি অফসেট চুক্তি করেছে দাসো। এই পরিস্থিতিতে CAG রিপোর্ট সামনে আসায় বিষয়টি ফের রাজনীতির কেন্দ্রে বিতর্ক হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
CAG অভিযোগ করেছে, একাধিক ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, অনেক বিদেশি সংস্থা চুক্তি সইয়ের সময় দেশীয় সংস্থাকে বরাত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও সেই শর্ত পূরণ করেনা৷ CAG প্রতিরক্ষা মন্ত্রককে পরামর্শ দিয়েছে, চুক্তির সময় সেই চুক্তি বাস্তবায়নের সম্ভাবনা কতদূর তা ভাল ভাবে পর্যালোচনা করা দরকার৷

এদিকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সাফাই দিয়েছে, দাসোর তরফে ইতিমধ্যেই না’কি ‘বার্তা’ দেওয়া হয়েছে করোনা পরিস্থিতির কারণে অফসেট-চুক্তি পূরণে কিছুটা দেরি হচ্ছে।

আরও পড়ুন- কোভিড পরিস্থিতিতে সুরক্ষা সামগ্রী রফতানিতে বাংলাদেশের সাফল্য

Previous articleকোভিড পরিস্থিতিতে সুরক্ষা সামগ্রী রফতানিতে বাংলাদেশের সাফল্য
Next articleযাত্রী সুবিধায় এবার ট্রেনের সংখ্যা বাড়াচ্ছে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ