তাঁর সাংসদ তহবিলের অর্থে নতুন রূপে বজবজ ক্রিকেট অ্যাকাডেমি, উদ্বোধনে কুণাল

সোমনাথ বিশ্বাস, বজবজ : তিনি শিলান্যাস নয়, উদ্বোধনে যেতেই পছন্দ করেন। সেই পথ ধরেই এবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার বজবজের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্নপূরণ করলেন রাজ্যসভার প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ কুণাল ঘোষ। তাঁর সাংসদ তহবিলের অর্থ থেকে তৈরি স্পোর্টস অ্যাকাডেমির ও ক্রিকেটের নতুন পরিকাঠামোর উদ্বোধন করলেন রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ।

বজবজ পুরসভার মাঠে আজ থেকে ২৭ বছর আগে ২ অক্টোবর জাতির জনক মহত্মা গান্ধীর জন্মবার্ষিকীতে একটি অ্যাকাডেমির যাত্রা শুরু হয়েছিল। যেখানে খুদে ক্রিকেটারেরা কোচিং নিতে আসে আগামীর শচীন- সৌরভ ধোনি-কোহলি হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে। কিন্তু বাধা হয়েছিল অর্থ। যার ফলে এতবছরেও তৈরি করা যায়নি উন্নত পরিকাঠামো। কুনাল ঘোষের সাংসদ তহবিলের অর্থে অবশেষে তা বাস্তবের রূপ পেল। স্বপ্নপূরণে খুশি খুদে ক্রিকেটাররা। খুশি তাদের অভিভাবকরা । আর পুজোর আগে এমন উপহার পেয়ে খুশি গোটা বজবজবাসী।

নতুন পরিকাঠামোর উদ্বোধনে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ। এদিন উদ্বোধনে এসে ক্রীড়াপ্রেমী কুণাল নিজেও আপ্লুত। তিনি বলেন, “গান্ধীজীর জন্মজয়ন্তীতে এমন একটি ক্রিকেট অ্যাকাডেমির পরিকাঠামোর উদ্বোধন করতে পেরে আমি গর্বিত। গান্ধীজী সর্বধর্মের কথা বলতেন। আর খেলাধুলা হলো সর্বধর্মের অন্যতম একটি মাধ্যম। দীর্ঘ ২৭ বছর ধরে পথ চলা একটি ক্রিকেট অ্যাক্যাডেমির সূচনা হয়েছিল এই গান্ধী জয়ন্তীতেই। এটা সত্যিই জাতির জনককে বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন।”

কুণাল ঘোষ আরও জানান, “এখানকার সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় একের পর এক উন্নয়নমূলক কাজ করে চলেছেন। মানুষের আপদে বিপদে সঙ্গে থাকেন। তিনি মডেল এম পি। আমি রাজ্যসভার সাংসদ থাকাকালীন কিছু কাজ করার চেষ্টা করেছি। এখানকার ক্রিকেট অ্যাকাডেমির জন্য কিছু করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি।”

আরও পড়ুন-ফুরফুরা শরীফে পীরজাদার কাছে কুণাল ঘোষ

এরপর কেন্দ্রীয় সরকারকে একহাত নিয়ে কুণাল ঘোষ বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার করোনার অজুহাতে দু’বছরের জন্য সাংসদ তহবিলের বরাদ্দ অর্থ বন্ধ করে দিয়েছে। সাংসদরা তাদের তহবিলের অর্থ দিয়ে পিকনিক করেন না। মানুষের উন্নয়নের জন্য কাজ করেন। সেই উন্নয়নকে স্তব্ধ করে দিল কেন্দ্রীয় সরকারের শাসন ক্ষমতায় থাকা কর্তাব্যক্তিরা। সাংসদ তহবিলের অর্থ আটকে দিলে পরিকাঠামো, উন্নয়ন কীভাবে হবে?”

এখানেই শেষ নয়। তিনি আরও বলেন, “উন্নয়নের ইস্যুর বাইরে গিয়ে অন্য কিছুতে করতে চায় কেন্দ্র। ধর্মীয় বিভাজনে মত্ত তারা। ক্রিকেট খেলার মাঠে রাম ব্যাট করবে, রহিম বল করবে এটাই আমাদের দেশের কৃষ্টি-সংস্কৃতি। কেউ কোচিং নিতে এলে তার কাস্ট সার্টিফিকেট দেখে বিচার করা হয় না।”

এদিনের অনুষ্ঠানে কুণাল ঘোষ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বজবজের তৃণমূল বিধায়ক অশোক দেব। এই অশোক দেবের নেতৃত্বেই একটা সময় ছাত্র রাজনীতিতে আলোড়ন ফেলে ছিলেন কুণাল ঘোষ। আজকের সেই কুণালের সাংসদ তহবিলের অর্থে তাঁর বিধানসভা অঞ্চলে ক্রিকেট অ্যাকাডেমির উন্নয়নের কাজকে কুর্নিশ জানালেন অশোকবাবু।

বজ বজ পুরসভার চেয়ারপার্সন ফুলু দে, গৌতম দাশগুপ্ত, দীপক ঘোষ, কৌশিক রায়, মহম্মদ মনসুর, অভিজিৎ দাস, লুৎফার হোসেনরাও কুণাল ঘোষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেছেন।

আর যাঁর হাতধরে বজবজ ক্রিকেট অ্যাকাডেমির পথ চলা শুরু, সেই তাপস ঘোষ জানান, কুনাল ঘোষের সাংসদ তহবিলের আর্থিক সাহায্য ছাড়া এই অ্যাকাডেমির উন্নয়ন সম্ভব ছিল না। তিনি আমাদের ডাকে সাড়া দিয়ে যেভাবে পাশে দাঁড়ালেন, তার জন্য বজবজের সমগ্র ক্রীড়াপ্রেমী মানুষের পক্ষ থেকে আমি ওনাকে ধন্যবাদ জানাই।” ছিলেন যুবনেতা সায়ক ঘোষ , সমাজসেবী দেবাশিস চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ।

আরও পড়ুন-জলজঙ্গলের রহস্য নিয়ে প্রকাশিত কুণাল ঘোষের “বাঘবিধবা”

Previous articleকলেজে বসে পরীক্ষা কেন? কর্তৃপক্ষের কাছে জবাব চাইল উচ্চ শিক্ষা দফতর
Next articleরাস্তার প্রস্তুতকারককে তিন বছর রক্ষনাবেক্ষণের দায় নেওয়ার নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর