প্রেমের ফাঁদে ফেলে সর্বস্ব লুট! প্রতারণা চক্রের চারজন জালে

খায়রুল আলম, ঢাকা

সোশ্যাল মিডিয়ার ফাঁদে ফেলে অনেককেই প্রেমে ফাঁসিয়েছেন তারা।এই প্রেমের ফাঁদে পড়ে সর্বস্বান্ত হয়েছেন অনেক তরুণ। কেউ রূপের মোহে পড়ে বিবাহিত নারীকে বিয়ে করে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। আবার অনেকে প্রেমের ফাঁদে পা দিয়ে ব্ল্যাকমেলের শিকার হচ্ছেন।
জহিরুল ( ছদ্মনাম) দীর্ঘদিন ধরে কানাডার টরেন্টোতে বসবাস করছেন। সেখানে ফেসবুকে পরিচয় হয় একই এলাকার তরুণী শিউলির (ছদ্মনাম) সঙ্গে। প্রবাসী জীবন তারপর একই এলাকার তরুণী হওয়াতে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে দুজনের মধ্যে । কিছুদিন পর প্রেমিকাকে সশরীরে দেখার আশায় মইনুল চলে আসেন বাংলাদেশে। তঅপাের মনেল ইচ্ছাপূরণ হয়। তার বিয়ের প্রস্তাবে রাজি হয় শিউলিও। প্রবাসীর আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে বিয়ের পণ ধার্য করা হয় দশ লাখ টাকা। ঘরোয়াভাবেই বিয়ে হয় মাইনুল ও শিউলির। কিন্তু বিয়ে করার পর বুঝতে পারেন যে তিনি প্রতারিত হয়েছেন। দিন কয়েক কাটতেই নারী নির্যাতনের অভিযোগ এনে তার বিরুদ্ধে মামলা করে শিউলি।অবশেষে মান বাঁচাতে ১০ লাখ টাকায় রফা হয়। এক মাসও স্থায়ী হয়নি সেই বিয়ে।
জানা গিয়েছে, প্রতারক চক্রের এসব মেয়েরা বিভিন্নজনের কাছে বিভিন্ন ছদ্মনাম ব্যবহার করতো।
এছাড়াও এই চক্রের প্রতারণার প্রধান টার্গেট হলো কমবয়সী বাস যাত্রী। তারা বাসের সহযাত্রীর সাথে আলাপচারিতার ছলে কৌশলে মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে। পরবর্তীতে সেই নম্বরে ফোন করে কথার জালে ফাঁসিয়ে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি করে।
এরপর রীতিমতো ছক কষে কোন নির্জন স্থানে ঘুরতে যাওয়ার প্রস্তাব দেয়। ওই ব্যক্তি সেখানে যেতে রাজি হলে অনেক ঘোরাঘুরির পর তাকে চক্রের নির্দিষ্ট জায়গায় নিয়ে যায়। এরপর অন্তরঙ্গ মূহূর্তে ওই ব্যক্তিকে ব্লাকমেল করে তার সাথে থাকা সবকিছু হাতিয়ে নেয়।
এভাবেই কৌশলে বাসা বাড়িতে ডেকে নিয়ে ফাঁদে ফেলে সর্বস্ব হাতিয়ে নেয় বন্দরনগরী চট্টগ্রাম থেকে এমন একটি চক্রের চার সদস্যকে আটক করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন ( র‌্যাব )।
বৃহস্পতিবার চান্দগাঁও কার্যালয়ে তাদের আটকের বিষয়টি জানান র‌্যাব-৭ এর প্রধান লে. কর্নেল মো. মশিউর রহমান জুয়েল। আটক চার জন হলেন- বোয়ালখালি থানাধীন গোমদণ্ডী ফুলতল এলাকার ফয়েজুল ইসলামের মেয়ে শাকিলা আক্তার (৩১), কাউছার পারভিন সেপু (২৯) ও ফারজানা আক্তার প্রকাশ বেনু এবং বাকলিয়া থানার চাক্তাই এলাকার জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে মো. সানি।
র‌্যাব-৭ এর চান্দগাঁও ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার কাজী মোহাম্মদ তারেক আজিজ বলেন, গত ১৯ সেপ্টেম্বর একজন ভুক্তভোগী র‌্যাবের কাছে অভিযোগ করেন। এর আগেও কয়েকজন এমন প্রতারণার অভিযোগ করেছিলেন।
অভিযোগের তদন্ত করতে গিয়ে র‌্যাব এই চক্রের প্রতারণা সম্পর্কে জানতে পারে।তারা তদন্তে দেখতে পায়, অভিযুক্তরা দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ব্যক্তিকে ফাঁদে ফেলে কৌশলে সর্বস্ব হাতিয়ে নিচ্ছে। এ চক্রে আরও সদস্য রয়েছে। তাদের আটকের চেষ্টা চলছে।

 

Previous articleভারসোভা থানায় টানা ৮ ঘণ্টা জেরা পরিচালক অনুরাগ কাশ্যপকে
Next articleকোভিডে আক্রান্ত, মন্ত্রী তাপস রায় মেডিক্যালে ভর্তি