ফের নৃশংস যোগীর রাজ্য, ভাদোহির মাঠ থেকে উদ্ধার কিশোরীর ক্ষতবিক্ষত দেহ

যোগীর রাজ্যে দিন দিন বেড়েই চলেছে নারী নির্যাতনের ঘটনা। প্রথমে হাথরাস, তারপর বলরামপুরে পরপর ধর্ষণ-হত্যাকাণ্ড নিয়ে যখন তোলপাড় গোটা দেশ, তারই মাঝে সামনে এল আরও এক নৃশংস হত্যার ঘটনা। উত্তরপ্রদেশেরই ভাদোহিতে ১৪ বছর বয়সী এক দলিত কিশোরীর দেহ পাওয়া গেল মাথা থেঁতলানো অবস্থায়। একটি মাঠ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে তার ক্ষতবিক্ষত দেহ। নির্মম অত্যাচারের জেরে সেই মেয়েটিরও মৃত্যু ঘটেছে।

পুলিশ সূত্রে খবর, ওই কিশোরী, ভাদোহির গোপালগঞ্জ থানা এলাকার চকরাজারাম তিওয়ারিপুর গ্রামের বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার সকালে, সে শৌচকর্ম করতে বাড়ির অদূরেই একটি মাঠে গিয়েছিল। অভিযোগ, সে সময়ই তার উপর অত্যাচার চালায় দুষ্কতীরা। দেহটি প্রথম দেখতে পায় তার ভাই। সেই খবর দেয় পরিবারকে। কিশোরীর পরিবারের অভিযোগ, নৃশংস ভাবে খুনের আগে তাকেও ধর্ষণ করা হয়েছে। কিশোরীর পরিচয় লুকিয়ে রাখার জন্যই, পাথর দিয়ে তার মুখটা বিকৃত করা হয়েছিল। এমনটাই প্রাথমিক অনুমান পুলিশের।

ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ। ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ ও ক্রাইম ব্রাঞ্চ আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্তের সূত্র সংগ্রহ করছেন। পুলিশ সুপার রামবদন সিংহ জানিয়েছেন, দেখে মনে হচ্ছে ধর্ষণের পরেই নাবালিকাকে খুন করা হয়েছে। নাহলে খুনের অন্য কোনও কারণ নেই। তার বয়স ১৪ বছর। কারও সঙ্গে শত্রুতা ছিল না তার। তদন্ত শুরু হয়েছে। কিশোরীর মেডিক্যাল রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরেই, ধর্ষণের বিষয়টি স্পষ্ট হবে।

এদিকে এরই মধ্যে সামনে এসেছে, উত্তরপ্রদেশের আরও দুই ঘটনা। আজমগঢ় ও বুলন্দশহরে ধর্ষণের শিকার হয়েছে আরও দুই নাবালিকা। বুলন্দ শহরে যে নাবালিকা ধর্ষিত হয়েছে সে চোদ্দোর কিশোরী। আজমগঢ়ের ধর্ষিতার বয়স মোটে আট।

আরও পড়ুন : যোগী সরকারের রসিকতা, হাতরসের তরুণী ধর্ষিতই হননি!

প্রসঙ্গত, চলতি সপ্তাহেই দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে মৃত্যু হয় উত্তরপ্রদেশের হাথরাসে গণধর্ষিতা ১৯ বছরের এক দলিত কিশোরীর। অভিযোগ, তাঁকে নির্মমভাবে অত্যাচারের পর গণধর্ষণ করে চার উচ্চবর্ণের যুবক। তবে শুধু তা করেই ক্ষান্ত থাকেনি তারা। কিশোরীর দুই পা এবং একটি হাত অসাড় হয়ে গিয়েছিল। তাঁর জিভ কাটা ছিল বলেও অভিযোগ। টানা ১৫ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াইয়ের পর সোমবার ওই কিশোরীর মৃত্যু হয়। পরিবারের অনুমতি ছাড়াই একপ্রকার জোর করে দেহ সৎকার করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের বিরুদ্ধে। এরই মধ্যে পুলিশ পাল্টা দাবি করে, ধর্ষণই হয়নি নির্যাতিতার সঙ্গে। অস্বীকার করা হয় মৃতার মৃত্যুকালীন জবানবন্দিও।

ঘটনার পরেই বিক্ষোভ শুরু করে কংগ্রেস। বৃস্পতিবার হাথরাসে যাওয়ার পথে গ্রেফতার করা হয় কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে। আটক হন প্রিয়াঙ্কা গান্ধীও। কিছুক্ষণ পরে তাঁদের দিল্লিতে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। ভাদোহির ঘটনা সামনে আসার পর ফের টুইট করে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছে তারা।

আরও পড়ুন : প্রথমে ধাক্কা, হাথরাসমুখী রাহুলকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ

আর এই সব কিছুর কারণেই যোগীর রাজ্যে মহিলা তথা নাবালিকাদের নিরাপত্তা নিয়ে উঠেছে বিস্তর প্রশ্ন। প্রসঙ্গত, এনসিআরবি-র রিপোর্টে অনুযায়ী, মহিলাদের ওপর অত্যাচারের ঘটনায় শীর্ষে নাম উত্তরপ্রদেশের। শুধু তাই নয়, মহিলাদের উপর অ্যাসিড হানা, নারীদের অপহরণ ও শ্লীলতাহানির ঘটনা সব চেয়ে বেশি ঘটেছে যোগীর রাজ্যেই।২০১৮-১৯ সালে, সেরাজ্যে নারী নির্যাতনের অভিযোগে ৫৯ হাজার ৮৫৩টি মামলা রুজু হয়েছিল। তার মধ্যে ধর্ষণের অভিযোগ ৩০৬৫টি। যদিও সূত্রের খবর, আসল সংখ্যাটা আরও কয়েক গুন বেশি।

Previous articleপিনকনকর্তাকে আড়াল? বিচারকের রোষের মুখে জেলকর্তারা
Next articleBreaking: কোভিড আক্রান্ত সস্ত্রীক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প