আসন্ন বিধানসভার জন্য আগাম প্রার্থী ঘোষণা নিয়ে বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন রাজ্যের গ্রন্থাগার ও জনশিক্ষা দফতরের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। তিনি কটাক্ষ করে বলেন, “পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় আমি মুখ্যমন্ত্রীকে বলেছিলাম রাজ্য জুড়ে এত কাজ হয়েছে, উন্নয়নে নিরিখে রাজ্যে ভোট হবে। এখানে ‘চড়াম চড়াম’ আর ‘মশারি টাঙানো’-র কোনও প্রয়োজন নেই”। এরপরেই সিদ্দিকুল্লা বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুব্রত বকসি আছেন। সময় হলে তাঁরাই প্রার্থী ঘোষণা করবেন। কিন্তু আগাম প্রার্থী ঘোষণা করে দলের মধ্যে ‘অন্তর্দ্বন্দ্ব’ ও ‘গৃহযুদ্ধ’ লাগানোর চেষ্টা করছেন তিনি। এটা খুব নিন্দনীয় কাজ বলেও মন্তব্য করেন সিদ্দিকুল্লা। তাঁর কথায়, এক সময় অনুব্রত মণ্ডলই দেখিয়েছিলেন কীভাবে ভোটে জিততে হয়। তাঁর এই আস্ফলন খুব মারাত্মক। “দলনেত্রী ঠিক করবেন কে প্রার্থী হবেন। উনি কে এই সমস্ত বলার।”

গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে মঙ্গলকোটে আউসগ্রাম-কেতুগ্রাম বিধানসভার সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে অনুব্রতর সঙ্গে সিদ্দিকুল্লার দূরত্ব তৈরি হয়। শুক্রবার, বীরভূমের যাত্রা মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে জমিয়তে উলামায়-এ-হিন্দের জেলা প্রতিনিধি সম্মেলন ছিল। সেখানেই এই অভিযোগ করেন সিদ্দিকুল্লা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা সভাপতি আনিসুর রহমান-সহ অন্যান্য নেতৃত্ব।

পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোট, আউসগ্রাম ও কেতুগ্রাম বিধানসভা হিসেবে বীরভূমের সঙ্গে যুক্ত। সিদ্দিকুল্লার মতে, এই তিন জায়গার পরিস্থিতি আরও জটিল করেছেন বীরভূমের নেতা এতে দলের লাভ হবে না। মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে সভামঞ্চ থেকে অনুব্রতর ‘অপদার্থ’ বলার প্রসঙ্গে সিদ্দিকুল্লা বলেন, “তিনি নিজেকে কি ভাবেন? জমানো বদলাচ্ছে। জনগণ উত্তর চাইলে তখন কঠিন হয়ে যাবে”।

যদিও মন্ত্রী তথা মঙ্গলকোটের বিধায়ক সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরীকে গুরুত্ব নিতে নারাজ বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। তিনি বলেন, “কোনো গুরুত্ব নেই ওর। ওই তিন বিধানসভার গত লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলই বলে দেবে এই অভিযোগের উত্তর”। তবে, এই চাপানউতোরে শাসকদলের অন্দরে ক্ষোভ জমছে বলে মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।