বেলেঘাটায় তৃণমূল সম্মেলনে বিধায়ককে বয়কট পাঁচ পুরপিতার

রবিবার সুকান্ত সদনে তৃণমূলের বেলেঘাটা বিধানসভা কেন্দ্রের কর্মী সম্মেলন ছিল। এটি ডেকেছিলেন বিধায়ক পরেশ পাল। কিন্তু সূত্রের খবর, তাতে মাত্র দুজন বিদায়ী কাউন্সিলর ছিলেন। কিন্তু ছিলেন না জীবন সাহা, অলোকানন্দা দাস, পবিত্র বিশ্বাস, রাজেশ খান্না, ইকবাল আমেদরা। বেলেঘাটার কিছু কর্মীর সঙ্গে বাইরের কিছু লোকও ছিলেন। স্থানীয় সংগঠক ও পরেশ পালের ঘনিষ্ঠ রাজু নস্কর ছিলেন সক্রিয়ভাবে। বহু ওয়ার্ডের বিদায়ী যুব সভাপতিদেরও দেখা যায়নি। কেন বেলেঘাটার কর্মীসম্মেলনের হাল এমন হল, তা নিয়ে দলে ব্যাপক জল্পনা চলছে। একটা সময়ে পরেশ ছিলেন জনসংযোগে পটু। কিন্তু দলীয় সূত্রের খবর, ক্রমশ গোষ্ঠীবাজিতে জড়িয়ে তিনি নিজের ক্ষতি করেছেন। তিনি বড় ঘনঘন নেতা বদলান। যখন যে ক্ষমতায়, তাকে সম্বর্ধনা ; আর একটু এদিকওদিক হলেই নেতা পাল্টানোয় পরেশ নিজের গ্রহণযোগ্যতার ক্ষতি করেছেন। তিনি যার কাছে যান, সেই নেতাও পিছনে হেসে বলেন,” আমার চেয়ার না থাকলে পরেশও নেই।” ফলে একসময়ে যে পরেশ ছিলেন জনসংযোগের মডেল, তাঁকে এখন উপদলের নেতা হিসেবে দেখা যাচ্ছে।

এক নেতার পরামর্শে শীর্ষনেত্রীর বাড়িতে রান্না করা খাবার নিয়ে গিয়ে সহানুভূতি টানার চেষ্টা করলেও নিজের এলাকায় তিনি ভারি অপ্রিয় হয়ে আছেন। কিন্তু পরেশ পালের মত নেতার এমন হওয়ার কথা ছিল না। গত পুরভোটে নিজের বিধানসভার ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে কংগ্রেসের প্রকাশ উপাধ্যায়ের কাছে গোহারা হেরেছিলেন পরেশ। বিধায়কের এমন হার সাধারণত দেখা যায় না। কিন্তু তারপরেও ড্যামেজ কন্ট্রোলে মন দেননি তিনি। সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় আর ফিরাদ হাকিমের কাছে গিয়ে উপরতলা ঠিক রাখেন। আর এলাকা সামলে রাখেন রাজু নস্কর। দক্ষ সংগঠক রাজু ছাড়া পরেশ পালের এখন তেমন কিছুই নেই। রাজুই সামলে রেখেছেন। বেলেঘাটায় সংখ্যালঘু ভোট তৃণমূল পায় বলে পরেশের সম্মানরক্ষা হয়ে যায়। এহেন অবস্থায় রবিবার বেলেঘাটার কর্মীসম্মেলনের ব্যাপক অনুপস্থিতি উত্তর কলকাতা শুধু নয়, উপরমহলেও নজর কেড়েছে। অভিযোগ, পরেশ কঠিন সময়ে যাদের কাছ থেকে উপকার পান, তাদের ভুলে নতুন ক্ষমতাশালীর ঘনিষ্ঠ হওয়ার রাজনীতিতেই হোঁচট খাচ্ছেন তিনি। ঘনিষ্ঠ অপু মুখোপাধ্যায় এবং রাজু নস্কর ছাড়া পরেশ পালের এখন এগোনো মুশকিল। তুলনায় বেলেঘাটা এলাকায় জীবন সাহাকে সব ওয়ার্ডের কর্মীরা পছন্দ করছেন। কোঅর্ডিনেটর হিসেবেও তিনি খুব সক্রিয়। তবে পরেশশিবির বলছে, কর্মীসম্মেলন নিয়ে বিকৃত ধারণা তৈরির প্রচার চলছে। এলাকার নিয়ন্ত্রণ পরেশ পালের হাতেই আছে। বিদায়ী পুরপিতাদের সঙ্গে কোনো দূরত্ব তৈরি হলেও তিনি ঠিক ম্যানেজ করে নেবেন।

আরও পড়ুন-মহানন্দার বিসর্জন ঘাটের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে ময়দানে শিলিগুড়ির পুর প্রশাসক

Previous articleঋণের ভারে জর্জরিত, গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা একই পরিবারের ৪ সদস্যের
Next article৬০-৭০ মিলিয়ন ডোজ ভ্যাকসিন প্রস্তুত হবে ডিসেম্বরের মধ্যেই, মিলবে মার্চে : সেরাম ইনস্টিটিউট